ব্যাপন কাকে বলে?
একই তাপমাত্রা ও চাপে কোনো পদার্থের উচ্চ ঘনত্বের ঘনত্বের অঞ্চল থেকে নিম্ন ঘনত্বের অঞ্চলে বিস্তার করার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে।
একটি স্বচ্ছ কাচের গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে যদি সামান্য পরিমাণ তুঁতে (কপার সালফেট) এর গুড়া দেন তাহলে দেখবেন যে ধীরে ধীরে পুরো গ্লাসের পানি রঙিন হয়ে যাবে। কপার সালফেট অণুগুলো নিজে নিজেই পানির অণুগুলোর ফাঁকে স্থান করে নিয়েছে। এটাই ব্যাপন প্রক্রিয়া। এভাবেই বাতাসে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। চায়ের মধ্যে চিনি গুলে যায়। যে প্রক্রিয়ায় কোনো পদার্থের অণু নিজস্ব গতি শক্তির সাহায্যে বেশি ঘনত্ব থেকে কম ঘনত্বের দিকে ছড়িয়ে পড়ে তাকে ব্যাপন প্রক্রিয়া বলে।
উদাহরণঃ পারফিউম স্প্রে করলে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পারফিউমের এই ছড়িয়ে পড়াকে ব্যাপন প্রক্রিয়া বলে।
ব্যাপন পরীক্ষা – পানিতে KMnO4 এর ব্যাপন
কক্ষ তাপমাত্রায় একটি কাচের পাত্রে কিছু বিশুদ্ধ পানি নিয়ে তাতে সামান্য গোলাপি বর্ণের কঠিন পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (KMnO4) ছেড়ে দিতে হবে। কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে KMnO4 দানাগুলো দ্রবীভূত হয়ে গোলাপি দ্রবণে পরিণত হচ্ছে।
এক্ষেত্রে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের কণাগুলো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধীরে ধীরে গতিশক্তি অর্জন করে এবং পানির মাঝে এদিক-সেদিক ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বেশ কিছু সময় পর পুরো পাত্রেই গোলাপি রং ছড়িয়ে পড়েছে।
এক্ষেত্রে পানিতে তথা তরল মাধ্যমে কঠিন পদার্থ (KMnO4) ব্যাপিত হয়েছে। তরলে কঠিন পদার্থের ব্যাপনের হার অনেক কম হয়। এক্ষেত্রে তাপ প্রদান করলে ব্যাপন হার বেশি হয়।
একইভাবে যদি গরম পানিতে KMnO4 এর ব্যাপনের পরীক্ষাটি সম্পন্ন করা হয় তবে দেখা যাবে ঠাণ্ডা পানির চেয়ে গরম পানিতে KMnO4 কণাগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র পানিকে গোলাপি বর্ণে পরিণত করছে। কারণ গরম পানি থেকে KMnO4 কণাগুলো তাপ গ্রহণ করে অধিক গতিশক্তি প্রাপ্ত হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ তাপ প্রয়োগ করলে কঠিন পদার্থের ব্যাপন হার বৃদ্ধি পায়।