শক্তির সর্বাপেক্ষা সাধারণরূপ হল যান্ত্রিক শক্তি। কোন বস্তু বা সিস্টেমের কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে।
আর কোন বস্তু বা সিস্টেমের ভৌত অবস্থানের গতি বা স্থিতির জন্য এটি কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে বা এটি যে শক্তি অর্জন করে তাকে যান্ত্রিক শক্তি বলে।
বস্তু বা সিস্টেমের স্থিতি বা গতীয় অবস্থার বিবেচনায় যান্ত্রিক দুই প্রকার। যথাঃ
(১) গতিশক্তি ও
(২) বিভব শক্তি বা স্থিতিশক্তি।
(১) গতিশক্তিঃ কোনো গতিশীল বস্তু গতিশীল থাকার জন্যে কাজ করার যে সামর্থ্য অর্থাৎ শক্তি অর্জন করে তাকে গতিশক্তি বলে। কোনো গতিশীল বস্তু স্থির অবস্থায় আসার পূর্ব পর্যন্ত যে পরিমাণ কাজ করতে পারে তার দ্বারা বস্তুটির গতিশক্তি পরিমাপ করা হয়।
(২) বিভব শক্তি বা স্থিতিশক্তিঃ স্বাভাবিক অবস্থা বা অবস্থান পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য কোনো অবস্থায় বা অবস্থানে আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বা স্থিতিশক্তি বলে।
শক্তির সবচেয়ে সাধারণ রূপ হচ্ছে যান্ত্রিক শক্তি,বস্তুর অবস্থান,আকার এবং গতির কারণে যে শক্তি পাওয়া যায় তাকে যান্ত্রিক শক্তি বলে। যান্ত্রিক শক্তি সাধারণত কোনও বস্তুতে গতিশক্তি এবং সম্ভাব্য শক্তির (বিভব শক্তির) যোগফল হিসাবে সংজ্ঞায়িত হয়।
সুতরাং আমরা যান্ত্রিক শক্তির সূত্রটি প্রকাশ করতে পারি:
যান্ত্রিক শক্তি = গতিশক্তি + বিভবশক্তি
আবার আমরা জানি,
গতিশক্তি= ০.৫ × ভর × (বেগ^২)
এবং
বিভবশক্তি= ভর× অভিকর্ষজ ত্বরণ× উচ্চতা
সুতরাং, যান্ত্রিক শক্তি={০.৫ × ভর ×
(বেগ^২)}+(ভর× অভিকর্ষজ ত্বরণ× উচ্চতা)
যান্ত্রিক শক্তির সংরক্ষণশীলতা কী?
প্রতিরোধী বলের (উদাঃ ঘর্ষণ, বায়ু) অনুপস্থিতিতে একটি বন্ধ ব্যবস্থায় বা সিস্টেমে মোট যান্ত্রিক শক্তির পরিমাণ স্থির থাকে। এর অর্থ হল বিভব শক্তি গতিশক্তিতে, অথবা গতিশক্তি বিভবশক্তিতে রূপান্তর হতে পারে তবে শক্তি ধ্বংস হতে পারে না বা হারিয়ে যেতে পারে না। অর্থাৎ মোট শক্তির পরিমান একই থাকে।
বাস্তবে work energy theorem এর একটি রূপ হলো যান্ত্রিক শক্তির নিত্যতার সূত্র।
স্থিতি শক্তির এর জন্য লেখা যায়:
Change in Potential Energy = – Work done by conservative force
uf−ui=−WC
আমরা কাজ ক্ষমতা শক্তি উপপাদ্য হতে পাই:
Wnet=kf−ki
⟹Wext+WN.C+WC=kf−ki
⟹Wext+WN.C=kf−ki−Wc
⟹Wext+WN.C=(kf+uf)−(ki+ui)
যদি বাহির থেকে কোনো বল প্রয়োগ না করা হয় এবং যে তলের উপর কাজ করা হচ্ছে সেখানে ঘর্ষণ না থাকে কিংবা নন কনজারভেটিভ ফোর্স শূন্য হয় তাহলে Wextএবং Wn.c এর মান হবে 0। সুতরাং
0+0=(kf+uf)−(ki+ui)
⟹kf+uf=ki+ui0+0
বাংলাতে বললে: নন কনজারভেটিভ ফোর্স (i.e ঘর্ষণ) ও বাহ্যিক ফোর্স অনুপস্থিত কোনো সিস্টেমের আদি গতিশক্তি ও স্থিতি শক্তির যোগ ফল = শেষে স্থিতি শক্তি ও গতিশক্তি এর যোগ ফল।
যান্ত্রিক শক্তি ও বিদ্যুৎ শক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?
কোন বস্তুর ওপর কার্য করা হলে বস্তুটির মধ্যে যে শক্তি সঞ্চারিত হয় সেটা যান্ত্রিক শক্তি মোট যান্ত্রিক শক্তি = স্থিতি শক্তি বা potential energy + গতিশক্তি বা kinetic enegy. আর যখন কোন চার্জ যুক্ত কণা বা ইলেকট্রন প্রবাহিত হয় তখন বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন হয়।
যান্ত্রিক তরঙ্গকে কি আমরা শক্তি বলতে পারি?
যে কোন তরঙ্গ তৈরী করতে শক্তি প্রয়োজন হয়। শক্তির নিত্যতা সূত্র অনুযায়ী যেহেতু এটি তৈরী করতে শক্তির প্রয়োজন হয়েছে, সে শক্তি হঠাৎ করে উধাও হয়ে যেতে পারে না। সুতরাং তরঙ্গটি যতক্ষণ প্রবাহিত হচ্ছে, এটি সাথে করে শক্তি নিয়েই যাচ্ছে। তরঙ্গ নিজে শক্তি নয়, তবে শক্তির বাহক।
উৎস বলতে বুঝি “কোথা হতে(ইংরজিতে বলা হয় Source)”।আর শক্তির উৎস বলতে বুঝি শক্তি যা হতে/থেকে আসে তাকে….।
যান্ত্রিক শক্তি কাকে বলে?; যান্ত্রিক শক্তি কত প্রকার ও কী কী? গতিশক্তি কাকে বলে?; বিভবশক্তি কাকে বলে?;
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “যান্ত্রিক শক্তি কাকে বলে? যান্ত্রিক শক্তি কত প্রকার ও কি কি?” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।