৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ১ pdf

৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ১ : রুপা আজ ক্লাসে এসেছে কাগজে মোড়ানো একদম ছোট্ট একটা কিছু নিয়ে। সবাই বলল, “কী এর ভেতরে? খুলে দেখাও। ” রুপা মোড়ানো কাগজ খুলতেই বেরিয়ে এলো সাদা ছোট্র একটি দাঁত। রুপা বলল, “আমার ছোট বোনের দীত পড়েছে।

এটি সে ঘুমানোর সময় তার বালিশের নিচে রেখেছে। সে ভাবছে একটি পরি এসে তার দাঁত নিয়ে যাবে আর তাকে একটি উপহার দিয়ে যাবে। এটি সে বিদেশি কার্টুনে দেখেছে”। আনুচিং বলল, “আসলেই কি পরি আসবে?” রুপা বলল, “আরে না, আমার মা-ই উপহার কিনে বালিশের নিচে রেখে দিয়েছে। ” সবাই হেসে উঠল।

এবারে ক্লাসের সবাই তাদের প্রথম পড়া দীতটি কী করেছিল তা বন্ধুদের বলল। তুমি তোমার প্রথম পড়া দাঁতটি কী করেছিলে? ছবি এঁকে তোমার বন্ধুদের সেই গল্পটি বলতে পারো।

৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ১

অনুসন্ধানের প্রশ্ন:- দাঁত পড়া নিয়ে আমাদের পরিবার বা এলাকা বা সমাজে কী ধরনের রীতি-নীতি আর গল্প প্রচলিত আছে?

প্রশ্নে যে মূল বিষয়বস্তুগুলো রয়েছে-
● আমাদের পরিবার, এলাকা ও সমাজ
● প্রথম দাঁত পড়লে রীতি-নীতি বা নিয়ম-কানুন
● দাঁত নিয়ে প্রচলিত বিভিন্ন গল্প বা চিন্তা-ভাবনা
● কার কাছে বা কোথায় গেলে জানতে পারব? (তথ্যের উৎস):
● কী উপায়ে জানবো ও তথ্য সংগ্রহ করব? (তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি):
● তথ্য সংগ্রহ: এ জন্য আমরা নিচে দেওয়া ছকটি ব্যবহার করতে পারি। দলের সবাই মিলে বিভিন্ন এলাকার ও বিভিন্ন সময়ের মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করল
● তথ্য বিশ্লেষণ: একই রকম তথ্যগুলোকে একসাথে করল, যেমন- এলাকাভিত্তিক তথ্য, বিভিন্ন সময়ের তথ্য (বিভিন্ন বয়সী মানুষের কাছ থেকে নেওয়া)।
● ফলাফল বা সিদ্ধান্ত:

● উপস্থাপন: রবিন আর তার দল তাদের অনুসন্ধানী কাজ ও তার ফলাফল ছবি এঁকে উপস্থাপন করল- কীভাবে ভিন্ন ভিন্ন এলাকার মানুষ প্রথম দাঁত পড়লে কী কী করে। ভিন্ন এলাকার দীত নিয়ে মজার মজার গল্প বলল। অন্যরাও নানা উপায়ে উপস্থাপন করল তাদের অনুসন্ধানী কাজ।

৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ১

বিষয়বস্তু: দাঁত পড়া নিয়ে রীতি-নীতি
অনুসন্ধানের প্রশ্ন: দাঁত পড়া নিয়ে আমাদের পরিবার বা এলাকা বা সমাজে কী ধরনের রীতি-নীতি আর গল্প প্রচলিত আছে?

প্রশ্নে যে মূল বিষয়বস্তুগুলো রয়েছে:
● আমাদের পরিবার, এলকা ও সমাজ: জাতি হিসেবে আমরা সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ। তাই আমাদের আমাদের পরিবার, এলকা ও সমাজে বিভিন্ন রীতি-নীতি প্রচলিত রয়েছে।

● প্রথম দাঁত পড়লে রীতি-নীতি বা নিয়ম-কানুন: শিশুর যখন প্রথম দাঁত পড়ে, তখন মুরব্বীরা বিভিন্ন প্রকার রীতি-নীতি বা নিয়ম-কানুন পালন করে থাকেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, এতে শিশুর কল্যাণ হবে।

● দাঁত নিয়ে প্রচলিত বিভিন্ন গল্প বা চিন্তা-ভাবনা: শিশুর প্রথম দাঁত পড়া এবং তার প্রেক্ষিতে রীতি-নীতি পালনের পেছনে বিভিন্ন গল্প রয়েছে। এ গল্পগুলো মূলত মনের কাল্পনিক কিছু ধারণা। এ গল্প বা চিন্তা-ভাবনার মধ্যে ফুটে ওঠে যে, দাঁত পড়া নিয়ে গৃহীত কিছু পদক্ষেপ শিশুদের জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসে।

কার কাছে বা কোথায় গেলে জানতে পারব? (তথ্যের উৎস): আমাদের আশেপাশে থাকা বয়জেষ্ঠ্য ব্যক্তি, বিভিন্ন ম্যাগাজিন এবং শ্রেণিশিক্ষক।

কী কী উপায়ে জানব ও তথ্য সংগ্রহ করব? (তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি): আমাদের আশেপাশে থাকা পরিচিত বয়জেষ্ঠ্য ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করব, ইন্টারনেটে কোর্সটিকা ওয়েবসাইট ভিজিট করব এবং শ্রেণিশিক্ষকের সহায়তা নেব।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: শিক্ষার্থীরা, বিশেষ কিছু সমস্যার কারণে আমরা ওয়েবসাইটে ছকটি তৈরি করতে পারছি না। তবে আমাদের পিডিএফ উত্তরমালায় তোমরা এই উত্তরটি ছক আকারেই পাবে।

– তথ্য সংগ্রহের ছক –

কার কাছ থেকে তথ্য নিলাম?
প্রথম দাঁত পড়লে কী করে?
দাঁত নিয়ে মজার কোন চিন্তা/প্রচলিত গল্প

সাবিহা খাতুন (ফাতেমার দাদি), রাজশাহী
দাঁত ইঁদুরে গর্তে রাখে।
দাঁত ইঁদুরে গর্তে রাখলে আমাদের দাঁতগুলো দেখতে ছোট-ছোট এবং সুন্দর হবে।

আমিনা বেগম (রাতুলের মা), সিলেট
দাঁতটি রোদে ফেলে দেয়।
দাঁত রোদে ফেলে দিলে আমাদের দাঁত অনেক উজ্জ্বল এবং পরিস্কার হবে।

শাহীদা পারভীন (রাসেলের মা) বরিশাল
দাঁতটি পানিতে ছুঁড়ে দেয়।
দাঁত পানিতে ছুঁড়ে দিলে আমাদের দাঁত অনেক দ্রুত উঠবে।

রোজিনা (আবিরের বোন) নারায়ণগঞ্জ
গাছের গোড়ায় দাঁত পুঁতে ফেলে।
গাছের গোড়ায় দাঁত পুঁতে ফেলতে দাতগুলো অনেক সুন্দর হবে।

রোক্সানা বেগম (লিজার নানী) ঢাকা
চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে ছুঁড়ে ফেলে।
পড়ে যাওয়া দাঁত চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে ছুঁড়লে দাঁত অনেক সুন্দর হবে।

তথ্য বিশ্লেষণ: উপরের ছকে উল্লেখিত তথ্যগুলো আমি আমার নিকটবর্তী এবং পরিচিত বয়জেষ্ঠ্য ব্যক্তিদের সাথে আলাপের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছি। এছাড়াও ইন্টারনেটে কোর্সটিকা ওয়েবসাইটে এ তথ্যগুলো রয়েছে। যেখান থেকে আমি তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি।

পাশাপাশি আমার বিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের শ্রেণিশিক্ষক জনাব সাইফুল ইসলামের থেকে সহায়তা গ্রহণ করেছি। এ তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে, শিশুর প্রথম দাঁত পড়া নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রীতি-নীতি প্রচলিত রয়েছে। কখনো কখনো একস্থানের রীতির সাথে অন্য স্থানের রীতি মিলে যায়, আবার কখনো কখনো এক স্থানের রীতির সাথে অন্য স্থানের রীতি সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে থাকে।

ফলাফল বা সিদ্ধান্ত: উক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। তা হল—
১. দাঁত পড়া নিয়ে করণীয় রীতি-নীতিগুলো এলাকা ও সমাজভেদে আলাদা-আলাদা হতে পারে।
২. মূলত শিশুদের কল্যাণ প্রত্যাশার জন্য এসব রীতি-নীতি পালন করা হয়।
৩. সমাজে প্রচলিত এসব রীতি-নীতির পেছনে ব্যক্তির এমন কিছু ধ্যান-ধারণা কাজ করে, যা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক।

উপস্থাপন: শিক্ষার্থীরা নিজেদের মত করে স্বতস্ফূর্তভাবে উপস্থাপন করবে।

সবার উপস্থাপনা শেষে রূপা বলল, “নাহ, যা ভেবেছিলাম তা ঠিক না। আমার অনুমানটি সঠিক নয়। দীত পড়ার রীতি-নীতি সব এলাকা বা সমাজে একই নয়, ভিন্ন ভিন্ন। ” সাব্বির বলল, “অনেক বিষয়েই আমাদের এ রকম কিছু অনুমান থাকে, এগুলো আমাদের ব্যক্তিগত ধারণা বা চিন্তা। অনুসন্ধানী কাজের মাধ্যমে আমরা সেটি যাচাই করতে পারি, আমাদের ধারণাও পাল্টাতে পারি”।

বন্ধুদের দলের কাজ মূল্যায়ন করি

বন্ধুদের উপস্থাপনা মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি। নিচের ছকে অনুসন্ধানের প্রতি ধাপে অনুসন্ধানকারীর কাছ থেকে যে প্রত্যাশা বা আদর্শ কাজ তা দেওয়া আছে। সেগুলো বিবেচনা করে প্রতি দলের অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াকে কীভাবে আরও উন্নয়ন করা যায়, কী করলে বা না করলে আরও ভালো হতো এবং কেন, এগুলো বুঝিয়ে বলি, আর খুব ছোট ও সংক্ষেপ করে নিচের চার্টে লিখি।

বন্ধুদের ভালো কাজের প্রশংসা করতেও ভুলবোনা আমরা। একে বলে ফিডব্যাক দেওয়া। প্রতি ধাপে তাদের কাজটি সঠিকভাবে করতে পেরেছেআংশিক পেরেছেআর অনেক সাহায্যের দরকার- এই ৩টির কোনো একটি লিখব তাদের কাজটি আদর্শের সাথে তুলনা করে।

উত্তরমালা

Rate this post

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.