৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ২ pdf
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ২ : আজ ক্লাসে খুশি আপা বললেন, “আচ্ছা, আমাদের দেশে তো দেখলাম দাঁত পড়লে আমরা কী কী করি। তোমাদের কী মনে হয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাচ্চাদের যখন দাঁত পড়ে যায় তখন তারা কী করে সেই দাঁত? আমাদের মতোই, নাকি ভিন্ন কিছু করে?”
সুমন বলল, “মনে হয় এগুলোই করে। ”
সাদিয়া বলল, “বাংলাদেশ থেকে আফ্রিকা মহাদেশ কত দুরে! সেই মহাদেশের মানুষরা ভিন্ন কিছুও করতে পারে। ” মুনিয়া কাগজ দিয়ে চোঙ্গার মতো মাইক বানিয়ে ঘোষণা দিল, “বন্ধুরা এসবই তোমাদের …” সবাই চিৎকার করে বলে উঠল “হাইপোথিসিস”। “এগুলো যাচাই করে যৌক্তিক সিদ্ধান্তে গোছতে আমাদের লাগবে…” সবাই কথা শেষ হবার আগেই বলল- “অনুসন্ধান” খুশি আপা এবার কয়েকটি দেশে দীত পড়লে কী করার রীতি তা বললেন:
অনুসন্ধানী কাজ-২
বিষয়বস্তু: বিভিন্ন দেশের দাঁত পড়া নিয়ে প্রচলিত রীতি-নীতি ও গল্প
অনুসন্ধানের প্রশ্ন: বিভিন্ন দেশে শিশুদের প্রথম দাঁত পড়লে তারা কী করে? এবং কী কী গল্প প্রচলিত আছে?
প্রশ্নে যে মূল বিষয়বস্তুগুলো রয়েছে:-
● তথ্য উৎস: বিভিন্ন ম্যাগাজিন, ইন্টারনেট, কোর্সটিকা ওয়েবসাইট এবং শ্রেণিশিক্ষক।
● তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি: ইন্টারনেটে কোর্সটিকা ওয়েবসাইট ভিজিট করব এবং শ্রেণিশিক্ষকের সহায়তা নেব।
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ২
– তথ্য সংগ্রহের ছক –
মহাদেশ/দেশ/এলাকার নাম
দাঁত পড়লে রীতি-নীতি
রীতি-নীতি সংক্রান্ত ধারণা
১. মিশর ও অন্যান্য কিছু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ
শিশুরা সজোরে দাঁত সূর্যের দিকে ছুঁড়ে দেয়।
সূর্যের মত উজ্জ্বল দাঁত উঠবে।
২. অস্ট্রেলিয়া
দাঁত পানিতে ফেলে দেয়।
পানির মত স্বচ্ছ ও পরিস্কার দাঁত উঠবে।
৩. ভারত
দাঁত ইঁদুরের গর্তে রেখে দেয়।
দাঁতগুলো দেখতে ইঁদুরের দাঁতের মত ছোট-ছোট এবং সুন্দর হবে।
৪. তাজিকিস্তান
দাঁত ফুল গাছের নিচের পুঁতে দেয়।
দাঁতগুলো ফুলের মত সুন্দর হবে।
● তথ্য বিশ্লেষণ: উপরের ছকে উল্লেখিত তথ্যগুলো আমি ইন্টারনেটে কোর্সটিকা ওয়েবসাইট ভিজিট করে এবং ইউটিউব চ্যানেলের ক্লাসগুলো দেখে সংগ্রহ করেছি। পাশাপাশি আমার বিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের শ্রেণিশিক্ষক জনাব সাইফুল ইসলামের থেকে সহায়তা গ্রহণ করেছি। এ তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে, শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশুর প্রথম দাঁত পড়া নিয়ে বিভিন্ন রীতি-নীতি প্রচলিত রয়েছে। কখনো কখনো এক দেশের রীতির সাথে অন্য দেশের রীতি মিলে যায়, আবার কখনো কখনো এক দেশের রীতির সাথে অন্য দেশের রীতি সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে থাকে।
● ফলাফল বা সিদ্ধান্ত: উক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। তা হল—
১. দাঁত পড়া নিয়ে করণীয় রীতি-নীতিগুলো দেশভেদে আলাদা-আলাদা হতে পারে।
২. মূলত শিশুদের কল্যাণ প্রত্যাশার জন্য এসব রীতি-নীতি পালন করা হয়।
৩. বিভিন্ন দেশের প্রচলিত এসব রীতি-নীতির পেছনে ব্যক্তির এমন কিছু ধ্যান-ধারণা কাজ করে, যা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক।
● উপস্থাপন: শিক্ষার্থীরা নিজেদের মত করে স্বতস্ফূর্তভাবে উপস্থাপন করবে।
সমাজে প্রচলিত এসব নিয়ম-কানুন আসলে কী?
● বিভিন্ন এলাকায় দাঁত পড়ার পর প্রচলিত যেই কাজগুলো, এগুলোকে কী বলে? এগুলোর কোনো নাম আছে?
উত্তর: প্রচলিত এ কাজগুলো মূলত এক ধরনের কুসংস্কার। অতীতকাল থেকেই মানুষ এসব রীতি-নীতি অনুসরণ করে আসছে। যা আমাদের সমাজে প্রথা নামে পরিচিত।
● দাঁত পড়া ছাড়া অন্য বিষয়ে কি এ রকম প্রচলিত নিয়ম-কানুন আছে? থাকলে কী কী বিষয়ে আছে?
উত্তর: দাঁত পড়া ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের সমাজে বিভিন্ন নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। নিচে তার মধ্য থেকে ২টি উল্লেখ করা হল:
১. টিকটিকির ডাক: কোনও কথার মাঝখানে টিকটিকি ডেকে উঠলে মনে করা হয়, সে সময় ব্যক্তি যে কথা বলছেন, তা সঠিক।
২. ডিম অশুভ: আমাদের মা-চাচীরা পরীক্ষার সময় সন্তানদের ডিম খেতে দেন না। কারণ তারা মনে করেন, ডিম খেলে পরীক্ষায় শূন্য পাবে।
● এসব নিয়ম-কানুন কেন ও কীভাবে একটি এলাকায় তৈরি হয়?
উত্তর: আমাদের সমাজের মানুষেরা সুদূর অতি থেকে এসব নিয়ম-কানুন মেনে আসছে। যা মূলত একজনের থেকে অন্যজন এবং এভাবে সবার কাছে পৌঁছে গেছে।
● এসব নিয়ম-কানুনগুলো কি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, এ নিয়মগুলো সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়। মানুষের চিন্তা-চেতনা যখন বিজ্ঞানমনস্ক হয়, তখন মানুষ এসব কুসংস্কার বিশ্বস করে না।
একটি এলাকার একাধিক রীতি-নীতিও থাকতে পারে। সবাই অনুসন্ধানের ধাপ অনুসরণ করে প্রশ্নের উত্তর খুঁজল। এবার তারা নানা উপায়ে তাদের এই তথ্য উপস্থাপন করল। সাদিয়াদের দল তো একটি মজার গান বানালো আর গেয়ে শোনাল বিভিন্ন দেশের নাম ও তাদের দাঁত সংক্রান্ত রীতি-নীতি। তোমরাও নানা উপায়ে তোমাদের ফলাফল উপস্থাপন করতে পার।
দাঁত পড়া নিয়ে আমরা বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন প্রচলিত রীতি-নীতি অনুসন্ধান করেছি। এছাড়া অন্যান্য বিষয়েও বিভিন্ন সমাজে নানা ধরনের রীতি-নীতি প্রচলিত আছে। আমরা সেগুলোও অনসন্ধান করতে পারি। দেখতে পারি -কোনো একটি সময়কালে, নির্দিষ্ট সমাজে এগুলো কেন তৈরি হয়েছে? অনুসন্ধানের ধাপ অনুসরণ করে আমরা প্রশ্ন তৈরি করি ও উত্তর খুঁজি। বয়সে যারা বড় তারা হয়তো এগুলো অনুসন্ধানে তথ্য দিয়ে আমাদের সাহায্য করতে পারে।