মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও তার বাংলা অর্থ, ফজিলত

মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও তার বাংলা, অর্থ, ফজিলত

 

মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও তার অর্থ (আসমাউল হুসনা/ইসমে আজম)

সিরিয়াল নং     আরবীতে আল্লাহর নাম বাংলায় আল্লাহর নাম     আল্লাহর নামের বাংলা অর্থ
الله আল্লাহ আল্লাহ
الرحمن আর রাহমান পরম দয়ালু, পরম করুণাময়, সবচেয়ে দয়ালু, কল্যাণময়
الرحيم আর-রাহীম অতিশয়-মেহেরবান, অতি দয়ালু
الملك আল-মালিক সর্বকর্তৃত্বময়, অধিপতি, মালিক
القدوس আল-কুদ্দুস নিষ্কলুষ, অতি পবিত্র
السلام আস-সালাম নিরাপত্তা-দানকারী, শান্তি-দানকারী, ত্রাণকর্তা, দোষমুক্ত
المؤمن আল-মু’মিন নিরাপত্তা ও ঈমান দানকারী, জামিনদার, সত্য ঘোষণাকারী
المهيمن আল-মুহাইমিন পরিপূর্ন রক্ষণাবেক্ষণকারী, রক্ষক, অভিভাবক, প্রতিপালনকারী
العزيز আল-আ’জীজ পরাক্রমশালী, অপরাজেয়, সর্বাধিক সম্মানিত, মহাসম্মানিত
১০ الجبار আল-জাব্বার দুর্নিবার, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত
১১ المتكبر আল-মুতাকাব্বিইর নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ, গৌরবান্বিত, অহংকারী
১২ الخالق আল-খালিক্ব সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টিকারী
১৩ البارئ আল-বারী সঠিকভাবে সৃষ্টিকারী
১৪ المصور আল-মুছউইর আকৃতি-দানকারী
১৫ الغفار আল-গফ্ফার পরম ক্ষমাশীল, অতি ক্ষমাশীল
১৬ القهار আল-ক্বাহার কঠোর, মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী
১৭ الوهاب আল-ওয়াহ্হাব সবকিছু দানকারী, দানশীল, স্থাপনাকারী
১৮ الرزاق আর-রজ্জাক্ব রিযিকদাতা
১৯ الفتاح আল ফাত্তাহ বিজয়দানকারী, শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী, প্রারম্ভকারী
২০ العليم আল-আ’লীম সর্বজ্ঞ, মহাজ্ঞানী
২১ القابض আল-ক্ববিদ্ব’ নিয়ন্ত্রণকারী, সরল পথ প্রদর্শনকারী
২২ الباسط আল-বাসিত প্রশস্তকারী
২৩ الخافض আল-খফিদ্বু অবনতকারী (কাফির ও মুশরিকদের, অবিশ্বাসীদের অপমানকারী)
২৪ الرافع  আর-রফীই’ উন্নতকারী, উঁচুকারী
২৫ المعز আল-মুই’জ্ব সম্মান-দানকারী
২৬ المذل আল-মুদ্বি’ল্লু (আল-মুযিল্ল) (অবিশ্বাসীদের) বেইজ্জতকারী, সম্মান হরণকারী
২৭ السميع আস্-সামিই’ সর্বশ্রোতা
২৮ البصير আল-বাছীর সর্ববিষয়-দর্শনকারী, সর্বদ্রষ্টা
২৯ الحكم আল-হা’কাম অটল বিচারক, মহা বিচারপতি, হুকুমদাতা
৩০ العدل আল-আ’দল পরিপূর্ণ-ন্যায়বিচারক, নিখুঁত, ন্যায় বিচারক
৩১ اللطيف আল-লাতীফ সকল-গোপন-বিষয়ে-অবগত, সূক্ষ্মদর্শী, অমায়িক
৩২ الخبير আল-খ’বীর সকল ব্যাপারে জ্ঞাত, সর্বজ্ঞ
৩৩ الحليم  আল-হা’লীম অত্যন্ত ধৈর্যশীল, মহা সহনশীল, প্রশ্রয়দাতা
৩৪ العظيم আল-আ’জীম সর্বোচ্চ-মর্যাদাশীল, মহা মর্যাদাপূর্ণ, অতি বিরাট
৩৫ الغفور আল-গফুর পরম ক্ষমাশীল, মার্জনাকারী, অতীব ক্ষমাশীল
৩৬ الشكور আশ্-শাকুর গুনগ্রাহী, সুবিবেচক
৩৭ العلي আল-আ’লিইউ উচ্চ-মর্যাদাশীল
৩৮ الكبير আল-কাবিইর সুমহান, অতি বিরাট
৩৯ الحفيظ আল-হা’ফীজ সংরক্ষণকারী
৪০ المقيت আল-মুক্বীত সকলের জীবনোপকরণ-দানকারী, সংরক্ষণকারী, লালনপালনকারী
৪১ الحسيب আল-হাসীব হিসাব-গ্রহণকারী, মহা মীমাংসাকারী
৪২ الجليل আল-জালীল পরম মর্যাদার অধিকারী, গৌরবান্বিত
৪৩ الكريم আল-কারীম সুমহান দাতা, মহা সম্মানিত, মহা দয়ালু
৪৪ الرقيب আর-রক্বীব তত্ত্বাবধায়ক
৪৫ المجيب আল-মুজীব জবাব-দানকারী, সাড়া দানকারী, উত্তরদাতা, দো‘আ কবুলকারী
৪৬ الواسع আল-ওয়াসি’ সর্ব-ব্যাপী, অসীম, ব্যাপক
৪৭ الحكيم আল-হাকীম পরম-প্রজ্ঞাময়, সুবিজ্ঞ, সুদক্ষ
৪৮ الودود আল-ওয়াদুদ (বান্দাদের প্রতি) সদয়, প্রেমময়, পরম স্নেহশীল
৪৯ المجيد আল-মাজীদ সকল-মর্যাদার-অধিকারী, মহিমান্বিত, সম্মানিত
৫০ الباعث আল-বাই’ছ’ পুনুরুজ্জীবিতকারী
৫১ الشهيد আশ্-শাহীদ সর্বজ্ঞ-স্বাক্ষী, প্রত্যক্ষদর্শী
৫২ الحق আল-হা’ক্ব পরম সত্য
৫৩ الوكيل আল-ওয়াকিল পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী, তত্ত্বাবধায়ক, সহায় প্রদানকারী, আস্থাভাজন উকিল
৫৪ القوي আল-ক্বউইউ পরম-শক্তির-অধিকারী
৫৫ المتين আল-মাতীন সুদৃঢ়, সুস্থির
৫৬ الولي আল-ওয়ালিইউ অভিভাবক ও সাহায্যকারী
৫৭ الحميد আল-হা’মীদ সকল প্রশংসার অধিকারী, সকল প্রশংসার দাবীদার, মহা প্রশংসনীয়
৫৮ المحصي আল-মুহছী সকল সৃষ্টির ব্যপারে অবগত
৫৯ المبدئ আল-মুব্দি’ প্রথমবার-সৃষ্টিকর্তা, অগ্রণী, প্রথম প্রবর্তক
৬০ المعيد আল-মুঈ’দ পুনরায়-সৃষ্টিকর্তা
৬১ المحيي আল-মুহ’য়ী জীবন-দানকারী
৬২ المميت আল-মুমীত মৃত্যু-দানকারী
৬৩ الحي আল-হাইয়্যু চিরঞ্জীব, যার কোন শেষ নেই
৬৪ القيوم আল-ক্বাইয়্যুম সমস্তকিছুর ধারক ও সংরক্ষণকারী
৬৫ الواجد আল-ওয়াজিদ অফুরন্ত ভান্ডারের অধিকারী
৬৬ المحيط আল-মুহীত পরিবেষ্টনকারী, সর্ব বেষ্টনকারী
৬৭ الواحد আল-ওয়াহি’দ এক ও অদ্বিতীয়
৬৮ الصمد আছ্-ছমাদ অমুখাপেক্ষী,অবিনশ্বর, চিরন্তন, স্বয়ং সম্পূর্ণ
৬৯ القادر আল-ক্বদির সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমতাধর
৭০ المقتدر আল-মুক্ব্তাদির নিরঙ্কুশ-সিদ্বান্তের-অধিকারী
৭১ المقدم আল-মুক্বদ্দিম অগ্রসারক, সর্বাগ্রে সহায়তা প্রদানকারী
৭২ المؤخر আল-মুয়াক্খির অবকাশ দানকারী, বিলম্বকারী
৭৩ الأول আল-আউয়াল অনাদি, প্রথম
৭৪ الأخر আল-আখির অনন্ত, সর্বশেষ
৭৫ الظاهر আজ-জ’হির সম্পূর্নরূপে-প্রকাশিত, প্রকাশ্য
৭৬ الباطن আল-বাত্বিন দৃষ্টি হতে অদৃশ্য, গোপন
৭৭ الوالي আল-ওয়ালি সমস্ত কিছুর অভিভাবক
৭৮ المتعالي আল-মুতাআ’লি সৃষ্টির গুনাবলীর উর্দ্ধে
৭৯ البر আল-বার্ পরম-উপকারী, অণুগ্রহশীল, কল্যাণকারী
৮০ التواب আত্-তাওয়াব তাওবার তাওফিক দানকারী এবং কবুলকারী, ক্ষমাকারী
৮১ المنتقم আল-মুনতাক্বিম প্রতিশোধ-গ্রহণকারী
৮২ العفو আল-আ’ফঊ পরম-উদার, শাস্তি মউকুফকারী, গুনাহ ক্ষমাকারী, পাপ মোচনকারী
৮৩ الرؤوف আর-রউফ পরম-স্নেহশীল, সদয়, সমবেদনা প্রকাশকারী, দয়াশীল
৮৪ مالك الملك মালিকুল-মুলক  সমগ্র জগতের বাদশাহ্
৮৫ ذو الجلال والإكرام যুল-জালালি-ওয়াল-ইকরাম মহিমান্বিত ও দয়াবান সত্তা, মহা মর্যাদাবান, মহা মহত্ত্ব ও মহা সম্মানিত
৮৬ المقسط আল-মুক্ব্সিত হকদারের হক-আদায়কারী
৮৭ الجامع আল-জামিই’ একত্রকারী, সমবেতকারী
৮৮ الغني আল-গণিই’ অমুখাপেক্ষী ধনী
৮৯ المغني আল-মুগণিই’ পরম-অভাবমোচনকারী, সমৃদ্ধকারী, উদ্ধারকারী
৯০ المانع আল-মানিই’ অকল্যাণরোধক, প্রতিরোধকারী, রক্ষাকর্তা, নিষেধকারী, বারণকারী
৯১ الضار আয্-যর ক্ষতিসাধনকারী, যন্ত্রনাদানকারী, উৎপীড়নকারী
৯২ النافع আন্-নাফিই’ কল্যাণকারী, অনুগ্রাহক, উপকারকারী, হিতকারী
৯৩ النور আন্-নূর পরম-আলো, আলোক
৯৪ الهادي আল-হাদী পথ-প্রদর্শক, হিদায়েতকারী
৯৫ البديع আল-বাদীই’ অতুলনীয়
৯৬ الباقي আল-বাক্বী চিরস্থায়ী, অবিনশ্বর
৯৭ الوارث আল-ওয়ারিস’ উত্তরাধিকারী
৯৮ الرشيد আর-রাশীদ সঠিক পথ-প্রদর্শক, বিচক্ষণ, সচেতন
৯৯ الصبور আস-সবুর অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী

আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হাদিসে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের নিরানব্বইটি গুণবাচক নাম এর কথা উল্লেখ করেছেন।  তিনি বলেন, “ আল্লাহ তাআলার 99 টি গুণবাচক নাম রয়েছে;  যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামের জিকির করবে সে জান্নাতে যাবে”।  আল্লাহপাক নামগুলোর প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা করে অনেক উপকার ও ফজিলত রয়েছে।
আবু হুরাইরাহ্‌ রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহ্‌ তা’আলার রয়েছে নিরানব্বইটি নাম, একশো থেকে একটি কম, যে এই নামগুলি মনে রাখবে, বুঝবে এবং উপলব্ধি করবে, সে জান্নাত -এ যাবে।” [বুখারি ৩.৫০:৮৯৪, মুসলিম ৩৫:৬৪৭৬, আত-তিরমিযী ৫১.৮৭:৫১৩৮]
সূরা বনী ইসরাঈল:110 – বলুনঃ আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই।
সূরা আল আ’রাফ:180 – আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক।
সূরা আল হাশর:24 – তিনিই আল্লাহ তা’আলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।
সূরা ত্বোয়া-হা:8 – আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য ইলাহ নেই। সব সৌন্দর্যমন্ডিত নাম তাঁরই।
*প্রশ্ন: আল্লাহর নাম কি নিরানব্বইটিতে সীমাবদ্ধ নাকি আরো আছে?*
উত্তর:
আল্লাহর নাম নিরানব্বই সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং তাঁর নামের প্রকৃত সংখ্যা তিনি ছাড়া কেউ জানে না।
 আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিম্নোক্ত দুয়াটি:
أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ ، أَوْ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ
“আমি আপনার সেই সকল নাম ধরে প্রার্থনা করছি, যে নামগুলো আপনি নিজেই নিজের জন্য নির্ধারণ করেছেন। অথবা সৃষ্ট জগতের কাউকে শিক্ষা দিয়েছেন, অথবা আপনার কিতাবে নাজিল করেছেন অথবা আপনার নিজের কাছেই ইলমে গায়ব (অদৃশ্য জ্ঞান)এ সংরক্ষিত রেখে দিয়েছেন।” (মুসনাদ আহমদ, হা/৩৭০৪, সিলসিলা সহীহাহ, আলবানী)
ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন, “এতে প্রমাণিত হয়, আল্লাহ তায়ালার নাম নিরানব্বিইটির অধিক।” (মাজমু ফাতাওয়া ৬ খণ্ড ৩৭৪ পৃষ্ঠা)
আর যে হাদীসে নিরানব্বইটি নামের কথা বলা হয়েছে সেটির ব্যাখ্যায় ইমাম নওবী রহ. বলেন,
اتَّفَقَ الْعُلَمَاء عَلَى أَنَّ هَذَا الْحَدِيث لَيْسَ فِيهِ حَصْر لأَسْمَائِهِ سُبْحَانه وَتَعَالَى , فَلَيْسَ مَعْنَاهُ : أَنَّهُ لَيْسَ لَهُ أَسْمَاء غَيْر هَذِهِ التِّسْعَة وَالتِّسْعِينَ , وَإِنَّمَا مَقْصُود الْحَدِيث أَنَّ هَذِهِ التِّسْعَة وَالتِّسْعِينَ مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّة , فَالْمُرَاد الإِخْبَار عَنْ دُخُول الْجَنَّة بِإِحْصَائِهَا لا الإِخْبَار بِحَصْرِ الأَسْمَاء اهـ
“আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, উক্ত হাদীসে এ কথা নেই যে, আল্লাহর নাম নিরানব্বইটির মধ্যে সীমাবদ্ধ। হাদীসের এ অর্থ নয় যে, এই নিরানব্বইটি ছাড়া আল্লাহর আর কোন নাম নেই। বরং এ কথার উদ্দেশ্য হল, যে ব্যক্তি এই নিরানব্বইটি নাম সংরক্ষণ করবে (তথা মুখস্ত করার পাশাপাশি বুঝে আমল করবে) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। অর্থাৎ এখানে এ নামগুলো সংরক্ষণকারীর জন্য জান্নাতে প্রবেশের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। নামের সংখ্যার সীমাবদ্ধতার কথা বলা হয় নি।” (শরহে সহীহ মুসলিম)
 আল্লাহপাকের নাম শুধু মাত্র 99 টি নামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং আল্লাহ পাকের নামের হিসাব করতে গেলে আমাদেরকে এটা মানতে হবে যে ওনার নাম অফুরন্ত।  কেননা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সারা বিশ্ব জগতের সকল গুণের অধিকারী।  যেহেতু আল্লাহ পাক সকল গুণের অধিকারী তাই প্রত্যেকটা গুণের নামের অধিকারী একমাত্র আল্লা পাকই।  সুতরাং আল্লাহ পাকের নাম যে শুধুমাত্র নিরানব্বইটি তা নয় বরং তার চেয়ে অনেক বেশি।
 তবে এখানে উল্লেখিত 99 টি নাম হচ্ছে আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম গুলোর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট।  তাই হাদিসে আল্লাহ পাকের 99 টি নাম সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আল কোরআনের সূরা আরাফের 180 নং আয়াতে বলা হয়েছে, “ আর আল্লাহর জন্যে রয়েছে সব উত্তম নাম।  কাজেই সে নাম ধরেই তাকে ডাক।  আর তাদেরকে বর্জন করো,  যারা তার নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে।  তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে”।
 ওর নাম বলতে সে সকল নাম কি বুঝানো হয় যে নামগুলো গুণ এবং বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম।  আল্লাহ পাকের এই সর্বোচ্চ গুণবাচক অথবা সর্বোৎকৃষ্ট নাম গুলোকে বলা হয় আসমাউল হুসনা। উপরে উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ পাকের সর্বোৎকৃষ্ট নামসমূহ তথা আসমাউল হুসনা সম্পর্কে বলা হয়েছে।  এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একমাত্র এসব আসমাউল হুসনা বা উত্তম নামসমূহের অধিকারী।  আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এইসকল সর্বোৎকৃষ্ট নামের গুনে গুনান্বিত।  আরে সকল বৈশিষ্ট্য বা গুণ অর্জন করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
 আয়াতের মর্ম ব্যাখ্যা করতে গেলে আমাদেরকে এভাবে বলতে হবে যে, হামদ,  সানা,  গুণ এবং প্রশংসা কীর্তন,  এছাড়া তাজবি তাহলীল এর জন্য যেহেতু একমাত্র আল্লাহ পাকই উপযুক্ত এছাড়া বিপদাপদে মুক্তিদান অথবা প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রেও একমাত্র আল্লাহ তাআলাই একমাত্র ভরসা।  তাই যদি প্রশংসা অথবা গুনকীর্তন করতে হয় তাহলে একমাত্র আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করতে হবে অথবা আল্লাহ তা’আলারই গুনকীর্তন করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে আল্লাহ পাকের আসমাউল হুসনার মাধ্যমে যদি গুনকীর্তন করা হয় তাহলে আল্লাহ পাক অনেক বেশি খুশি হন।
উপরে উল্লেখিত আয়াত এর মাধ্যমে আল্লাহপাক আমাদেরকে এই বার্তা পাঠিয়েছেন যে,  প্রথমত:  আল্লাহ ছাড়া কোন সত্তায় প্রকৃত হাম অথবা ছানা কিংবা বিপদমুক্তি বা উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য দেখার যোগ্য নয়।  দ্বিতীয়তঃ  আল্লাহকে ডাকার জন্য মানুষ এমন করতে পারে না যে,  যেকোনো শব্দ ইচ্ছা ডাকবে,  বরং আল্লাহ বিশেষ অনুগ্রহ করে আমাদেরকে সেসব শব্দসমষ্টি শিখিয়ে দিয়েছেন যার মাধ্যমে তার মহত এবং মর্যাদা উপযোগী শব্দ প্রয়োগ করে তাকে ডাকতে পারি।
আল্লাহপাক আমাদেরকে আল্লাহপাকের নির্ধারিত নামে ডাকার জন্য বাধ্য করে দিয়েছেন যাতে আমরা নিজের মতো করে অন্য শব্দ ব্যাবহার না করি অথবা আল্লাহর নির্ধারিত নামের বাহিরে অন্য নামে না  ডাকি।  কারণ,  আল্লাহর গুণ এবং আল্লাহ তাআলার মহত্ত্বের পরিধির বিচার করে নির্ধারিত নামে ডাকার জন্য নাম নির্বাচন করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কেননা আল্লাহ পাকের চেয়ে মানুষের চিন্তাশক্তি অথবা অনুমান শক্তি খুবই নগণ্য।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *