Modal Ad Example
পড়াশোনা

বঙ্গবাণী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

1 min read

প্রশ্ন-১ :
পরের মুখে শেখা বুলি পাখির মতো কেন বলিস?
পরের ভঙ্গি নকল করে নটের মতো কেন চলিস?
তোর নিজস্ব সর্বাঙ্গে তোর দিলেন ধাতা
আপন হাতে,
মুছে সেটুকু বাজে হলি, গৌরব কি বাড়ল তাতে?
আপনারে যে ভেঙেচুরে গড়তে চায় পরের ছাঁচে,
অলীক, ফাঁকি, মেকি সে জন, নামটা তার
কদিন বাঁচে?

ক. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত?
খ. ‘সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘স্বকীয়তাই প্রকৃত অর্থে সুন্দর’ — উদ্দীপক ও ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা অবলম্বনে মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি আবদুল হাকিমের ‘নূরনামা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।
খ. ‘সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন’ বলতে বোঝানো হয়েছে, স্রষ্টা সব ভাষাই অনুধাবন করতে পারেন।
মূলত সব ভাষাই সৃষ্টিকর্তার দান। তিনি সব ভাষাই বোঝেন এবং যে ভাষায়ই তাঁকে ডাকা হোক না কেন, তিনি তাতে সাড়া দেন। তিনি সব ভাষারই স্রষ্টা। অন্তরের ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদন করে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকলে তিনি সব ভাষাভাষীর প্রার্থনাই গ্রহণ করেন। আলোচ্য উক্তিটি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় উল্লিখিত অন্ধভাবে পরের অনুকরণ করার দিকটি ফুটে উঠেছে। ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় অন্ধভাবে পরানুকরণ করার দিকটির সমালোচনা করা হয়েছে। বিদেশি সংস্কৃতি এবং বিদেশি ভাষার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাকা উচিত, কিন্তু নিজের সংস্কৃতি ও ভাষাকে ছোট করে নয়। ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা মনে করেন, বাংলা ভাষা হিন্দুদের দ্বারা তৈরি। তাই এ ভাষায় সৃষ্টিকর্তাকে ডাকলে তিনি সাড়া দেবেন না। এসব লোকের ধারণা, আরবি-ফারসি ভাষায়ই কেবল সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে হবে। উদ্দীপকেও অন্ধভাবে পরের অনুকরণ করা লোকদের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে, যারা পরের ভাষা রপ্ত করেন, পরের ভঙ্গি নকল করেন এবং বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ করে নিজের গৌরব বৃদ্ধি করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। এসব করে তারা মূলত নিজেদের নিজস্বতা বিসর্জন দেন। উদ্দীপক ও ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় এসব অন্ধ অনুকরণপ্রিয় লোকদের প্রতি কঠোর মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে।

ঘ. ‘স্বকীয়তাই প্রকৃত অর্থে সুন্দর’ — মন্তব্যটির যথার্থতা রয়েছে।

অন্ধভাবে পরের অনুকরণ করলে নিজস্বতা বলে কিছু থাকে না। ভাষা, সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রেই অহেতুক পরানুকরণপ্রিয়তার বিরূপ প্রভাব রয়েছে, যা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় ফুটে উঠেছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি মাতৃভাষা বাংলার বন্দনা করেছেন। মাতৃভাষা বাংলা আমাদের নিজস্ব ভাষা। মাতৃভাষায়ই প্রতিটি জাতির স্বকীয়তা নিহিত। মাতৃভাষার যথাযথ ব্যবহারেই রয়েছে কল্যাণ ও উপকার। মাতৃভাষা বাংলাকে অবজ্ঞাকারীরা তা বোঝে না। বিদেশি ভাষাচর্চায় তারা গৌরব বোধ করে থাকে। অন্যদিকে উদ্দীপকে পরের ভাষা এবং পরের ভঙ্গি নকল করার নেতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরা হয়েছে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ ব্যক্তিত্ব ও মেধা দান করেছেন। তার যথার্থ চর্চা না করে অন্ধভাবে অন্যকে অনুকরণ করে অনেকেই নিজেকে গড়তে চায়, যা অনুচিত। কেননা, তাতে নিজস্বতা বলে আর কিছু থাকে না।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি স্বভাষা ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকেও নিজস্বতাকে ব্যবহার করার কথা বলা   হয়েছে। তাই বলা যায়, স্বকীয়তাই প্রকৃত  অর্থে সুন্দর।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x