Blog

১৮ টি উপায়ে ক্রিপ্টো কারেন্সী থেকে ইনকাম করুন

1 min read

আপনি কি খুঁজছেন  ” How to earn daily from cryptocurrency ” কি ভাবে ক্রিপ্টো কারেন্সী থেকে  প্রতিদিন ইনকাম করবেন ? যদি আপনার উত্তর হয় হা, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য. এখানে আপনি ১৮ টি প্রাকটিক্যাল উপায় সম্পর্কে  জানতে পারবেন যা ব্যবহার করে অসংখ্য মানুষ ক্রিপ্টোকারেন্সী থেকে ইনকাম করছেন.

আপনি যদি এই পদ্ধতি গুলি ভালো ভাবে জেনে নেন তাহলে আপনিও এক বা একাধিক উপায়ে ক্রিপ্টো কারেন্সী থেকে ইনকাম করতে পারবেন. চলুন ক্রিপ্টো থেকে আয় করার ১৮ টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক .

বিনিয়োগ (Investment) : ক্রিপ্টো থেকে আয় করার উপায় গুলির মধ্যে সব থেকে প্রথমে রয়েছে ক্রিপ্টো বিনিয়োগ বা ইনভেস্টমেন্ট. ক্রিপ্টোকারেন্সী বিনিয়োগে আপনি বিটকয়েন, এথেরিয়াম সহ অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সী দীর্ঘ সময়ের জন্য কিনে রাখেন এবং নির্দিষ্ট সময় পরে আপনার কেনা ক্রিপ্টো কারেন্সী গুলির মূল্য বাড়লে তখন আপনি ওই ক্রিপ্টো কারেন্সী বিক্রি করে লাভ করেন.

এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রসেস. এছাড়া আপনি শেয়ার মার্কেটের ইনডেক্স ফান্ডের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সীরর ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন. ক্রিপ্টো কারেন্সীতে বিনিয়োগের আগে অবশ্যই  ভালো ভাবে রিসার্চ এবং এর সঙ্গে জড়িত রিস্ক সম্পর্কে জেনে নেবেন.

ট্রেডিং (Trading) : আপনি ক্রিপ্টো বিনিয়োগ বা ইনভেস্টমেন্ট থেকে আয় করতে পারবেন কিন্তু আগেই বলা হয়েছে এটি একটি সময় সাপেক্ষ প্রসেস. ক্রিপ্টো থেকে ভালো রকম রিটার্ন পাওয়ার জন্য আপনাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে.

সে জন্য আপনি যদি কম সময়ের মধ্যে ক্রিপ্টো থেকে আয় করতে চান তাহলে ক্রিপ্টো ট্রেডিং শুরু করতে পারেন. ট্রেডিং এর অনেক গুলি ভাগ রয়েছে. তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ডে ট্রেডিং, সুইং ট্রেডিং (Swing Trading) . আপনি ডে ট্রেডিং করতে পারেন.

আগেই বলে রাখি, ট্রেডিং হল সব থেকে হাই রিস্ক এবং হাই রিওয়ার্ড সম্পন্ন গেম. সঠিক ভাবে ট্রেডিং করলে ট্রেডিং থেকে আপনি খুব কম সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন.

কিন্তু এটাও সত্য খুব কম সময়ের মধ্যে আপনার সমস্ত কষ্টার্জিত টাকা উড়ে যেতে পারে বা হারাতে পারেন. ক্রিপ্টো মার্কেট খুবই ভোলাটাইল অর্থাৎ ক্রিপ্টো কারেন্সীর মূল্য কম সময়ের মধ্যে খুব বেশি ওঠা নামা করে থাকে.

আপনি যদি এই হাই রিস্ক এবং হাই রিওয়ার্ড সম্পন্ন গেম খেলতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমে ট্রেডিং এর প্রাথমিক এবং টেকনিকাল বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে.

ভালো ভাবে না শিখে ট্রেডিং করলে আপনি ট্রেডিং এ লস করবেন. সে জন্য প্রথমে ভালো ভাবে বিষয় গুলি  শিখে তারপর ট্রেডিং করবেন.

লেন্ডিং (Lending) : ক্রিপ্টোকারেন্সী থেকে আয় করার আর একটি সহজ উপায় হল ক্রিপ্টো লেন্ডিং (Crypto Lending). ক্রিপ্টো লেন্ডিং এ আপনি ক্রিপ্টো লেন্ডিং প্লাটফর্মের মাধ্যমে আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সী তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে সুদের বিনিময়ে দিয়ে থাকেন.

আপনি লেন্ডিং থেকে কি পরিমান সুদ পাবেন তা নির্ভর করে কোন ক্রিপ্টোকারেন্সী লেন্ডিং এর জন্য  দিয়েছেন, কি পরিমান ক্রিপ্টোকারেন্সী দিয়েছেন এবং কোন ক্রিপ্টো লেন্ডিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করছেন তার উপর নির্ভর করে থাকে কারণ বিভিন্ন ক্রিপ্টো লেন্ডিং প্লাটফর্ম আলাদা আলাদা লেন্ডিং রেট দিয়ে থাকে.

লেন্ডিং প্লাটফর্ম সাধারণত তিন রকমের হয়ে থাকে. প্রথমটি হল ডিসেন্ট্রালাইজড লেন্ডিং প্লাটফর্ম (DeFi Lending Platform), দ্বিতীয়টি হল সেন্ট্রালাইজড লেন্ডিং প্লাটফর্ম (CeFi Lending Platform) এবং তৃতীয়টি হল পিয়ার টু  পিয়ার লেন্ডিং প্লাটফর্ম (P2P Lending platform).

মাইনিং (Mining): ক্রিপ্টো থেকে আয় করার সব থেকে সাধারণ পদ্ধতিটি হল মাইনিং করা. ক্রিপ্টো মাইনিং এর কাজ যারা করে থাকে তারা মাইনার (Miner) নামে পরিচিত. ক্রিপ্টো মাইনিং এ মাইনাররা ট্রানসাকশান এর ব্লক গুলিকে মাইনিং করে ব্লকচেইনে যুক্ত করে থাকে.

এই কাজের জন্য মাইনারদের রিওয়ার্ড হিসাবে নতুন ক্রিপ্টো কারেন্সী দেওয়া হয়ে থাকে. মাইনিং সাধারণত দু ভাবে হয়ে থাকে. একটি হল হার্ডওয়্যার মাইনিং (Hardware Mining) যেখানে আপনাকে মাইনিং হার্ডওয়্যার কিনে সেগুলিকে সেটআপ করতে হয় এবং মেইনটেইনও করতে হয়.

অন্যটি হল ক্লাউড মাইনিং (Cloud Mining) যেখানে আপনাকে হার্ডওয়্যার মাইনিং মতো দামি দামি হার্ডওয়্যার কিনতে হয় না. এখানে আপনি তৃতীয় পার্টির হার্ডওয়্যার মাইনিং এর সাহায্য নিয়ে থাকেন.

এখানে আপনি টাকা বিনিয়োগ করে তৃতীয় পক্ষের অর্থাৎ ক্লাউড মাইনিং প্রোভাইডারদের হার্ডওয়্যার মাইনিং ধার হিসাবে নিয়ে থাকেন এবং আপনার বিনিয়োগ এর পরিমান অনুসারে ওই পার্টি আপনার হয়ে মাইনিং করে থাকে.

ক্লাউড মাইনিং এ আপনাকে ফিজিক্যাল হার্ডওয়্যার কোনো রকম টাচ করার প্রয়োজন হয় না. যদিও ক্লাউড মাইনিং এ রিওয়ার্ড এর পরিমান হার্ডওয়্যার মাইনিং এর রিওয়ার্ড থেকে কম হয়ে থাকে.

স্টেকিং (Staking): ক্রিপ্টো স্টেকিং হল ক্রিপ্টো কারেন্সী বিনিয়োগের একটি সহজ পদ্ধতি, আপনার কাছে যদি ক্রিপ্টো কারেন্সী থাকে, তাহলে আপনি এই ক্রিপ্টো স্টেকিং পদ্ধতিতে এক্সট্রা ক্রিপ্টোকারেন্সী আয় করতে পারবেন.

ক্রিপ্টো স্টেকিং এ আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান ক্রিপ্টো কারেন্সী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের মধ্যে জমা রাখতে হয় এবং ওই ক্রিপ্টো কারেন্সীর উপর সুদ হিসাবে বাড়তি ক্রিপ্টো কারেন্সী পাবেন.

ক্রিপ্টো স্টেকিং এ এই সুদের হার ক্রিপ্টো কারেন্সীর প্রকৃতি, পরিমান এবং প্লাটফর্মের উপর নির্ভর করে থাকে.

ক্রিপ্টো ইন্টারেস্ট একাউন্ট : আপনি ক্রিপ্টো ইন্টারেস্ট একাউন্ট (Crypto interest account) থেকে ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করতে পারেন. এটি ক্রিপ্টো সেভিংস একাউন্ট (Crypto Savings Account) নামেও পরিচিত.

এখানে আপনি আপনার ক্রিপ্টো কারেন্সী সুদের বিনিময়ে ক্রিপ্টো কারেন্সী এক্সচেঞ্জকে দিয়ে থাকেন. ক্রিপ্টোএক্সচেঞ্জ এই কারেন্সী নিয়ে স্টেকিং, লেন্ডিং , ট্রেডিং সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে থাকে.

আপনি ক্রিপ্টো ইন্টারেস্ট একাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট পরিমান সুদ নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পেয়ে থাকেন. এখানে সুদের হার ক্রিপ্টো কারেন্সীর প্রকৃতি এবং কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করছেন তার উপর নির্ভর করে থাকে.

এয়ারড্রপস (Airdrops) : ক্রিপ্টো থেকে আয় করার একটি সহজ পদ্ধতি হল ক্রিপ্টো এয়ারড্রপ. এখানে আপনাকে কোনো রকম বিনিয়োগ করতে হয় না.

ক্রিপ্টো এয়ারড্রপে নতুন ক্রিপ্টো প্রজেক্ট গুলি তাদের প্রজেক্ট এর প্রচারের জন্য তাদের কমিউনিটি সদস্যদের কিছু ছোট ছোট কাজের বিনিময়ে ফ্রি ক্রিপ্টো দিয়ে থাকে.

 

ছোট ছোট কাজ গুলির মধ্যে রয়েছে যেমন ক্রিপ্টো প্রজেক্ট এর ইনফরমেশন বা তথ্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা, তাদের বিভিন্ন অনলাইন কমিউনিটিতে যুক্ত হওয়া, তাদের ক্রিপ্টো প্রজেক্ট এর বিভিন্ন এডুকেশনাল ভিডিও দেখা ইত্যাদি এবং প্রজেক্ট এর নির্দিষ্ট কাজ কমপ্লিট করলে আপনি ফ্রি ক্রিপ্টো কারেন্সীর জন্য আবেদন করতে পারবেন.

 

এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (Affiliate program): আপনি বিভিন্ন  ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে আয় করতে পারবেন. প্রায় সমস্ত ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে যেখানে আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যুক্ত হয়ে এফিলিয়েট হিসাবে কাজ করতে পারবেন.

আপনি যখন নতুন কাস্টমার বা  ইউজার আপনার এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে তাদের প্লাটফর্মে রেফার করবেন তখন আপনি কমিশন হিসাবে নির্দিষ্ট পরিমান ক্রিপ্টো কারেন্সী বা টাকা আয় করতে পারবেন.

আপনার যদি কোনো ব্লগ, ফেইসবুক পেজ, ইনস্টাগ্রাম পেজ, ইউটিউব চ্যানেল থাকে এবং ওতে ভালো মতো ট্রাফিক বা ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই ওই সব ফলোয়ার বা ট্রাফিককে কাজে লাগিয়ে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ এর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে টাকা  ইনকাম করতে পারবেন.

গেমিং (Gaming) : আপনি ব্লকচেইন ভিত্তিক প্লে টু আর্ন (Play to earn Game) গেম থেকে ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করতে পারবেন. ফ্রি ক্রিপ্টো টোকেন আয় করার এটি একটি ইন্টারেষ্টিং পদ্ধতি.

আপনি যদি বিভিন্ন অনলাইন গেম খেলতে ভালোবাসেন তাহলে আপনি ক্রিপ্টো গেম থেকে ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করতে পারবেন. ক্রিপ্টো গেম গুলিতে আপনাকে প্লেয়ার হিসাবে বিভিন্ন টাস্ক, মিশন কমপ্লিট করতে হবে.

আপনি বর্তমানে মার্কেটে ১০০ এর বেশি ক্রিপ্টো গেম পেয়ে যাবেন এবং প্রতিদিন নতুন নতুন ক্রিপ্টো গেম ক্রিপ্টো মার্কেটে আসছে . আপনি ফাইটিং, শুটিং, রেসিং সহ সমস্ত রকমের ক্রিপ্টো গেম পেয়ে যাবেন.

অনেক ক্রিপ্টো গেম মেটাভার্স ওয়ার্ল্ড (Metaverse World) তৈরী করেছে যেখানে আপনি বিভিন্ন ভার্চুয়াল ল্যান্ড, মাইনিং রিসোর্সেস, বিল্ডিং, ইভেন্ট এর টিকিট রিয়েল ক্রিপ্টো কারেন্সীর বিনিময়ে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন.

ইল্ড ফার্মিং (Yield Farming) : ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হল ইল্ড ফার্মিং. ইল্ড ফার্মিং এ আপনি ডিসেন্ট্রালাইজড ফিনান্স প্লাটফর্মের ইল্ড জেনারেটিং পুলে সুদের বিনিময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সী ডিপোজিট করেন.

 

ইল্ড ফার্মিং এ আপনাকে স্টেকিং এর তুলনায় বেশি রিসার্চ এবং ভালো ভাবে ক্রিপ্টো ম্যানেজ করতে হয় কারণ ইল্ড ফার্মিং এ রিটার্ন কম বেশি হয়ে থাকে. বেশি সংখ্যক ইল্ড ফার্মার একটি নির্দিষ্ট  ইল্ড প্রটোকলে যুক্ত হলে তখন প্রতিটি ইল্ড ফার্মারের লাভ কমে যায়.

সে ক্ষেত্রে  ইল্ড ফার্মিং লাভ জনক হয় না. ইল্ড ফার্মিং করার আগে আপনাকে ইল্ড ফার্মার হিসাবে ভালো ভাবে প্রোটোকল রিসার্চ করে তারপর সেটিকে সিলেক্ট করবেন.

এছাড়া আপনি বিভিন্ন ইল্ড প্রোটোকল চালিত লিকুইডিটি পুলে অংশগ্রহণ করতে পারেন, যেগুলি সাধারণত ইল্ড এগ্রিগেটর (Yield Aggregator) নামে পরিচিত. এই সব ইল্ড এগ্রিগেটর এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ইল্ড ফার্মিং করতে পারবেন.

ইল্ড এগ্রিগেটর এর মাধ্যমে আপনার বিনিয়োগ বিভিন্ন ইল্ড ফার্মিং এ অটোমেটিক বিনিয়োগ হয়ে যায় ফলে আপনাকে আলাদা আলাদা ভাবে বিভিন্ন ইল্ড ফার্মিং প্রোটোকলে বিনিয়োগ করতে হয় না.

বর্তমানে কয়েকটি জনপ্রিয় ইল্ড এগ্রিগেটর যেমন ইয়ার্ন ফিনান্স (Yearn Finance), কনভেক্স ফিনান্স (Convex Finance), বিফি ফিনান্স (Beefi Finance) এর মাধ্যমে আপনি সহজেই ইল্ড ফার্মিং করতে পারবেন.

ফসেট (Faucet):  ফসেট হল এক প্রকার ওয়েবসাইট বা এপ্লিকেশন যেখানে আপনি ছোট ছোট কাজ সম্পূর্ণ করে রিওয়ার্ড হিসাবে ফ্রি ক্রিপ্টো পেয়ে থাকেন. যদিও এক্ষেত্রে রিওয়ার্ড এর পরিমান খুব কম হয়ে থাকে.

অনেক ক্রিপ্টো ফসেট ওয়েবসাইট শুধুমাত্র সার্ভে কমপ্লিট করলেই রিওয়ার্ড হিসাবে ক্রিপ্টো দিয়ে থাকে. সার্ভে ছাড়াও আপনি বিভিন্ন গেম খেলে, ক্যাপচা রিকোয়েস্ট কমপ্লিট করে, ভিডিও দেখে ক্রিপ্টো রিওয়ার্ড আয় করতে পারবেন.

প্রতিটি কাজ সম্পূর্ণ করলে কি পরিমান ফ্রি ক্রিপ্টো লাভ করবেন তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে কাজটি সম্পূর্ণ করতে আপনাকে কি পরিমান এফোর্ট বা কাজ করতে হবে.

যে কোনো  ক্রিপ্টো ফসেট ওয়েবসাইটে যুক্ত হওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে রিসার্চ করবেন কারণ অনেক ওয়েবসাইট স্ক্যাম করে থাকে যেখানে আপনি কাজ করবেন কিন্তু রিওয়ার্ড হিসাবে কোন ক্রিপ্টোকারেন্সী পাবেন না.

বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় ক্রিপ্টো ফসেট ওয়েবসাইট গুলির মধ্যে একটি হল ফায়ার ফাকুয়েট (Fire Faucet) যেখানে অনেক ফ্রি ক্রিপ্টো লাভ করার সুবিধা রয়েছে এবং পেমেন্ট সরাসরি আপনার ওয়ালেট একাউন্ট এ ডিপোজিট হবে.

বিভিন্ন ক্রিপ্টো সংস্থাতে কাজ করা:  আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন সহ যে কোনো মূল্যবান স্কিলে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন. তাহলে আপনি বিভিন্ন ক্রিপ্টো কোম্পানিতে কাজ করতে পারেন.

বিভিন্ন ক্রিপ্টো কোম্পানি গুলি রিমোট জব অফার করে থাকে যা আপনি বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে বসে করতে পারেন. এই সব কোম্পানি কর্মচারীদের ক্রিপ্টো কারেন্সীতে পেমেন্ট করে থাকে.

এই রিমোট জব পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে বিভিন্ন ক্রিপ্টো জব ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় কাজের অফার সম্পর্কে জানতে হবে এবং আপনি যদি ওই সব কাজ করতে পারেন তাহলে কোম্পানি আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সীতে পেমেন্ট করবে.

বর্তমানে কয়েকটি জনপ্রিয় ক্রিপ্টো জব ওয়েবসাইট হল কইনালিটি (Coinality), কয়েন ওয়ার্কার (Coin Worker), বিটওয়েজ (Bitwage), ওয়ার্ক ফর বিটকয়েন (Work for Bitcoin) যেখানে আপনি কাজ করে ক্রিপ্টোতে ইনকাম করতে পারবেন.

লিকুইডিটি মাইনিং : ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করার আরেকটি উপায় হল লিকুইডিটি মাইনিং (Liquidity Mining). লিকুইডিটি মাইনিং এ আপনি ডিসেন্ট্রালাইজড এক্সচেঞ্জ এর ক্রিপ্টো সোয়াপ পুলে ক্রিপ্টো কারেন্সী লিকুইডিটি হিসাবে জমা করেন.

 

 

যারা এই লিকুইডিটি মাইনিং এ অংশগ্রহণ করে থাকে তারা লিকুইডিটি প্রোভাইডার নামে পরিচিত. লিকুইডিটি পুলে লিকুইডিটি অর্থাৎ ক্রিপ্টো কারেন্সী  যুক্ত করলে আপনি ওই লিকুইডিটি পুলের লিকুইডিটি পুল টোকেন (Liquidity Pool Token) পাবেন যা আপনার বিনিয়োগের  পরিমানকে নির্দেশ করে থাকে.

আপনি এই লিকুইডিটি পুল টোকেন অন্যান্য ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে ডিপোজিট করে এর থেকে ইনকাম করতে পারবেন. লিকুইডিটি প্রোভাইডার হিসাবে যখনই আপনি পুলে লিকুইডিটি জমা করবেন, সব সময় সমপরিমাণ একজোড়া অর্থাৎ দুটি ক্রিপ্টো কারেন্সী জমা করতে হবে.

ধরুন আপনি লিকুইডিটি পুলে এথেরিয়াম এর ইথার এবং ডাই যুক্ত করবেন তাহলে আপনাকে সমপরিমাণ ধরুন এক্ষেত্রে ১০০ ডলারের ইথার (ETH) এবং ১০০ ডলারের ডাই (DAI) যুক্ত করতে হবে.

যখন কেউ এই দুটি কারেন্সীর মধ্যে এক্সচেঞ্জ, বিনিময় বা ট্রেড করবে তখন প্লাটফর্ম ওই ব্যক্তির কাছ থেকে এক্সচেঞ্জ, বিনিময় বা ট্রেড ফী নিয়ে থাকে যা সোয়াপ ফী (Sowap Fee) নামে পরিচিত.

এবং এই সোয়াপ ফীর একটি অংশ আপনার লিকুইডিটি পুলে জমা করা ফান্ড এর অনুপাতের ভিত্তিতে রিওয়ার্ড হিসাবে পাবেন.

ক্লাউড মাইনিং (Cloud Mining) :  ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করার অন্যতম উপায় হল মাইনিং করা. সাধারণত মাইনিং অপারেশন এর জন্য দামি দামি হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা দিয়ে আপনি লাভজনকভাবে ক্রিপ্টো মাইনিং করতে পারবেন.

 

কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে এত মূল্যবান হার্ডওয়্যার কেনা সম্ভব নয়. সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য  ক্রিপ্টো মাইনিং করার সব থেকে সহজ উপায় হল ক্লাউড মাইনিং. ক্লাউড মাইনিং এ আপনি মূল্যবান মাইনিং যন্ত্রপাতি ছাড়াই ক্রিপ্টো মাইনিং এ অংশগ্রহণ করতে পারবেন.

ক্লাউড মাইনিং এ আপনি ক্লাউড মাইনিং সার্ভিস প্রোভাইডারদের মাসিক বা বাৎসরিক ফী দিয়ে তাদের মাইনিং রিসোর্স ভাড়া নেন.

এই ফী এর বিনিময়ে ক্লাউড মাইনিং প্রোভাইডার আপনার ওই ভাড়া নেওয়া রিসোর্স নিয়ে ক্রিপ্টো কারেন্সী মাইনিং করে থাকে এবং মাইনিং রিওয়ার্ড এর একটি অংশ আপনি ক্রিপ্টো কারেন্সী হিসাবে পেয়ে থাকেন.

ক্লাউড মাইনিং এর একটি বড় সুবিধা হল মাইনিং করার জন্য যে সব টেকনিকাল নলেজ এর প্রয়োজন হয় সে গুলি এখানে প্রয়োজন হয় না এবং আপনি খুব সহজেই ক্লাউড মাইনিং প্রোভাইডারদের মাধ্যমে ক্রিপ্টো কারেন্সী ইনকাম করতে পারবেন.

ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড : আপনি ক্যাশব্যাক রিওয়ার্ড সমন্বিত ক্রিপ্টো ক্রেডিট কার্ড (Cashback credit card) এর মাধ্যমে ক্রিপ্টো আয় করতে পারবেন. যেখানে আপনি রিয়েল ওয়ার্ল্ড জিনিস কেনাকাটা করবেন এবং ক্যাশ ব্যাক হিসাবে ক্রিপ্টো কারেন্সী পাবেন.

এটা ট্রাডিশনাল ক্যাশ ব্যাক ক্রেডিট কার্ড এর মতোই কাজ করে থাকে কিন্তু রিওয়ার্ড ক্রিপ্টো কারেন্সীতে দিয়ে থাকে. আপনি সাধারণ ক্রেডিট কার্ড দিয়ে যা যা করেন যেমন ফ্লাইট বুকিং, হোটেল বুকিং ইত্যাদি সবই ক্রিপ্টো ক্রেডিট কার্ড দিয়ে করতে পারবেন.

এই ক্ৰেডিট কার্ড ব্যবহার করার সময় অবশ্যই প্রতি মাসের ক্রেডিট বিল ক্লিয়ার করবেন তাহলে আপনাকে এক্সট্রা ক্রিপ্টো ইন্টারেস্ট দিতে হবে না. জনপ্রিয় ক্রিপ্টো ক্রেডিট কার্ড গুলির মধ্যে অন্যতম হল ক্রিপ্টো ডট কমের ক্ৰেডিট কার্ড.

এর কোনো বাৎসরিক ফী নেই এবং এটিকে ভিসা সাপোর্ট করে থাকে. এই কার্ড এর মাধ্যমে আপনি অনলাইন এবং স্টোরে কেনা কাটা করতে পারবেন. ক্রিপ্টো ডট কম (Crypto.Com)  ক্ৰেডিট কার্ড প্রতিটি কেনা কাটায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত সি আর ও (CRO) টোকেন রিওয়ার্ড হিসাবে দিয়ে থাকে.

লার্ন টু আর্ন : ফ্রি ক্রিপ্টোকারেন্সী আয় করার সব থেকে সহজ উপায় হল লার্ন এন্ড আর্ন প্রোগ্রাম (Learn to earn Program). লার্ন এন্ড আর্ন প্রোগ্রামে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম গুলি মানুষকে ব্লকচেইন, ক্রিপ্টোকারেন্সী বিষয়ে শিক্ষিত করার পাশাপাশি রিওয়ার্ড হিসাবে কিছু ফ্রি ক্রিপ্টোকারেন্সী দিয়ে থাকে.

আপনি ব্লকচেইন, ক্রিপ্টো কারেন্সী সম্পর্কে শিখবেন এবং শেখার জন্য প্লাটফর্ম আপনাকে ফ্রি ক্রিপ্টো কারেন্সী দেবে, সে জন্য ফ্রি ক্রিপ্টো কারেন্সী আয় করার জন্য এর থেকে আর সহজ উপায় হয় না.

লার্ন এন্ড আর্ন প্রোগ্রামে আপনাকে ব্লকচেইন সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্টিকেল পড়তে হয়, বিভিন্ন এডুকেশনাল ভিডিও দেখে ছোট ছোট টাস্ক কমপ্লিট করতে হয়. বড় বড় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মগুলির যেমন কয়েনবেস (Coinbase), বাইবিট (Bybit), বিন্যান্সের (Binance) লার্ন এন্ড আর্ন প্রোগ্রাম রয়েছে.

যেখানে আপনি  যুক্ত হয়ে ফ্রি ক্রিপ্টো পেতে পারেন. প্লাটফর্ম গুলি আপনাকে  বিভিন্ন ক্রিপ্টো কারেন্সী যেমন স্টেলার (Stellar), ই ও এস (EOS), অর্চিড (Orchid), ব্যাট টোকেনে (BAT) রিওয়ার্ড দিয়ে থাকে. লার্ন এন্ড আর্ন প্রোগ্রামে কোনো রকম টাকা বিনিয়োগ বা ডিপোজিট করার প্রয়োজন হয় না.

ব্রেভ ব্রাউজার (Brave Browser) : আপনি ব্রেভ ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বেসিক অ্যাটেনশন টোকেন (BAT) পেতে পারেন. ব্রেভ এড নেটওয়ার্ক এই ক্যাম্পেইন তৈরী করে থাকে.

How to make money in crypto without money

 

 

ব্যাট টোকেন আর্ন করার জন্য এটিই সব থেকে সহজ পদ্ধতি এবং এখানে আপনাকে কোনো রকম বিনিয়োগ করতে হয় না. আপনি ব্রেভ ব্রাউজার ডাউনলোড করে গুগল ক্রোম এর মতোই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন.

এখানে কোনো রকম টাস্ক বা কাজ করতে হয় না. শুধুমাত্র ব্রেভ ব্রাউজার ইনস্টল করে ব্যবহার করলেই ব্রেভ ব্রাউজার আপনাকে আপনার ইন্টারেস্ট অনুযায়ী রিলেভেন্ট এড দেখাবে এবং বিনিময়ে আপনি ব্যাট টোকেন লাভ করবেন.

এতক্ষন ক্রিপ্টো থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানলেন. আপনি যদি কোন উপায় এ ক্রিপ্টো আয় করে থাকেন তাহলে কোন কোন উপায় থেকে ক্রিপ্টো আয় করেছেন তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন এবং আপনার কোনো পদ্ধতি জানা থাকলে যা উপরে উল্লেখ করা হয়নি তা জানাতে পারেন তা আমি পোস্ট এর সঙ্গে যুক্ত করে দেব. পোস্টটি  ভালো লাগলে আপনার ক্রিপ্টোপ্রেমী বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না.

5/5 - (24 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x