ঋণ পরিশোধ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

ঋণ পরিশোধ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : বাদশাহ আকবরের রাজদরবারে নয়জন বিশেষ জ্ঞানী লোক ছিলেন। নানা বিষয়ে জ্ঞানী এ দলটিকে বলা হতো নবরত্ন। এ দলের সদস্য ছিলেন বিখ্যাত হাস্যরসিক বীরবল। বাদশাহ আকবরের রাজদরবারে তিনি একটি রসাল ঘটনার অবতারণা করেন এবং এর মধ্য দিয়ে বাদশাহের দুষ্ট প্রকৃতির দারোয়ানকে উপযুক্ত শিক্ষা দেন। তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি দেখে বাদশাহ তাঁকে নবরত্নের একজন সদস্য করে নিলেন।

ঋণ পরিশোধ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : এক দরিদ্র কৃষক প্রতিদিন দেবতার কাছে প্রার্থনা করত। একদিন দেবতা খুশি হয়ে তার সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করল। কৃষকের সুখ দেখে তার প্রতিবেশীর হিংসে হলো। সে বলল, “তুমি যদি আমাকে তোমার ধনী হওয়ার রহস্য না বলো তাহলে রাজার কাছে নালিশ করব।” ভয়ে কৃষক সবকিছু খুলে বলল। প্রতিবেশীর প্রার্থনায় দেবতা সন্তুষ্ট হয়ে দেখা দিলে সে বলল, তার অনেক অনেক কিছু চাই। দেবতা তার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বলল, “তুমি যা পাবে তার চেয়ে দুই গুণ পাবে কৃষক।” দুষ্ট প্রতিবেশী বলল, “তাহলে আমার এক চোখ অন্ধ করে দিন।”

ক. বাদশাহ আকবরের রাজধানীর নাম কী?
খ. ব্রাহ্মণ বাদশাহের কাছ থেকে একশ ঘা চেয়ে নিল কেন?
গ. উদ্দীপকের প্রতিবেশীর সাথে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের কোন ঐতিহাসিক চরিত্রের সাদৃশ্য আছে? সাদৃশ্যগত দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের প্রতিবেশী ও গল্পের ব্রাহ্মণ চরিত্রটি বিষয়গত দিক থেকে এক হলেও নীতিগত দিক থেকে আলাদা” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

প্রশ্নের উত্তর

ক. বাদশাহ আকবরের রাজধানীর নাম দিল্লি।

খ. দুষ্ট দারোয়ানকে সমুচিত শাস্তি দেওয়ার জন্যই ব্রাহ্মণ বাদশাহর কাছ থেকে একশ ঘা চেয়ে নিল।  বীরবল বাদশাহের দরবারে প্রবেশ করতে চাইলে দুষ্ট দারোয়ান বাধা দিয়ে তার কাছে অন্যায়ভাবে টাকা দাবি করে। বীরবলের কাছে টাকা না থাকায় সে বলল যে, দরবারে সে যা বখশিশ পাবে তার অর্ধেক তাকে দিতে হবে। দুষ্ট দারোয়ানকে উচিত শিক্ষা দিতেই বীরবল বাদশাহের কাছে চাবুকের একশ ঘা চেয়ে নিল।

গ. উদ্দীপকের প্রতিবেশীর সাথে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের বীরবল চরিত্রের সাদৃশ্য আছে। গল্পে উল্লিখিত ব্রাহ্মণ অর্থাৎ বীরবল বাদশাহ আকবরের দরবারে প্রবেশ করতে চাইলে দারোয়ান তার কাছে ঘুষ দাবি করে। সাথে অর্থ না থাকায় দারোয়ানকে তিনি বলেন বাদশাহ যদি কোনো বখশিশ দেন তবে তার অর্ধেক দারোয়ানকে দেবেন। ব্রাহ্মণের ওপর খুশি হয়ে বাদশাহ বখশিশ দিতে চাইলে তিনি একশ ঘা চাবুক চেয়ে বসেন। এভাবেই ব্রাহ্মণ নিজের ক্ষতি করে হলেও দারোয়ানকে শিক্ষা দেন।

উদ্দীপকের গল্পাংশে কৃষকের সুখ দেখে প্রতিবেশীর হিংসে হলে দেবতার কাছে সে ধনী হওয়ার প্রার্থনা করে। দেবতা তার প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে দেখা করলে সে আরো অনেক কিছু চায়। এতে দেবতা কৃষককে তার চেয়ে দুই গুণ বেশি দিতে চায়। দুষ্ট প্রতিবেশী এতে হিংসা পোষণ করে এবং তার এক চোখ অন্ধ করে দিতে বলে। প্রতিবেশীর নিজেকে ক্ষতি করার এমন বৈশিষ্ট্য গল্পের ব্রাহ্মণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পে ব্রাহ্মণ নিজের ক্ষতি করে হলেও দারোয়ানকে শাস্তি দিতে চান, কিন্তু উদ্দীপকের প্রতিবেশী হিংসার বশবর্তী হয়ে নিজের ক্ষতি কামনা করে; যা প্রশ্নোক্ত মন্তব্যের যথার্থতা নির্দেশ করে। বাদশাহ আকবরের দরবারে প্রবেশের সময় দারোয়ান ব্রাহ্মণের কাছে বখশিশ চায়। ব্রাহ্মণের কাছে অর্থ না থাকায় তিনি দরবার থেকে প্রাপ্ত সম্পদের অর্ধেক দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে বখশিশ হিসেবে একশ ঘা চাবুক চেয়ে নিয়ে দারোয়ানের সাজা নিশ্চিত করেন।

উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিবেশী কৃষকের ধনী হওয়া দেখে হিংসা করে। নিজেও ধনী হবার জন্য দেবতার কাছে প্রার্থনা করে। দেবতা জানায় যে, সে যা পাবে কৃষক তার দ্বিগুণ পাবে। এতে প্রতিবেশী আরো হিংসাত্মক হয়ে নিজের এক চোখ অন্ধ করে দিতে বলে।
‘ঋণ পরিশোধ’ গল্প এবং উদ্দীপক উভয়ক্ষেত্রেই অন্যের ক্ষতির জন্য নিজেকে কষ্ট দেওয়ার দৃষ্টান্ত বিদ্যমান। তবে গল্পের ব্রাহ্মণ অন্যায়কারীকে শাস্তি দেওয়ার স্বার্থে নিজেকে কষ্ট দিয়েছেন। এর বিপরীতে উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিবেশী হিংসার বশবর্তী হয়ে নিজের ক্ষতিকে পরোয়া করেননি। আদর্শের জায়গা থেকে দুজনের অবস্থান সম্পূর্ণরূপে বিপরীত। উল্লিখিত আলোচনার আলোকে বলা যায়— প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

নিজে অনুশীলন করো

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভার ভাঁড় ছিলেন গোপাল। তিনি রসালো গল্প বলে আসর জমাতে পারতেন। তিনি গল্পের মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি তুলে ধরে তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতেন। বুদ্ধিমত্তার কারণে তিনি রাজার প্রিয়পাত্র হয়েছিলেন।

ক. পায়ে হেঁটে দিল্লি এসেছিল কে?
খ. ‘একটা রহস্য আছে এর ভিতর’– ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের গোপালের সঙ্গে বীরবলের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘হাস্যরসের মাধ্যমে মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া যায়’ উক্তিটি উদ্দীপক এবং ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্প অবলম্বনে মূল্যায়ন করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : একদা এক গ্রামে সাত্তার মিয়া নামক একজন সহজ-সরল ব্যক্তি ছিলেন। তিনি গল্প বলায় পটু ছিলেন। প্রায়ই তিনি গ্রামের মানুষকে বসিয়ে বসিয়ে গল্প শোনাতেন। একদিন ঐ এলাকার চেয়ারম্যানের বাড়িতে গল্পের আসরে সাত্তার মিয়ার ডাক পড়ে। তার চমকপ্রদ ও রসালো গল্প শুনে চেয়ারম্যান সাহেব খুশি হয়ে তাকে কিছু টাকা পুরস্কার প্রদান করেন। সাত্তার মিয়া এতে খুব খুশি হন।

ক. বাদশা আকবরের রাজধানী কোথায় ছিল?
খ. বীরবল কেন দিল্লির শাহী দরবারে এলেন?
গ. উদ্দীপকে সাত্তার-মিয়ার সঙ্গে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের দরিদ্র ব্রাহ্মণের চরিত্রের কী কী সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘উদ্দীপকের সাত্তার মিয়া ও ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পে বীরবলের পুরস্কার প্রাপ্তি দুই ধরনের’— উক্তিটির যৌক্তিকতা বিচার করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : আনিতা বাস থেকে নেমে নিজের বাসার দিকে যাচ্ছিল। পথে দেখল একটি মেয়ে একটি ভারী ব্যাগ নিয়ে অনেক কষ্টে স্টেশনের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু পথে কোনো রিক্সা ছিল না। আনিতা তখন মেয়েটির ব্যাগের একপাশ ধরে তাকে স্টেশন পর্যন্ত পৌছে দিল। স্টেশনে যাওয়ার পর মেয়েটি আনিতাকে বলল, আপনাকে যে আমি কী বখশিশ দেব ঠিক বুঝতে পারছি না। উত্তরে আনিতা বলল, আপনিও অন্য কোনো মানুষের সংকটে উপকার করবেন আর সেটাই হবে আমার জন্য বড় বখশিশ। আনিতার কথা মেয়েটি বিমুগ্ধ হয়ে শুনল।

ক. ব্রাহ্মণ করজোড়ে রাজাকে কী বললেন?
খ. ‘কোনো-না-কোনো লোক পিটুনি খেয়েই শেখে’— কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের যে অমিল রয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের পটভূমি সম্পূর্ণ আলাদা”- বক্তব্যটি মূল্যায়ন করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : মুক্তিযোদ্ধা বদরুদ্দিনের ছেলে সালাহউদ্দিন দুদকে একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে বলা হয়, জহুরুল হকসহ সওজ বিভাগের ৩০ থেকে ৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উচ্ছেদ নোটিশ নিয়ে গত ২৪ অক্টোবর তাঁর কল্যাণপুরের এ/৬ শহিদমিনার রোডের বাসায় গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মালপত্রসহ বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। অনেক অনুরোধের পর উচ্ছেদ দলের পক্ষ থেকে জহুরুল হক বলেন, খরচাপাতি দিলে সব ঠিক করে দেবেন। ৩ নভেম্বর জহুরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে বলেন, দুই লাখ টাকা দিলে পরিবারটিকে সেখানে থাকতে দেওয়া হবে। অনেক দেন-দরবারের পর ৪৫ হাজার টাকায় রফা হয়। সে অনুযায়ী বুধবার ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ শেষে আট সদস্যের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। গতকাল দুপুরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার বেনিয়ান শেড ফুড কোর্ট থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় জহুরুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।

ক. ‘ওমরাহ’ অর্থ কী?
খ. ‘একটা রহস্য আছে এর ভিতর’— ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের জহুরুল হকের সাথে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের কোন চরিত্রের মিল রয়েছে?
ঘ. ‘উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দিক থেকে উদ্দীপকের সালাহ উদ্দিন এবং ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের বীরবল একই ধরনের চরিত্র’— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : নিলয় মেধাবী কিন্তু দরিদ্রতার কারণে বেশিদূর পড়াশুনা করতে পারেনি। সে মজার মজার গল্প বলে মানুষের মনে হাস্যরসের সৃষ্টি করে। তার হাসি এবং হাসানোর কৌশলে সবাই খুব খুশি। সেও অন্যের মুখে হাসি ফুটিয়ে নির্মল আনন্দ পায়।

ক. গোপাল ভাঁড়ের সাথে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের কোন চরিত্রের মিল রয়েছে?
খ. ব্রাহ্মণ কীভাবে ঋণ পরিশোধ করেছিল? বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের মেধাবী নিলয়ের সঙ্গে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের বীরবলের সাদৃশ্য বর্ণনা করো।
ঘ. “অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর মধ্যে আছে নির্মল আনন্দ” উদ্দীপক ও ঋণ পরিশোধ’ গল্প অবলম্বনে তা বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : গোপাল ভাঁড় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের সভাসদ ছিলেন। গোপাল তার হাস্যরসময় বাক্য দ্বারা রাজসভাকে সবসময় মাতিয়ে রাখতো। রাজাও খুশি হয়ে গোপাল ভাঁড়কে অনেক পুরস্কার দিতেন।

ক. ব্রাহ্মণ কোন গ্রামে বসবাস করতো ?
খ. ব্রাহ্মণ কীভাবে ঋণ পরিশোধ করেছিলো ? বুঝিয়ে লেখো।
গ. গোপালভাঁড়ের সাথে ঋণ পরিশোধ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য আছে বুঝিয়ে লেখো।
ঘ. “সামান্য সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের মধ্যে ‘ঋণ পরিশোধ’ গল্পের প্রতিফলন ঘটেনি।” উক্তিটির স্বপক্ষে যুক্তি দাও।

ANSWER SHEET

উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *