আজ আমরা জানবো বর্ণ কাকে বলে, কতো প্রকার ও কি কি?
বর্ণ কাকে বলে
বর্ণ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো letter. এটি মূলত একধরনের চিন্হ বা প্রতীক। যার সাহায্য নিয়ে আমরা আমাদের মনের ভাবমূর্তি লিখিত আকারে প্রকাশ করে থাকি।
অর্থ্যাৎ, মনের ভাব সূক্ষ ও সুন্দরভাবে লিখে প্রকাশ করার জন্য যেই সাংকেতিক চিন্হ বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকেই বর্ণ বলে।
বর্ণ এর প্রকারভেদ
বর্ণ প্রধানত দুই প্রকার। যথা-
১. স্বর বর্ণ
২. ব্যঞ্জন বর্ণ
১. স্বর বর্ণ কাকে বলে
যে বর্ণ অন্য বর্ণের কোনোরূপ কোনো সাহায্য ছাড়াই নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে সেগুলোকে স্বরবর্ণ বলে । স্বরবর্ণ মোট ১১ টি।যথা-
অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ, এ, ঐ, ও, ঔ।
স্বরবর্ণের মাত্রা
বর্ণের উপর যে রেখা বা টান থাকে তাকেই মাত্রা (-) বলে ।
মাত্রা তিন প্রকারের হয়ে থাকে। যথা :
১) পূর্ণমাত্রা। উদাহরন- অ, আ,ই,ঈ,উ,ঊ( মোট ৬ টি)
২) অর্ধমাত্রা। উদাহরন- ঋ ( মোট ১ টি)
৩) মাত্রা ছাড়া। উদাহরন- এ ঐ ও ঔ ( মোট ৪ টি)
২. ব্যঞ্জন বর্ণ কাকে বলে
যে বর্ণ অন্য কোনো বর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে না তাকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে । ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ টি । যথা-
ক খ গ ঘ ঙ
চ ছ জ ঝ ঞ
ট ঠ ড ঢ ণ
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
য র ল শ ষ
স হ ড় ঢ় য়
ত্ ং ঃ
ব্যঞ্জন বর্ণ এর মাত্রা
এটি মূলত ৪ প্রকার। যথা :
১) পূর্ণমাত্রা- ক ঘ চ ছ জ ঝ ট ঠ ড ঢ ম য র ল ষ স হ ত দ ন ফ ব ভ ড় ঢ় য় ( মোট ২৬ টি)
২) অর্ধমাত্রা- খ গ ণ থ ধ প শ ( মোট ৭ টি)
৩) মাত্রাছাড়া- ঙ ঞ ৎ ং ঃ ঁ( মোট ৬ টি)
৪) ফোঁটাযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ – র ড় ঢ় য় ঁ ( মোট ৫ টি)
প্রতিটি স্বরবর্ণ অথবা কতিপয় ব্যাঞ্জনবর্ণ শব্দের সাথে ২ ভাবে যুক্ত হতে পারে। যথা-
১. পূর্নরূপে
২. সংক্ষিপ্ত রূপে।
১. পূর্ণরুপ বর্ণ কাকে বলে-
শব্দের সাথে যখন বর্ণগুলো স্বাধীন ভাবে বসে তখন পূর্ণরূপে বসে। যেমন- আম, আতাফল ইত্যাদি। এখানে- আ,ম,ত,ফ,ল এগুলো স্বাধীনভাবে শব্দে বসেছে।
২. সংক্ষিপ্ত রূপ বর্ণ কাকে বলে-
এক্ষেত্রে বর্ণগুলো অন্য ব্যাঞ্জনবর্ণের সাথে যুক্ত হয়ে তারপর বসে। আর এখানে ২ ভাবে বর্ণ যুক্ত হতে পারে। যেমন- কার, ফলা
স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় ’কার” ।
স্বরবর্ণের কার চিহ্ন ১০টি । যথা :
আ -কার (া ) : আমরা , বাবা,চাচা, ঢাকা
কার (ৃ): কৃষক, তৃণ, পৃথিবী
ই-কার ( ি) : তিনি ,চিনি, মিনি, মিমি
এ- কার ( ে ) : চেয়ার , টেবিল,ছেলে, মেয়ে
ঈ- কার ( ী ): শশী , সীমান্ত।
ঐ-কার ( ৈ ) : তৈরি ,বৈরী, হৈচৈ,মৈ।
উ- কার ( ু) : কুকুর , পুকুর, দুপুর, ।
ও -কার ( ো ) : খোকা, পোকা , বোকা ।
ঊ- কার (ূ) : ভূত, মূল্য , সূচি
ঔ-কার ( ৌ) :নৌকা, মৌসুমী ,পৌষ
ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় ফলা।
বাংলায় ফলা চিহ্ন মোট ৭ টি
য-ফলা (্য) : ব্যাঙ,খ্যাতি,অসহ্য ।
ন-ফলা (ন /ন): বিভিন্ন, সযত্ন, রত্ন
ব-ফলা (্ব) : পরিপক্ব,বিশ্ব , অশ্ব ।
ণ-ফলা (ণ):পূর্বাহ্ণ অপরাহ্ণ
ম-ফলা (ম): পদ্ম,সম্মান , স্মরণ
ল-ফলা (ল) :ক্লান্ত, ম্লান , অম্ল
র -ফলা (্র): প্রমাণ,শ্রান্ত।
আজ এই পর্যন্তই। আশা করি বর্ণ সম্পর্কে আজ পরিপূর্ণ ধারনা দিতে পেরেছি।