কার্যভিত্তিক সংগঠন কি

বর্তমানে জটিল ও বৃহত্তায়তন কারবারি প্রতিষ্ঠানসমূহে অধিক উপযোগী সংগঠন কাঠামো হল কার্যভিত্তিক সংগঠন। এটি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন প্রকার সংগঠন কার্যের মধ্যে অন্যতম। সরলরৈখিক সংগঠনের কিছু ত্রুটি দূর করার জন্য বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক F. W. Taylor কার্যভিত্তিক সংগঠন উদ্ভাবন করেন এবং এর নাম Functional Foremanship. কার্যভিত্তিক সংগঠন কি কোন কারবারে বিভিন্ন কার্যকে সমজাতীয়তার ভিত্তিতে ভাগ করে প্রত্যেক কার্যসম্পাদনের দায়িত্বভার একজন বিশেষজ্ঞ কর্মীর…

সরলরৈখিক সংগঠন কি

ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সংগঠন কার্য পরিলক্ষিত হয়। তন্মধ্যে সরলরৈখিক সংগঠন হল অন্যতম। বর্তমানে বৃহদায়তন ও জটিল প্রতিষ্ঠানের জন্য সরলরৈখিক সংগঠন উপযুক্ত গণ্য না হলেও প্রাচীনতম সংগঠন পদ্ধতি হিসেবে এ ধরনের সংগঠন কাঠামো এমন কিছু বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। যার ফলে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে আজ এটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন কাঠামো হিসেবে বিবেচিত। তবে এ সংগঠনকে অনেকে সামরিক সংগঠনও বলে অভিহিত করে থাকেন। সরলরৈখিক সংগঠন কি যে সংগঠন পদ্ধতিতে ক্ষমতা ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ স্তর হতে নিচের দিকে একটি সরলরেখা বরাবর নেমে আসে তাকে সরলরৈখিক সংগঠন বলে। এ ধরনের সংগঠন শুধুমাত্র সরলরৈখিক কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হয়। এ প্রকার সংগঠনে শীর্ষ নির্বাহি হতে ধারে ধাপে নিম্নতম স্তরের নির্বাহিদের নিকট ক্ষমতা প্রত্যর্পণ করা হয়। অতএব বলা যায় যে, যে সংগঠনে কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব সর্বোচ্চ স্তর হতে সরলরেখার ন্যায় ধাপে ধাপে নিচের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে সরলরৈখিক সংগঠন বলে বা লাইন-সংগঠন বলে। সরলরৈখিক সংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা বিশারদ ও পণ্ডিত ব্যক্তিগণ বিভিন্নভাবে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। নিম্নে কয়েকজনের মতামত উপস্থাপন করা হল। আইরিচ ও কুঞ্জ (Weichrich and Koontz) এর মতে, “যে সংগঠন দেখতে পিরামিড সোপানের মত তাকে সরলরৈখিক সংগঠন বলে।” (The structures look like a pyramid with a broad base and concaved.) ড. সি. বি. মেমোরিয়া (Dr. C. B. Mamoria) এর মতে, “যে সংগঠন কাঠামোতে কর্তৃত্ব উপর থেকে নিচের দিকের অবস্থান পর্যন্ত কমবেশি সরলরেখার আকারে ধাবিত হয় তাকে সরলরৈখিকগণ তার অব্যবহিত ঊর্ধ্বতনের নিকট তাদের কাজের জন্য দায়ী থাকে।” (When authority flows form the top to the subordinate at the lowest level in a more or less straight line. It is known as line organization and the subordinates…

আনুষ্ঠানিক সংগঠন কি | আনুষ্ঠানিক সংগঠন কাকে বলে

আনুষ্ঠানিক সংগঠন কি প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে যে সাংগঠনিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা হয় তাকে আনুষ্ঠানিক সংগঠন নামে অভিহিত করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরে বা উপর হতে নিচ পর্যন্ত প্রত্যেকটি পদ, সম্পাদিত কার্যাবলির কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। এতে কার্যসম্পাদনে সংশিষ্ট সকলে সচেতন থাকে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন সহজতর হয়। আনুষ্ঠানিক সংগঠন কাকে বলে সাধারণ অর্থে, নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে যে সংগঠন গঠিত হয় তাকে আনুষ্ঠানিক সংগঠন বলে। ব্যাপক অর্থে, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পিত ও সঠিকভাবে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে দায়দায়িত্ব ও ক্ষমতা অর্পণ, কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মীদের মধ্যে সম্পর্কের কাঠামো নির্ধারণপূর্বক ব্যক্তিবর্গের সমষ্টিগত প্রয়াসকে আনুষ্ঠানিক সংগঠন বলা হয়। অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে এর উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে যে সংগঠন কাঠামো দাঁড় করানো হয় তাকে আনুষ্ঠানিক সংগঠন বলে। বিভিন্ন মনীষী ও ব্যবস্থাপনা বিশারদ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আনুষ্ঠানিক সংগঠনের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় সংজ্ঞা প্রদত্ত হল। আইরিচ এবং কুঞ্জ (Weihrich and Koontz) এর মতে, “প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠিত কাজের জন্য স্বতঃস্ফূর্ত কাঠামোকে আনুষ্ঠানিক সংগঠন বলে।“ ম্যাক্স ওয়েবার এর মতে, “আনুষ্ঠানিক সংগঠনগুলো আইন দ্বারা এক সংস্থাভুক্ত একটি দল।” এইচ. কুঞ্জ ও ডোনেল এর মতে, “আনুষ্ঠানিক সংগঠন একটি সম্পর্কের কাঠামো, যা সংগঠনকে একসূত্রে বেঁধে রাখে এবং যে কাঠামোর ভেতরে ব্যক্তিদের কর্মপ্রচেষ্টা সমন্বিত হয়।” সি. আই. বার্নার্ড (C. I. Barnard) এর ভাষায়, “আনুষ্ঠানিক সংগঠন হল এমন একটি সংগঠন যেখানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির কাজকে সচেতনভাবে একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সমন্বিত করা হয়।” (Formal organization is an organization when the activities of two or more persons are consciously co- ordinated towards a given objective.”) Trewatha and Newport এর মতে, “আনুষ্ঠানিক সংগঠন হল মূলত লক্ষ্যকেন্দ্রিক একটি সামাজিক সংজ্ঞা যেখানে ব্যক্তিক ও দলের সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর পরিবেশ বিদ্যমান থাকে।” (The formal organization is basically a goal oriented social entity which…

কমিটি কি | কমিটি কাকে বলে

কমিটি কি কমিটি হল একটি পূর্ণাঙ্গ সাংগঠনিক কাঠামো। সাধারণ অর্থে, কমিটি বলতে কতিপয় লোকের সমষ্টিকে বুঝায়, যাদের উপর কোন বিশেষ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ব্যাপক অর্থে, কমিটি হল কোন বিশেষ ব্যক্তিবর্গের সমষ্টি, যাদের উপর কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে প্রশাসনিক দায়িত্ব বা কোন কার্যভার অর্পণ করা হয়; যারা সমষ্টিকভাবে সে দায়িত্ব পালন বা কার্য সম্পাদন করে। সুতরাং বলা যায়, সফলতার সাথে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য বেশকিছু সংখ্যক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি দল যখন পারস্পরিক মত বিনিময়ের মাধ্যমে কার্যাবলি সম্পাদন করে তাকে Committee বলে। কমিটি কাকে বলে কমিটির সংজ্ঞা সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা বিশারদ বিভিন্নভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। নিম্নে কমিটির কয়েকটি জনপ্রিয় সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হল। অধ্যাপক জি. আর. টেরী (Prof. G. R. Terry) এর মতে, “উপস্থাপিত বিষয়াদি সম্পর্কে সুসংগঠিতভাবে একত্রিত হয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিমিত্তে নির্বাচিত বা নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের সমষ্টিকেই কমিটি বলে।” (A committee is a body of persons elected or appointed to meet on an organized basis or discussion and dealing of matters brought before it.) অধ্যাপক ডব্লিউ. এইচ. নিউম্যান (Prof. W. H. Newman) এর মতে, “কমিটি হল একদল লোকের সমষ্টি, যাদের উপর নির্দিষ্টভাবে প্রশাসনিক কাজ সম্পাদনের ভার ন্যস্ত করা হয়।” (A committee consists of a group of people specifically designated to perform some administrative act.) আইরিচ ও কুঞ্জ (Weihrich…

সংগঠনের নীতিমালা সমূহ বা নিয়ম নীতি আলোচনা কর

নীতি হল কোন কাজ সম্পাদনের সাধারণ নির্দেশিকা (Guidance for action)। দীর্ঘদিনের কার্য প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে সকল ক্ষেত্রেই এমন কিছু নিয়মনীতি গড়ে ওঠে বা গৃহীত হয়। যা সঠিকভাবে অনুসরণ করা হলে ঐ কাজ সুচারুভাবে সম্পাদন করা যায়। এ ধরনের নিয়ম বা দিকনির্দেশনাকেই নীতি বলা হয়। কার্যকর সংগঠন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এমন কিছু নিয়ম বা নীতিমালা লক্ষণীয়। সংগঠনের নীতিমালাসমূহ বা নিয়ম নীতি সুষ্ঠু সাংগঠনিক কার্যসম্পাদনের…

সংগঠনের বৈশিষ্ট্য গুলো বর্ণনা কর

সাধারণত লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন বিশেষায়িত উপাদানসমূহের সুষম সমন্বয় সাধনকে সংগঠন বলে। এটি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যথাযথ সংগঠন ছাড়া প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত উপায় উপকরণের কার্যকর ব্যবহার সম্ভব নয়। ইঞ্জিনকে সর্বতোভাবে প্রস্তুত না করে একে চালু করার প্রচেষ্টা যেমনি অর্থহীন তেমনি সংগঠন যদি কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠা করা না যায়, তবে কর্মক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা, জটিলতা ও ভারসাম্যহীনতা দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই একটি…

সংগঠন কি | সংগঠন কাকে বলে | সংগঠন নিয়ে বিভিন্ন সংজ্ঞা

সংগঠন কি সংগঠন একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এক বা একাধিক উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকে। আর এ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ, কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জাম এবং কার্যক্ষেত্রের প্রয়োজন হয়। তবে সকল উপকরণের সুসংবদ্ধ সমাহার ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভবপর হয় না। তাই জটিল কার্য অপরের সাহায্যে সম্পাদন করার জন্য কতিপয় ব্যক্তির সমন্বয়ে কাঠামো গঠন…

সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদক্ষেপ সমূহ আলোচনা কর

সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থাপনার একটি মৌলিক কাজ। প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবস্থাপনার কার্যসমূহ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা ও পরিবর্তনশীলতার সম্মুখীন হতে হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সফলতার উপরই ব্যবস্থাপনার সাফল্যার্জন নির্ভর করে। এজন্য ব্যবস্থাপনাকে বিভিন্ন সম্ভাব্য বিকল্পসমূহ হতে পূর্বানুমানের ভিত্তিতে সবচেয়ে উত্তম বিকল্পটি নির্বাচন করতে হয়। এক্ষেত্রে কতকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদক্ষেপ সমূহ ব্যবস্থাপকীয়…

সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর

ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যসম্পাদনে যে কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি ও সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য ব্যবস্থাপনাকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ব্যবস্থাপক সফলতার সাথে অর্জন করতে পারে। কিন্তু কোন প্রকার অবহেলা কিংবা অনীহা সৃষ্টি হলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যার্জন করা সম্ভবপর হয় না। তাই সফলতার সাথে কারবার ও…

পরিকল্পনার গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর

  পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা ব্যবস্থাপনাকে সমগ্র কার্য পরিচালনা ও বাস্তবায়নের ভিত্তি প্রদান করে। এটি ব্যবস্থাপনাকে অনিশ্চয়তার মধ্যেও নিশ্চয়তার আশ্বাস প্রদান করে আশান্বিত ও কর্মক্ষম করে তোলে। তাই পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনার পক্ষে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ কার্যব্যবস্থা। পরিকল্পনার গুরুত্ব নিম্নে পরিকল্পনার গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হল। ১. প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন (Accomplishment of organizational objectives) পরিকল্পনার প্রধান কাজ হল…