প্রাচীন যুগে বাংলা বলতে সমগ্র দেশকে বোঝাতো না। এর বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। নামগুলো বেশিরভাগই প্রাচীন জনগোষ্ঠীর নামানুসারে প্রচলিত। নিম্নে কয়েকটি জনপদের নাম ও অবস্থান বর্ণনা করা হলো–
- চন্দ্রদ্বীপঃ চন্দ্রদ্বীপ হচ্ছে মুগল-পূর্ব যুগের একটি ছোট রাজ্য এবং মুগল যুগের একটি বড় জমিদারি। বর্তমান বরিশাল অঞ্চলে চন্দ্রদ্বীপ নামক একটি জনপদের সৃষ্টি হয়েছিল। মধ্যযুগে চন্দ্রদ্বীপ বেশ সমৃদ্ধ ছিল।
- পুন্ড্রঃ পুন্ড্র প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে প্রাচীনতম জনপদ। বর্তমান বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে এ পুন্ড্র জনপদটির সৃষ্টি হয়েছিল। পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল পুন্ড্রনগর বা পুন্ড্রবর্ধন। যার বর্তমান নাম মহাস্থানগড়।
- গৌড়ঃ ৬০৬ সালে গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন রাজা শশাঙ্ক। গৌড়ের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। ষষ্ঠ শতকে পূর্ব বাংলার উত্তর অংশে গৌড় রাজ্য একটি স্বাধীন রাজ্যের কথা ইতিহাসবিদদের লেখায় পাওয়া যায়। সপ্তম শতকে শশাঙ্ককে গৌরাজ বলা হতো। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলায় ছিল এর অবস্থান। গৌড় রাজ্য থেকে রাজা শশাঙ্ক বাংলাকে প্রথম স্বাধীন রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। এ জন্য রাজা শশাঙ্ককে বাংলার প্রথম নরপতি বলা হয়।
- সমতটঃ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ ছিল সমতট। কেউ কেউ মনে করেন, সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। গঙ্গা-ভাগীরথী পর্যন্ত সমুদ্রকূলবর্তী অঞ্চলকেই সম্ভবত বলা হতো সমতট। এর রাজধানী ছিল বড়-কামতা/রোহিতগিরি। বর্তমান কুমিল্লা নোয়াখালীতে সমতট জনপদের অবস্থান ছিল বলে ঐতিহাসিকদের ধারণা।