স্যাটেলাইট কি? স্যাটেলাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

স্যাটেলাইট সম্পর্কে আমাদের অনেকের মনেই নানা প্রশ্ন। আসলে স্যাটেলাইট কি? এত টাকা খরচ করে একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্যই বা কি? কিংবা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কী কী সেবা ভোগ করা যায়?

স্যাটেলাইট সম্পর্কিত এমন অসংখ্য প্রশ্ন আমাদের মনে থেকেই যায়। এই ব্লগে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করা যায় এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক কৌতুহলের সমাধান পাবেন। তো চলুন শুরু করা যাক।

স্যাটেলাইট কি?

সৌর জগতের প্রধান গ্রহ আটটি। তার মধ্যে বুধ আর শুক্র এর কোন উপগ্রহ নেই। পৃথিবীর ১টি, মঙ্গলের ২ টি, বৃহস্পতির ৭৯ টি, শনির ৮২ টি, ইউরেনাস এর ২৭টি, আর নেপচুনের ১৪ টি উপগ্রহ আছে। অর্থাৎ উপগ্রহ আমরা সবাই চিনি। তবে এই উপগ্রহ দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা-
১. প্রাকৃতিক উপগ্রহ (Natural Satellite) এবং
২. কৃত্রিম উপগ্রহ (Artificial Satellite)

আর এই কৃত্রিম উপগ্রহ-ই হল স্যাটেলাইট যা মানব সৃষ্ট। এ সকল স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ আমাদের পৃথিবী কে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘুরছে। চাঁদ ব্যতীত পৃথিবীর সকল উপগ্রহ-ই কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট। একটি স্যাটেলাইটের আমাদের পুরো পৃথিবী কে একবার প্রদক্ষিণ করতে 24 ঘন্টা সময় লাগে।

মূলত পৃথিবীপৃষ্ঠের উন্নত ম্যাপিং করার জন্য সর্বপ্রথম স্যাটেলাইটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাছাড়া তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ইমেজিং, ফটোগ্রাফি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, বিভিন্ন দুর্গম এলাকার ম্যাপিং, দূরবর্তী টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ইন্টারনেট, টিভি চ্যানেল সম্প্রচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি‌ আমাদের ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।

স্যাটেলাইটের (Satellite) কাজ কি?

স্যাটেলাইটের কাজ বা প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই কিছুটা ধারণা পেয়েছি।
তবে অনেকের মনে আবার প্রশ্ন জাগতে পারে, টাওয়ার বসিয়ে বা সাবমেরিন ক্যাবল দিয়েই তো যোগাযোগ করা যায়। তাহলে স্যাটেলাইটের দরকার কি?

এখন মনে করুন আপনি বন্যাকবলিত কোন এলাকায় রয়েছেন যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র টাওয়ারের উপর নির্ভরশীল হলে যোগাযোগ করতে পারবেন না।

অথবা মনে করুন আপনি বিশাল সমুদ্রের মধ্যে আছেন বা অ্যামাজন বন কিংবা সাহারা মরুভূমির মতো কোন নির্জন স্থানে আছেন। অর্থাৎ এই সকল জায়গা থেকে পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে যাবে কিন্তু আপনার কাছে যদি একটি স্যাটেলাইট ফোন থাকে তবে আপনি অতি সহজেই আপনার কাঙ্খিত যে কোন জায়গার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।

আমরা সবাই কমবেশি গুগল ম্যাপ ব্যবহার করি। গুগল ম্যাপের মাধ্যমে কোন রাস্তার ছবি বা অনেক সময় আমরা নিজেদের অবস্থান বা আমাদের বাড়ির অবস্থান খুঁজে বের করি। এসবই সম্ভব হয়েছে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে।

আবার মনে করুন আপনি বাংলাদেশ থেকে কোন ইনফরমেশন বা ছবি আমেরিকাতে আপনার বন্ধুর কাছে পাঠাতে চান। এক্ষেত্রে আপনি যদি টাওয়ার বা সাবমেরিন ক্যাবলের যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা চিন্তা করেন তাহলে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকাতে ইনফর্মেশন যাওয়ার পথে অনেক ডাটা লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে স্যাটেলাইটগুলো বাংলাদেশ এবং আমেরিকার মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি সেতুর মতো কাজ করে।

স্যাটালাইটের ইতিহাস

মহাকাশ নিয়ে মানুষের কৌতুহল হাজার বছরের পুরনো হলেও মহাকাশ যাত্রার ইতিহাস কিন্তু খুব একটা পুরোনো নয়। 1957 সালের 4 অক্টোবর মাসে সর্বপ্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশ যাত্রা করেন।

তখন তারা স্পুটনিক-1 নামক একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেন। একই বছর 2 নভেম্বর স্পুটনিক-2 নামে অন্য আরেকটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেন। তার পরের বছর অর্থাৎ 1958 সালের 2 ফেব্রুয়ারি এক্সপ্লোরার-১ নামক একটি কৃত্রিম উপগ্রহ আমেরিকা উৎক্ষেপণ করেন।

তারপর 1961 সালের 12 এপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্য একটি কৃত্রিম উপগ্রহ ভস্টক-1 এ চড়ে ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেন। পরবর্তীতে 1966 সালে স্টক-1 নামক কৃত্রিম উপগ্রহে চড়ে ভ্যালেন্তিনা তেরেসকোভা প্রথম সোভিয়েত মহিলা হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেন।

বাণিজ্যিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সর্বপ্রথম ইনটেলসেট-1 নামক কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো হয়। আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য 1975 সালে অ্যাপোলো-সয়োজ টেস্ট প্রজেক্ট নামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়।

1957 সালে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো হলেও এ পর্যন্ত প্রায় সহস্রাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। এসকল কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে বর্তমানে কয়েক শত সচল আছে এবং প্রায় হাজার হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে ধ্বংসাবশেষ হিসেবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।

স্যাটেলাইট যে সকল উপাদান নিয়ে গঠিত

একটি স্যাটেলাইট সাধারণত নিম্নোক্ত উপাদান গুলো নিয়ে গঠিত হয়। তবে বিশেষ কাজের জন্য বিভিন্ন স্যাটেলাইটে আরো অসংখ্য টেকনোলজির ব্যবহার করা হয়।
সাধারণত যে সকল উপাদান থাকে, সেগুলো হলোঃ

1. Band Pass Filter
2. Low Noise Amplifier
3. Frequency Translator
4. Microwave shift oscillator
5. Radio Frequency Mixer
6. Power Amplifier
7. High Resoluted Camera
8. Processor with high clock speed
9. High power Transmitting antenna
10. High power receiving Antenna

স্যাটেলাইটের প্রকারভেদ

বিভিন্ন কাজের উপর এবং কক্ষপথের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট ডিজাইন করা হয়।কক্ষপথ এর ভিত্তি করে স্যাটেলাইট সিস্টেম কে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

1. LEO ( Low Earth Orbit ): সাধারণত পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ১৬০-২০০০ কি.মি. উপরে এ ধরনের স্যাটেলাইট অবস্থিত। পৃথিবীপৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি তাকে বলে এ ধরনের স্যাটেলাইটকে টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেটের জন্য ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিক স্পেস ষ্টেশন (ISS) এই কক্ষপথে অবস্থিত।

2. MEO ( Medium Earth Orbit): এ ধরনের স্যাটেলাইট সাধারণত পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ২০০০০ কি.মি. উপরে অবস্থিত। নেভিগেশন এবং সামরিকবাহিনীদের কাজে লাগে এ ধরনের মন্থর গতির স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। জিপিএস স্যাটেলাইটগুলো এই কক্ষপথে অবস্থান করে

3. GEO (Geostationary Earth Orbit): পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ৩৫০০০ কি.মি. উপরে GEO স্যাটেলাইটগুলো অবস্থিত। এদেরকে সাধারণত রেডিও এবং টিভি এর ট্রান্সমিশনের কাজে ব্যাবহার করা হয়।

নির্দিষ্ট কাজের উপর ভিত্তি করে স্যাটেলাইটকে আরো কয়েক ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা-

1. ওয়েদার স্যাটেলাইট (weather satellite): পৃথিবীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের কাজে সাধারণত এ ধরনের স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের স্যাটেলাইট পৃথিবীর আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন ছবি এবং তথ্য ধারণ করে। যেমন-

  • COSMOS
  • COSMOS
  • GEOS ইত্যাদি

2. কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইট (communication satellite): পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত এবং সহজবোধ্য করতে কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের সিগন্যাল, তথ্য এবং ব্রডকাস্টিং সমূহ এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

কম্যুনিকেশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এসকল তথ্য আদান-প্রদান হয় বলে একে স্পেস কম্যুনিকেশনও বলা হয়। এই স্যাটেলাইট সিস্টেমে মূলত উচ্চ কম্পাংকের তরঙ্গকে স্যাটেলাইটে প্রেরণ করা হয় এবং স্যাটেলাইটে সকল তরঙ্গকে বিবর্ধিত করে পৃথিবীতে স্থাপিত গ্রাহক স্টেশনে পাঠায়।

3. জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইটঃ ভূ-স্থির উপগ্রহগুলোই হল মূলত জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইট। এ ধরনের স্যাটেলাইটসমূহ 24 ঘন্টায় পৃথিবী কে একবার ঘুরে আসে আর যেহেতু পৃথিবী তার নিজ অক্ষের চারদিকে ঘুরে আসতে 24 ঘন্টা সময় লাগে, তাই এদেরকে ভূ-স্থির উপগ্রহ বলা হয়। এ স্যাটেলাইটসমূহ 35,786 কি.মি উচ্চতা থেকে পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করে।

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-1 ও কিন্তু একটি ভূ-স্থির উপগ্রহ বা জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইট। পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইটসমূহ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। যেহেতু পৃথিবী গোলাকার এবং এ সকল স্যাটেলাইটসমূহ তাদের কক্ষপথে স্থির অবস্থায় থাকে, তাই সম্পূর্ণ পৃথিবী কভার করতে 120 ডিগ্রি কোণে তিনটি জিওস্টেশনারী স্যাটেলাইট লাগে।

4. ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট: এ ধরনের স্যাটেলাইট বিমান ও সমুদ্রগামী জাহাজের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। GPSNAVSTAR স্যাটেলাইট হলো এ ধরনের স্যাটেলাইটের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

তাছাড়া আমরা জিপিএস সিস্টেম এর কথা শুনেছি। জিপিএস হলো এ ধরনের স্যাটেলাইটভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম। 24 টি স্যাটেলাইট নিয়ে একটি জিপিএস সিস্টেম গঠিত হয়। জিপিএস সিস্টেম এর মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে যেকোনো আবহাওয়ায় পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে তথ্য ও ছবি পাঠানো সম্ভব।

5. পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইট: প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে এবং পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশের ছবি তুলতে এ ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়।

6. মিলিটারী স্যাটেলাইট: রাডার ইমেজিং, ফটোগ্রাফি, নিউক্লিয়ার মনিটরিং এবং শত্রুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে এ ধরনের সামরিক কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়।

যেভাবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়

সাধারণত উৎক্ষেপণ যন্ত্র বা Launch Vehicle এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্যাটেলাইটগুলো উৎক্ষেপণ করা হয়। দুই ধরনের উৎক্ষেপণ যন্ত্রের মাধ্যমে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়।
১. অপচয়যোগ্য রকেট
২. মহাশূন্য শাটল

অপচয়যোগ্য রকেটগুলো মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্যাটেলাইট স্থাপনের পর ধ্বংস হয়ে যায়। অপরদিকে মহাশূন্য শাটল ব্যবহার করে বারবার রকেট উৎক্ষেপণ করা যায়।

কক্ষপথে স্যাটেলাইট স্থাপন তথা রকেট উৎক্ষেপণের সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় অভিকর্ষজ ত্বরণের। কারণ অভিকর্ষজ ত্বরণ আমাদেরকে সব সময় পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে। তাই রকেট এর গতির সমতা রক্ষা করে স্যাটেলাইটসমূহ উৎক্ষেপণ করতে হয়।

স্যাটেলাইটে পাওয়ার সরবরাহ করার জন্য প্রত্যেক স্যাটেলাইট 32,000 মাউন্টেড করা তাকে, যারা সাধারণত 520 ওয়াট পাওয়ার সরবরাহ করতে পারে। তাছাড়াও ব্যাক-আপ হিসেবে ক্যাডমিয়াম বাটারি রাখা হয়।

তবে মাঝে মাঝে নিউক্লিয়ার পাওয়ার সোর্স ও ব্যবহার করা হয়। স্যাটেলাইটের পাওয়ার সহ একে নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন সিস্টেমকে মনিটর করার জন্য এতে একটি অন বোর্ড কম্পিউটার সংযুক্ত করা তাকে।

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে স্যাটেলাইট যেহেতু পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে, এটি ভূপৃষ্ঠে পড়ে যায় না কেন?এর উত্তরটিও খুব সহজ। আমরা সবাই কেন্দ্রমুখী বল এবং কেন্দ্রবিমুখী বল সম্পর্কে কম-বেশি জানি। অর্থাৎ কোন বস্তু যখন অন্য কোন বস্তুকে কেন্দ্র করে তার চারদিকে ঘুরতে থাকে, তখন কেন্দ্রের দিকে একটি বল কাজ করে যাকে কেন্দ্রমুখী বল বলা হয়।

অন্য আরেকটি বল ঘূর্ণায়মান বস্তুটিকে ঘূর্ণন অক্ষ থেকে ছিটকে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রের বিপরীত দিকে কাজ করে যাকে কেন্দ্রবিমুখী বল বলা হয়। অর্থাৎ কোন ঘূর্ণায়মান বস্তুর ওপর দুটি বল কাজ করে। কেন্দ্রের দিকে কেন্দ্রমুখী বল এবং কেন্দ্রের বিপরীত দিকে কেন্দ্রবিমুখী বল কাজ করে।

কেন্দ্রমুখী বল এবং কেন্দ্রবিমুখী বল সমান হওয়ায় বস্তুটি ছিটকে না গিয়ে এক-ই অক্ষ বরাবর ঘুরতে থাকে। যেমন একটি সুতার মাথায় কোন বস্তু বেঁধে হাতের অঙ্গুল দিয়ে ঘুরালে বস্তুটি হাতের আঙ্গুল কে কেন্দ্র করে ঘুরতে দেখা যায়। এক্ষেত্রেও কেন্দ্রমুখী বল এবং কেন্দ্রমুখী বল সমান হয় এরকম ঘটে। স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে বলে স্যাটেলাইট তার কক্ষপথ থেকে ছিটকে পৃথিবীপৃষ্ঠে পরে না বা মহাকাশে হারিয়ে যায় না।

বিভিন্ন দেশের মোট স্যাটেলাইটের সংখ্যা

1957 সালে সর্বপ্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশে স্যাটেলাইটপ্রেরণ করার পর তাদের অনুসরণ করে বিভিন্ন দেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠায়।

বিশ্বের 57 তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠায়। বর্তমানে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার স্যাটেলাইট ঘুরছে।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও এর গতিবিধি নিয়ে কাজ করে এন২ওয়াইও.কম ওয়েবসাইটের তথ্য মতে,

১. যুক্তরাষ্ট্রের ১৬১৬টি
২. সোভিয়েত রাশিয়া ভূক্ত দেশগুলোর স্যাটেলাইটের সংখ্যা ১৫০৪টি
৩. চীনের ২৯৮টি
৪. জাপানের ১৭২টি
৫. ভারতের ৮৮টি
৬. ফ্রান্সের ৬৮টি
৭. ব্রিটেনের ৪২টি
৮. দক্ষিণ কোরিয়ার ২৪টি
৯. স্পেনের ২৩টি
১০. তুরস্কের ১৪টি
১১. সৌদি আরবের ১৩টি
১২. পাকিস্তানের ৩টি
১৩. বাংলাদেশের ১ টি

বাংলাদেশের স্যাটেলাইটটির নাম বঙ্গবন্ধু-১

এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার অনেকগুলো স্যাটেলাইট বর্তমানে কক্ষপথে অবস্থান করছে।

 

শেষ কথা:

আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “স্যাটেলাইট কি? স্যাটেলাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts