আমিষ কাকে বলে? (What is called Protein in Bengali?)
আমিষ মানবদেহের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। এটি চারটি মৌলিক উপাদান যথা : কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন এর সমন্বয়ে গঠিত। কখনও কখনও ফসফরাস, লৌহ এবং অন্যান্য মৌলিক উপাদানও আমিষে উপস্থিত থাকে। আমিষ অ্যামিনো এসিড এর জটিল যৌগ। পরিপাক প্রক্রিয়ায় এটি সরল শোষণ উপযোগী অ্যামিনো এসিডে পরিণত হয়।
আমিষের প্রকারভেদ (Types of Protein)
উৎপত্তি অনুসারে আমিষ দুই প্রকার। যথা:
১. প্রাণীজ আমিষ : যে সমস্ত আমিষ প্রাণী হতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাণীজ আমিষ বলা হয়। যেমন : মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, পনির ইত্যাদি।
২. উদ্ভিজ্জ আমিষ : যে সমস্ত আমিষ উদ্ভিদ হতে পাওয়া যায় তাদেরকে উদ্ভিজ্জ আমিষ বলে। যেমন : ডাল, বাদাম, মটর, ছোলা ইত্যাদি।
আমিষের কাজ
- আমিষের প্রধান কাজ হলো দেহের কোষ গঠনে সহায়তা করা। দেহের অস্থি, পেশি, বিভিন্ন অঙ্গতন্ত্র, রক্তকণিকা ইত্যাদি অধিকাংশই আমিষ দ্বারা তৈরি।
- দেহে কোষগুলোর বিপাক ক্রিয়া অবিরামভাবে চলে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে কোষগুলোর কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় এবং নষ্ট হয়ে যায়। নতুন কোষ উৎপাদনে আমিষ প্রধান ভূমিকা পালন করে।
- এন্টিবডি দেহের রোগ প্রতিরোধ করে। আমিষ এন্টিবডি উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
- দেহের অভ্যন্তরস্থ জারক রসসমূহ যেমন : পেপসিন, ট্রিপসিন এবং হরমোন আমিষ দ্বারা তৈরি।
- আমিষ রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। হিমোগ্লোবিন একটি আমিষের যৌগ।
- আমিষ কোষীয় বিপাকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে।
এ সম্পর্কিত আরও প্রশ্ন ও উত্তরঃ–
১। দৈনিক ক্যালরির কত ভাগ আমিষ গ্রহণ করতে হয়?
উত্তর : ১০%।
২। আমিষ পরিপাক হয়ে কীসে পরিণত হয়?
উত্তর : অ্যামাইনো এসিড।
৩। আমিষকে জৈব যৌগ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আমিষ সাধারণত কার্বন ও হাইড্রোজেন সমন্বয়ে গঠিত। কার্বন ও হাইড্রোজেন যুক্ত যৌগকে প্রধানত জৈব যৌগ বলা হয়। যেহেতু আমিষ কার্বন ও হাইড্রোজেন দিয়ে গঠিত তাই আমিষকে জৈব যৌগ বলা হয়।
৪। ডিমে আমিষের সহজপ্রাপ্যতার গুণক ১ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করার পর এর শতকরা যত ভাগ অন্ত্র থেকে দেহে শোষিত হয় তত ভাগকে সেই আমিষের সহজপ্রাপ্যতার গুণক ধরা হয়। সহজপ্রাপ্যতার উপর আমিষের পুষ্টিমান নির্ভর করে। যে আমিষ শতকরা ১০০ ভাগই দেহে শোষিত হয় এবং দেহের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণের কাজ করে তার সহজপ্রাপ্যতার গুণক ১। যেমন- মায়ের দুধ ও ডিমে আমিষের সহজপ্রাপ্যতার গুণক ১।