ডমিনো তত্ত্বটি ছিল স্নায়ু যুদ্ধের একটি নীতি যার মাধ্যমে পুঁজিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পৃথিবীর অন্যন্য দেশে কমিউনিস্ট সরকারের সম্প্রসারণ রোধ করতে চেষ্টা করেছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, মার্কিন সরকার ভিয়েতনাম যুদ্ধে জড়িত থাকার এবং দক্ষিণ ভিয়েতনামে একটি অ-কমিউনিস্ট সরকারের সমর্থন দেওয়ার জন্য ডমিনো তত্ত্বটি ব্যবহার করেছিল।
পঞ্চাশের দশকে ইন্দোচীনে যখন সমাজতন্ত্রীরা একের পর এক রাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন হচ্ছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্র এই ‘ডমিনো তত্ত্ব’র কথা প্রচার করে। এর উদ্দেশ্য ছিল একটাই, কমিউনিস্ট ঠেকাতে আমেরিকার সামরিক হস্তক্ষেপ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার ১৯৫৪ সালের ৭ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোচিনে কমিউনিজমের কথা উল্লেখ করার সময় তত্ত্বটি বর্ণনা করেছিলেন।আইজেনহাওয়ার ব্যাখ্যা করেছিলেন যে যদি ভিয়েতনামে তাদের পতন হয়, তবে লাওস, বার্মা, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য অঞ্চলেরও পতন হবে এবং শীঘ্রই কমিউনিজম ভারতের সীমানায় পৌঁছে যাবে। এমনকি জাপানেরও পতন হতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেছিলেন।
কমিউনিস্ট উত্তর ভিয়েতনাম সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনের সমর্থনে দক্ষিণ ভিয়েতনামে আক্রমণ শুরু করলে, প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার ডমিনো তত্ত্বের মাধ্যমে অস্ত্র ও অর্থনৈতিক সাহায্য পাঠিয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনামকে সমর্থন করা শুরু করেন।
ডোমিনো তত্ত্ব অনুসারে, একটি দেশ কমিউনিস্ট শাসনে চলে গেলে এর আশে পাশের পুরো অঞ্চলটিতেই কমিউনিস্ট শাসনের গোড়াপত্তন হওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাই আমেরিকা সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে হলেও দক্ষিণ ভিয়েতনাম টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল।
ডমিনো তত্ত্বে বলা হয়েছে, কোনো একটি রাষ্ট্রে যদি কমিউনিস্ট বা সমাজতন্ত্রীরা ক্ষমতাসীন হয়, তাহলে পাশের রাষ্ট্রটিও সমাজতন্ত্রীদের দখলে চলে যাবে। যদিও, লাওস এবং কম্বোডিয়া বাদে, কমিউনিজম সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে ব্যর্থ হয়।