শাসন বিভাগ কি | শাসন বিভাগের কার্যাবলী

আধুনিক রাষ্ট্রে সরকারের যাবতীয় কার্যাবলি তিনটি বিভাগের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। তার মধ্যে শাসন বিভাগ অন্যতম। বর্তমানে শাসন বিভাগ শাসন সংক্রান্ত কাজ ছাড়াও বহুবিধ কার্যসম্পাদন করে থাকে।

সাধারণভাবে বলা যায়, সরকারের যে বিভাগ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করে তাকে শাসন বিভাগ বলে।

ব্যাপক অর্থেঃ গ্রামা চৌকিদার, পুলিশ কনেস্টবল হতে আরম্ভ করে সকল প্রশাসনিক কর্মচারী, ম্যাজিস্ট্রেট প্রভৃতিসহ মন্ত্রিপরিষদ এবং রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত শাসন বিভাগের অন্তর্গত।

সংকীর্ণ অর্থেঃ শাসন বিভাগ বলতে কেবলমাত্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর মন্ত্রিসভা অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও তার মন্ত্রিসভাকে নিয়ে শাসন বিভাগ গঠিত বলা চলে।

সুতরাং, শাসন বিভাগ বলতে সাধারণত শাসন সংক্রান্ত বিষয় পরিচালনারত সকল কর্মচারীকে বুঝায়, যারা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে শাসন সম্বন্ধীয় বিষয়ে জড়িত।

শাসন বিভাগের কার্যাবলি (Functions of the Executive) আধুনিক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগ যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করে সেগুলো নিম্নে আলোচনা কর হল

১। শাসন সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগের প্রধান কাজ আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা এবং আইন শৃঙ্খলা ও জনজীবনের নিরাপত্তা বিধান করা।

২। কূটনৈতিক বা পররাষ্ট্র সংক্রান্ত কাজ : বর্তমান কালে কূটনৈতিক কাজ পরিচালনা করা শাসন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিরোধ নিষ্পত্তি, সামরিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বন্ধুত্বের ভিত্তি স্থাপন প্রভৃতি শাসন বিভাগের পররাষ্ট্র বিষয়ক দক্ষতা এবং দূরদর্শিতার উপরে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের সুনাম ও সম্মান নির্ভরশীল।

৩। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে চলে। বিদেশি আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করা শাসন বিভাগের কাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এ লক্ষ্যে শাসন বিভাগ আলাপ- আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে অথবা প্রয়োজনবোধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে।

৪। বিচার সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগকে কিছু কিছু বিচার বিভাগীয় কার্য করতে হয়। এটি বিচারকগণকে নিয়োগ করে। চরম শাস্তি মওকুফ করা বা হ্রাসের ক্ষমতাও রাষ্ট্রপ্রধানের থাকে।

৫। আইন সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগ আইন সংক্রান্ত কাজও করে থাকে। মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারে রাষ্ট্রপ্রধান আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে পারে, স্থগিত রাখতে বা পরিষদ ভেঙেও দিতে পারেন।

এ সরকারের শাসন বিভাগ আইন পরিষদে আইন প্রণয়ন বিষয়ে নেতৃত্ব দান করে থাকে। তা ছাড়া জরুরি আইন বা অধ্যাদেশও জারি করতে পারে ।

৬। অর্থনৈতিক কাজঃ শাসন বিভাগই সরকারের অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণ করে থাকে। এটিই সরকারের বার্ষিক বাজেট আইন পরিষদে পেশ করে।

বিভিন্ন বিভাগের খরচের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা, কর, শুল্ক ও অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণসংক্রান্ত

নীতিনির্ধারণ করাও শাসন বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ

তাই শাসন বিভাগকে জনগণের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যরক্ষণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ডাক ও তার বিভাগ পরিচালনা, শ্রমিক কল্য ল্যাণমূলক কাজ : আধুনিক জনকল্যাণকর রাষ্ট্রে শাসন বিভাগ উত্তরোত্তর জনকল্যাণের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে।

প্রভৃতি কার্যে ব্যাপৃত থাকতে হয়।

 

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “শাসন বিভাগ কি | শাসন বিভাগের কার্যাবলী” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts