যেসব যৌগের অণুতে কার্বক্সিল গ্রুপ (–COOH) থাকে সেগুলিকে কার্বক্সিলিক এসিড বলা হয়। একটি কার্বনিল (> C = O) এবং একটি হাইড্রক্সিল গ্রুপের (−OH) সমন্বয়ে একটি কার্বক্সিল গ্রুপ (–COOH) গঠিত হয়। জৈব এসিডের অণুতে উপস্থিত কার্বক্সিল গ্রুপের সংখ্যানুযায়ী কার্বক্সিলিক এসিডকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যেমন- মনোকার্বক্সিলিক এসিড, ডাইকার্বক্সিলিক এসিড, ট্রাইকার্বক্সিলিক এসিড।
- মনোকার্বক্সিলিক এসিড : যে সকল এসিডের অণুতে একটি মাত্র –COOH মূলক থাকে তাদের মনোকার্বক্সিলিক এসিড বলে।
- ডাইকার্বক্সিলিক এসিড : যে সকল এসিডের অণুতে দুটি –COOH মূলক থাকে তাদের ডাইকার্বক্সিলিক এসিড বলে।
- ট্রাইকার্বক্সিলিক এসিড : যে সকল এসিডের অণুতে দু’এর অধিক সংখ্যক –COOH মূলক থাকে তাদের ট্রাইকার্বক্সিলিক এসিড বলে।
কার্বক্সিলিক এসিডের প্রথম তিনটি সদস্য ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত বর্ণহীন তরল, 4টি থেকে 9টি কার্বন পরমাণুযুক্ত কার্বক্সিলিক এসিডগুলি দুর্গন্ধযুক্ত তৈলাক্ত পদার্থ এবং 10টি বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক কার্বন পরমাণু যুক্ত অ্যাসিডগুলো গন্ধহীন কঠিন পদার্থ। কার্বক্সিলিক এসিডের প্রথম চারটি সদস্য পানিতে দ্রবণীয় কারণ এদের অণুগুলো পানির সঙ্গে আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করে বলে পানিতে সহজেই দ্রবীভূত হয়। অ্যাসিডের আণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রাব্যতা হ্রাস পায়। কার্বক্সিলিক এসিড পোলার এবং আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনের মাধ্যমে বলয়াকার ডাইমার উৎপন্ন করে। তাই সমআণবিক ভর বিশিষ্ট অ্যালকোহল অপেক্ষা কার্বক্সিলিক এসিডের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি।
কার্বক্সিলিক এসিডের সাধারণ প্রস্তুতি
- অ্যালকোহল এবং অ্যালডিহাইডের জারণ প্রক্রিয়া : প্রাইমারি অ্যালকোহল সরাসরি কিংবা সংশ্লিষ্ট অ্যালডিহাইডকে জারিত করে কার্বক্সিলিক এসিডে পরিণত করা হয়।
- নাইট্রাইলের আর্দ্র বিশ্লেষণ : নাইট্রাইল যৌগকে লঘু খনিজ এসিড (HCl) বা ক্ষার দ্রবণ সহযোগে উত্তপ্ত করলে কার্বক্সিলিক এসিড ও অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়।
- গ্রিগনার্ড বিকারকের কার্বনেশন : শুষ্ক ইথারে দ্রবীভূত গ্রিগনার্ড বিকারকে কঠিন অথবা শুষ্ক CO2 গ্যাস প্রবাহিত করলে কার্বক্সিলিক এসিড উৎপন্ন হয়। গ্রিগনার্ড বিকারক প্রথমে CO2 এর সাথে বিক্রিয়া করে একটি অন্তর্বর্তী জটিল যৌগ গঠন করে। যাকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে কার্বক্সিলিক এসিড পাওয়া যায়।