বেদানার ১১ উপকারিতা
একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল হচ্ছে বেদানা। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফলেট ও পটাশিয়াম ছাড়াও অত্যন্ত কার্যকরী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনল এবং পুনিসিস থাকে। এ কারণে বেদানা নানা রকম রোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।
ডাক্তার ঔষধ এর পেছনে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় নিয়মিত বেদানা খেলে তার অনেকটাই খরচ কমে যাবে। কারণ নিয়মিত বেদানা খেলে ছোট – বড় কোন রোগই আপনার ধারে কাছে আসতে পারে না। তাছাড়া শরীর এতটাই চাঙ্গা হয় যে আয়ু বাড়ে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে বেদানার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই –
বেদানার ১১ উপকারিতা
ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়
শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে প্রতিদিন যে যে ভিটামিনগুলো প্রয়োজন হয় তার সবকয়টি বেদানায় পাওয়া যায়। যেমনঃ ভিটামিন সি, ই, কে সেইসাথে ফলেট, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও অনেক কিছু। তাই দীর্ঘদিন যদি সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চান, তাহলে নিয়মিত এই ফলটি খান।
পেটের নানা রকম সমস্যা কমে
বাঙালি মানেই খাবার-দাবারের কোনো বাছবিচার নেই। আর এমনটা করতে গিয়ে পড়তে হয় পেটের সমস্যায়। আর এ সমস্যা হলে অল্প করে এক্ষুনি বেদানা খেয়ে ফেলুন।এতে অনেকটা উপকার পাবেন। কারণ বেদনার ভিতরে থাকা বিভিন্ন দরকারী উপাদান স্টমাকের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। একই সাথে হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও ভূমিকা রাখে তাছাড়া। তাছাড়া বেদানার পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেলেও দারুন উপকার পাওয়া যায়।
হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ে
প্রতিদিন ডায়েটে এই ফলটি রাখলে সারা শরীরের রক্তের প্রবাহ অনেক বৃদ্ধি পায়। ফলে হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে থাকে। তাছাড়া হার্টঅ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
চুল পড়া কমে
আপনি কি অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আজ থেকে প্রতিদিন বেদানার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন চুল পড়ার মাত্রা কমবে, একই সাথে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
বিভিন্ন মরণ রোগ (ক্যান্সার) ধারের কাছেও আসতে পারবে না
বেদানায় ফ্লেবোনয়েড নামক একটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্টের রয়েছে। যা রক্ত উপস্থিত ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টক্সিক উপাদানগুলোকে শরীর থেকে বের করে দেয়। এ কারণে দেহের ভিতর ক্যান্সার সেল জন্ম নিতে পারে না। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোস্টেট এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারকে দূরে রাখতে এ ফলটি নানাভাবে সাহায্য করে।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বেদানার উপকারিতা অনেক। প্রতিদিনের ডায়েটে বেদনাকে রাখলে ত্বকের অনেক কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। একইসাথে ডার্ক স্পট, ডার্ক সার্কেলও দূর হয়ে যায়। ফলে সৌন্দর্য বাড়ে।
অ্যানিমিয়া রোগ ধারে কাছে আসতে পারে না
আমাদের দেশে প্রতিবছর বাড়ছে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ। এরকম পরিস্থিতিতে বেদানা খাওয়ার প্রয়োজন। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতার মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এজন্যই ছোটবেলা থেকে মেয়েদের বেদানা খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ডায়াবেটিস দূরে থাকে
আপনার পরিবারে কে ডায়াবেটিস মরণ রোগের ইতিহাস রয়েছে? যদি থাকে তাহলে আজ থেকেই বেদানা খাওয়া শুরু করে দিন। এতে করে দেখবেন আপনার জীবনকালে কখনো ডায়াবেটিস আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারবে না। কারণ একে তামার তার শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। একারণে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের মতো রোগ কাছে আসতে পারে না।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে
বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় নিয়মিত কাঁচা বেদানা বা বেদানার রস খেলে উচ্চ রক্ত চাপ কমতে শুরু করে। অর্থাৎ শরীরে রক্তের প্রবাহ এতই বেড়ে যায় যে, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
জয়েন্টের সচলতা বৃদ্ধি পায়
শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কম থাকলে বা কমতে শুরু করলে তখন কিছু ক্ষতিকর এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যে কারণে জয়েন্টের সচলতার কমতে শুরু করে। এক্ষেত্রে বেদানা নানা কাজে আসে। যে এনজাইমের কারণে হাড় ক্ষয় হতে থাকে তার ক্ষরণ কমিয়ে, আর্থাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতে এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
দাঁত শক্ত হয়
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি-ভাইরাল প্রপাটিজে পরিপূর্ণ এ ফলটি খাওয়া মাত্র মুখগহবরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণু মারা যায়। ফলে ক্যাভিটির মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কমে।