শিক্ষাক্রমের নতুন রূপরেখা ২০২২

নতুন শিক্ষানীতি ২০২২ অনুসারে শিক্ষাক্রমের নতুন রূপরেখা

প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) যৌথ সভায় এই রূপরেখার অনুমোদন দেওয়া হয়। গতবছরের সেপ্টেম্বরে, এই রূপরেখার খসড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
শিক্ষাক্রমের নতুন রূপরেখা ২০২৩ সাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণিতে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এর মধ্যে,
  • ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি।
  • ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি।
  • ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম।
  • ২০২৬ সালে উচ্চমাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে
  • ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে  নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষা পদ্ধতি, মূল্যায়ন ও পাঠক্রমে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, শুধু বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে। কিন্তু পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও শিখন কার্যক্রম উভয় থাকছে।
নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি (SSC) ও এইচএসসি (HSC) পরীক্ষা হবে না। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। প্রতি বর্ষ শেষে বোর্ডের অধীনে এই পরীক্ষা হবে। এরপর এই দুই পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন (সবার জন্য একই সিলেবাস ও বই) পড়বে। একাদশ শ্রেণীতে  শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক এবং বাণিজ্য বিভাগে নিয়ে পড়তে পারবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ ধরনের শেখার ক্ষেত্র ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হলো,
১. ভাষা ও যোগাযোগ।
২. গণিত ও যুক্তি।
৩. জীবন ও জীবিকা।
৪. সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব।
৫. পরিবেশ ও জলবায়ু।
৬. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি।
৭. তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি।
৮. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য।
৯. সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা।
১০. শিল্প ও সংস্কৃতি।
প্রাথমিকে পড়তে হবে আটটি বই এবং মাধ্যমিক স্তরে পড়তে হবে ১০ টি অভিন্ন বই। তবে সব শ্রেণিতেই শিখনকালীন মূল্যায়নেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাক্রমের নতুন রূপরেখা ২০২২ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি) এবং শিক্ষাক্রম উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন।

Similar Posts