ওয়াইম্যাক্স কি? ওয়াইম্যাক্স এর প্রকারভেদ, সুবিধা এবং অসুবিধা What is Wi-Max?
WiMAX এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Worldwide Interoperability for Microwave Access। এটি IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (WMAN) প্রটোকল যা ফিক্সড এবং মোবাইল ইন্টারনেটে ব্যবহৃত হয়। WiMAX সিস্টেমের দুটি প্রধান অংশ থাকে।
একটি WiMAX বেস স্টেশন যা ইনডোর ও আউটডোর টাওয়ার নিয়ে গঠিত। অন্যটি এন্টেনাসহ WiMAX রিসিভার, যা কোনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপে সংযুক্ত থাকে। ওয়াইম্যাক্স তারবিহীন সংযোগ সার্ভিস আবার দু’ধরনের হতে পারে । Non-line-of-sight সার্ভিসে ব্যবহার করা হবে lower frequency range (2 GHz to 22 Ghz)। Lower-wavelength transmissions সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে অলিগলি ঘুরে ওয়াইম্যাক্স রিসিভারে (এন্টিনা) পৌছে যাবে।
Line-of-sight সার্ভিসে ব্যবহার করা হবে higher frequency range (66 Ghz)। Higher-wavelength transmissions কোন ত্রুটি ছাড়া একসাথে বেশী ডেটা প্রেরণ করতে সক্ষম এবং ব্যান্ডউইথও বেশি হয়। এধরনের সার্ভিসে টাওয়ার ও এন্টিনার মাঝখানে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারবে না।
অর্থাৎ কোন উঁচু ভবনের ছাদ থেকে যদি ওয়াইম্যাক্স টাওয়ার সরাসরি দেখা যায় তবেই ছাদে এন্টিনা লাগিয়ে এই উচ্চ গতির সার্ভিস নেয়া যাবে। টাওয়ার থেকে পাশের সুউচ্চ ভবনে line-of-sight পদ্ধতিতে সংযোগ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ওয়াইম্যাক্সকে আবারো দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১. ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স
২. মোবাইল ওয়াইম্যাক্স
২০০১ সালের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রযুক্তিটির বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ওয়াইম্যাক্স ফোরাম ওয়াইম্যাক্স নামটি দিয়েছে। ওয়াইম্যাক্স হচ্ছে প্রচলিত কেবল বা ডিএসএল এর একটি বিকল্প প্রযুক্তি যা শেষ মাইল পর্যন্ত তারবিহীন ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
Wi-MAX-এর বৈশিষ্ট্য
- এটি IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (WMAN)
- নেটওয়ার্ক সংস্থাপন ক্যাবলিংয়ের তুলনায় সহজ এবং সুবিধাজনক।
- ব্যান্ডউইথ বা ডেটা ট্রান্সফার রেইট ওয়্যারেড নেটওয়ার্ক বা ক্যাবলিংয়ের তুলনায় বেশি।
- একইসাথে ওয়্যারেড এবং ওয়ালেস উভয়ই নেটওয়ার্কের সুবিধা প্রদান করে।
- কভারেজ এরিয়া সাধারণত ১০ কি.মি. থেকে শুরু করে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড লাইসেন্স বা লাইসেন্সবিহীন উভয়ই হতে পারে।
- অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডের জন্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিতে হয়।
- সংস্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি।
- নেটওয়ার্কের জন্য পর্যাপ্ত ইলেকট্রিক্যাল সাপোর্ট থাকতে হয়।
- বিদ্যুৎ ব্যয় তুলনামূলক বেশি।
- নেটওয়ার্ক interference বা signal noise কম।
- ফুল ডুপ্লেক্সিং মোড ব্যবহার করা হয়।
- একই সাথে মাল্টিফাংশনাল সুবিধা প্রদান করে।
- কোয়ালিটি অব সার্ভিসের ( QoS ) নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে।
- মিডিয়া অ্যাক্সেস কন্ট্রোলের জন্য Request-Grant প্রটোকল থাকে।
- চ্যানেল নয়েজ (signal-to-noise ratio-SNR) সর্বোচ্চ 7dB (decibel)।
- চ্যানেল ব্যান্ডউইথ 256 সাব-ক্যারিয়ারের জন্য 1.25 MHz থেকে 28 MHz পর্যন্ত হতে পারে।
- ২৫৬ চ্যানেলের OFDM অর্থাৎ SOFDMA (Scalable OFDMA) টেকনোলজি এবং MIMO (multiple input and multiple-output) টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়।
- Line-of-sight (LOS) এর ক্ষেত্রে ফ্রিকুয়েন্সির সীমানা 2 GHz থেকে 11 GHZ। তবে non – line – of – sight ( NLOS ) এর ক্ষেত্রে 10 GHz থেকে 66 GHz হতে পারে।
- অপেক্ষাকৃত অধিক মানসম্মত ও অধিক নিরাপত্তা সুবিধা সংবলিত ওয়্যারলেস প্রটোকল।
- বর্তমানে WiMAX ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানকারী সর্বাধুনিক প্রযুক্তি।
- শতাধিক ব্যবহারকারী একক বেস স্টেশন ব্যবহার করতে পারে।
- নতুন ব্যবহারকারী অধিক দ্রুত যোগাযোগ করতে পারে।
- ডেটা আদান-প্রদান, টেলিযোগাযোগ এবং আইপি টিভি ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।
- বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসের মাধ্যমে শহর এবং গ্রামে পোর্টেবল মোবাইল ব্রড ব্যান্ড সংযোগ প্রদান করে।
- ডেটা ট্রান্সমিশন রেট ৪০ থেকে ৭০ mbps পাওয়া যায়।
- WiMAX এর কাভারেজ এরিয়া ১০ কি.মি. থেকে ৬০ কি.মি.পর্যন্ত হতে পারে।
- দূরত্ব বেশি হলে একাধিক বেস স্টেশনের প্রয়োজন হয়।
- খারাপ আবহাওয়া (যেমন- ঝড়, বৃষ্টি) তে সিগনাল সমস্যা দেখা দেয়।
- অন্যান্য ওয়্যারলেস যন্ত্রপাতিতে বাধার সৃষ্টি করে।
- বিভিন্ন ধরনের ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহৃত হয়।
- WiMAX এ অধিক বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয় বিধায় বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।
- অধিক ব্যয়বহুল ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি।
- ডেটা ট্রান্সফার রেট অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল বা স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভের তুলনায় কম।
- সরকারের অনুমোদন নিয়ে WiMAX সার্ভিস প্রদানের লাইসেন্স নিতে হয়।