তরমুজ | তরমুজের উপকারিতা
তরমুজ একটি সুস্বাদু রসালো ফল। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও অনেক সুস্বাদু। আবার তরমুজের উপকারিতাও অনেক। চীনে সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ করা হয়। বাজারে খুব সহজেই তরমুজ পাওয়া যায় এবং এর উপকারের তুলনায় দাম অনেক কম। চলুন তাহলে তরমুজের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
তরমুজের উপকারিতা
তরমুজে পটাসিয়াম ভিটামিন এ, সি ও বি রয়েছে। এতে লাইকোপেন নামে এক ধরণের এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যে কারণে তরমুজের রং সামান্য লাল হয়। লাইকোপেন অতি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান স্ট্রোকের সম্ভাবনা অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এতে ক্যালরি ও ফাইবার এর পরিমান খুবই কম কিন্তু জলের পরিমাণ বেশি। চলুন তাহলে নিচে বিস্তারিতভাবে তরমুজের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই –
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রতিদিন এক টুকরো করে তরমুজ খেলে অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল দূরে রাখা যায়, যা হার্ট সংক্রান্ত প্রতিরোধ করতে পারে। তরমুজে থাকা সিট্রোলিন হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে
তরমুজে প্রচুর পরিমাণ পানি রয়েছে যা হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে ফাইবার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে খাবার হজম করিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে
তরমুজের সবথেকে বড় উপকারিতা হলো এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় বিপাক ক্রিয়া সঠিক থাকে ও শরীরে নানা রকম বিষক্রিয়া পদার্থ ও ফ্যাট থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে, যা ওজন হ্রাস করে।
শরীরে আর্দ্র রাখে
তরমুজের ৯০% ই জল যা শরীরকে আর্দ্র রাখে। তাই অন্য কিছু খাওয়ার থেকে তরমুজ খাওয়া অনেক উপকারী। এতে প্রস্রাবের পরিমাণ ঠিক থাকে ফলে কিডনিতে চাপ পড়ে না।
ক্যান্সার রুখতে
তরমুজে থাকা লাইকোপেন ক্যান্সারের প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে আনে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা ক্যান্সার রোধ করে। দু’কাপ তরমুজে 20 গ্রাম লাইকোপেন রয়েছে নানা ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। তাছাড়া প্রোস্ট্রেট ক্যান্সারের জন্য লাইকোপেন কেমোথেরাপির মত কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এতে ভিটামিন বি ৬ যা এন্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে। এছাড়াও তরমুজে থাকা ভিটামিন এ শরীরের নানা রকম সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে।
কিডনির সুরক্ষায়
তরমুজে পটাশিয়ামের পরিমাণ খুব কম যে কারণে কিডনি সমস্যায় ভোগা মানুষদের জন্য এটি খুবই উপকারী। কিডনির সমস্যা থাকলে কম পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ায় ভালো। এক্ষেত্রে অনায়াসেই খাবার তালিকায় তরমুজ যোগ করতে পারেন। আরও পড়ুন –
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
তরমুজে উচ্চ পরিমাণে সিট্রোলিন থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
চোখের জন্য প্রয়োজন
তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আছে যা চোখের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। বয়স কালে দ্রুত চোখে ছানি পড়া রোধ করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী
তরমুজের শর্করার পরিমাণ কম থাকে এছাড়াও এতে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে সাথে এন্টি ডায়াবেটিক উপাদানও। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের তরমুজ খাওয়া অনেক উপকারী।
গরমে স্ট্রোক রোধ করতে সাহায্য করে
তরমুজ শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করে, তেষ্টা মিটিয়ে জলের পরিমাণ ঠিক রাখে। যা গরমে স্ট্রোক রোধ করতে সাহায্য করে।
হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিনসি অনেক প্রয়োজনীয়। এটি হাড়ের ছোট খাটো সমস্যা অনেক সহজেই দূর করে।
মাড়ির জন্য উপকারী
তরমুজে থাকা ভিটামিন সি মাড়ির জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন সি এর অভাবে মাড়ি থেকে রক্তপাত ও মাড়িতে ফোলাভাব দেখা যায়। নিয়মিত তরমুজ খেলে এইগুলো কমে। এছাড়া মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া ও মাড়ির সংক্রমণ রোধ করতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য
গর্ভবতী অবস্থায় বুকে জ্বালা হওয়া খুব সাধারণ। এছাড়া প্রতিদিন সকালে উঠে গর্ভবতী মহিলাদের অসুস্থবোধ করতেও দেখা যায়। নিয়মিত তরমুজ খেলে এসব সমস্যা অনেকটাই রোধ করা যায়।