ধাতু সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. সবচেয়ে হালকা ধাতুর নাম কি?
উত্তর : সবচেয়ে হালকা ধাতুর নাম লিথিয়াম (Li)।
প্রশ্ন-২. মুদ্রা ধাতু কাকে বলে?
উত্তর : যে সমস্ত ধাতু উজ্জ্বল, চকচকে এবং ঐতিহাসিকভাবে যেসব ধাতু দ্বারা মুদ্রা তৈরি করে এদেরকে ক্রয়-বিক্রয় ও অন্যান্য প্রয়োজনে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাদেরকে মুদ্রা ধাতু বলে।
প্রশ্ন-২. ভারী ধাতু কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল ধাতুর আপেক্ষিক গুরুত্ব 5 বা এর চেয়ে বেশি এবং যা ক্ষতিকর তাদেরকে ভারী ধাতু বলে।
প্রশ্ন-৩. ভারী ধাতু কোনগুলো?
উত্তর : ভারী ধাতুগুলো হলো– পারদ, লেড, আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৪. উপধাতু কাকে বলে?
উত্তর : ধাতু এবং অধাতু ছাড়াও এমন কিছু মৌলিক পদার্থ আছে যাদের কিছু ধর্ম ধাতুর মতাে আবার কিছু ধর্ম অধাতুর মতাে, এসব মৌলকে উপধাতু বলে। যেমন- আর্সেনিক, সিলিকন ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৫. ধাতুর বৈশিষ্ট্য কি কি?
উত্তর : ধাতুর বৈশিষ্ট্যগুলো হলো–
- ঘাতসহনীয়তা (ধাতুকে পিটিয়ে যেকোনো আকার দেওয়া যায়)।
- নমনীয়তা (ধাতুকে পিটিয়ে সরু তারে পরিণত করা যায়)।
- উজ্জ্বলতা (ধাতুর বিশেষ দ্যুতি আছে। এরা আলো বিচ্ছুরন করে)।
- পরিবাহিতা (ধাতুসমূহ তাপ ও বিদ্যুৎ সু-পরিবাহী)।
- ধাতব শব্দ (আঘাতে ধাতু টুন টুন শব্দ করে)।
- গলনাংক ও স্ফুটনাংক (ধাতু উচ্চ গলনাংক ও স্ফুটনাংক বিশিষ্ট)।
- ঘনত্ব (ধাতুসমূহের ঘনত্ব অধাতুর তুলনায় বেশি)।
প্রশ্ন-৬. হেমাটাইট কি?
উত্তর : হেমাটাইট হচ্ছে শক্ত দানাদার ও আঁশযুক্ত একটি পদার্থ যা মূলত লোহা ও অক্সিজেনের যৌগ। এর রাসায়নিক নাম আয়রন অক্সাইড।
প্রশ্ন-৭. ঢালাই লোহা কাকে বলে?
উত্তর : পিগ লােহাকে কোক ও সামান্য চুনাপাথর সহযােগে কিউপােলা চুল্লির সাহায্যে পুনরায় গলিয়ে ছাঁচে ঢেলে যে লােহা পাওয়া যায়, তাকে ঢালাই লােহা (Cast iron) বলে।
প্রশ্ন-৮. নোবেল মেটাল (Noble metal) কি? এর উদাহরণ।
উত্তর : যেসব ধাতু সহজে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয় না তাদের নোবেল মেটাল বলে। সোনা, রূপা, প্লাটিনাম ইত্যাদি নোবেল মেটালের উদাহরণ।
প্রশ্ন-৯. নিস্ক্রিয় ধাতু কি?
উত্তর : স্বর্ণ, রৌপকে নিস্ক্রিয় ধাতু বলা হয়। এদেরকে প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া গেলেও তারা প্রায় বিরল। এজন্য এদেরকে অভিজাত ধাতুও বলা হয়।
প্রশ্ন-১০. ডুরালুমিন কি?
উত্তর : ডুরালুমিন একটি সংকর ধাতু, এটি তৈরি হয় তামা, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়ামের মিশ্রণে। এটি অনেক হালকা বলে উড়োজাহাজ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন-১১. ধাতুর সংকরীকরণ কাকে বলে?
উত্তর : দুই বা ততোধিক ধাতুকে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রিত করে নির্দিষ্ট চুল্লিতে প্রয়োজনীয় তাপ ও চাপের মাধ্যমে সংকর তৈরি করার পদ্ধতিকে ধাতুর সংকরীকরণ (Alloying of Matals) বলে।
প্রশ্ন-১২. ধাতু পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : ধাতু পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বলতে বুঝায় খনি থেকে ধাতু আহরণের পরিবর্তে ব্যবহৃত ধাতব সামগ্রীকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী ধাতুতে পরিণত করা।
প্রশ্ন-১৩. গান মেটাল কি?
উত্তর : Gun শব্দের অর্থ হলো বন্দুক। গান মেটাল ৮৮ শতাংশ তামা, ১০ শতাংশ টিন এবং ২ শতাংশ দস্তার সমন্বয়ে গঠিত একটি সংকর ধাতু। মধ্যযুগে কামান তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো বলে এর নাম গান মেটাল করা হয়।
প্রশ্ন-১৪. রীচ এলয় কাকে বলে?
উত্তর : ধাতুকে শক্ত করার উদ্দেশ্যে নিকেল, লােহা, ম্যাঙ্গানিজ, টিটেনিয়বস ইত্যাদি ধাতু নির্দিষ্ট পরিমাণে মিশ্রিত করা হয়। এসব ধাতুকে রীচ এলয় বলে।
প্রশ্ন-১৫. অ্যাসবেসটস কি?
উত্তর : ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের সিলিকেট সমন্বয়ে তৈরি আঁশবিশিষ্ট এক প্রকার অগ্নিনিরোধক খনিজ পদার্থের নাম অ্যাসবেসটস। আগুনের কাজে সম্পৃক্ত শ্রমিকের পোশাক ও দস্তানা তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন-১৬. অবস্থান্তর ধাতু জটিল যৌগ গঠন করে কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : অবস্থান্তর ধাতু জটিল যৌগ গঠন করে। কারণ অবস্থান্তর ধাতু সমূহের বহিঃস্থ শক্তিস্তরে ফাঁকা d- অরবিটাল বিদ্যমান থাকে। এই ফাঁকা d-অরবিটালে অবস্থান্তর ধাতু গুলি লিগ্যান্ড থেকে এক বা একাধিক মুক্ত জোড়া গ্রহণ করতে পারে।
ফলে অবস্থান্তর ধাতুর আয়নের সঙ্গে একাধিক লিগ্যান্ড সন্নিবেশ বন্ধন দ্বারা যুক্ত হয়ে জটিল যৌগ গঠন করে।
প্রশ্ন-১৭. ব্রোঞ্জ কি?
উত্তর : ব্রোঞ্জ বা কাসা হলো এক প্রকারের সংকর ধাতু। এটি ৯০% কপার ও ১০% টিন মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয়। তবে অনেক সময় টিন ছাড়াও এতে দস্তা, ম্যাঙ্গানিজ, অ্যালুমিনিয়াম, নিকেল, প্রভৃতি ধাতুও মিশানো হয়। শোভাবর্ধন সামগ্রী, ভালব, গিয়ার, নাট ইত্যাদি তৈরিতে ব্রোঞ্জ ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন-১৮. ইস্পাত কি?
উত্তর : ইস্পাত হলো লোহা ও কার্বনের একটি সংকর ধাতু। এতে ০.১৫–১.৫% কার্বন ও বাকি অংশ লোহা থাকে। তবে লোহা ও কার্বনের সাথে অনেক ক্ষেত্রে ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম, সিলিকন ইত্যাদি ধাতুও মিশ্রিত থাকে। ইস্পাত সাধারণ লোহা অপেক্ষা অনেক বেশি মজবুত, সহনক্ষম ও টেকসই।
প্রশ্ন-১৯. গ্রুপ-11 এর মৌলসমূহকে মুদ্রা ধাতু বলা হয় কেন?