Modal Ad Example
Blog

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কীভাবে কাজ করে?

1 min read

আপনি কি কখনো চাঁদে গিয়েছেন? বা সমুদ্রের মাঝখানে গিয়ে সাঁতার কেটেছেন? মনে হয় এসব আপনি করেননি। এখন আপনার কাছে অসম্ভব মনে হচ্ছে। তবে আমি যদি বলি এসব আপনারা করতে পারবেন? সত্যি বলতে এখন এগুলো খুব সহজেই করা যায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে যে কোন কাল্পনিক পরিবেশ তৈরি করে, সে পরিবেশে থাকার অনুভব নিতে পারি। কিন্তু অনেকেই জানে না ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? এটি কিভাবে কাজ? করে চলুন তাহলে এসব বিষয়ে জেনে নেই।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? What is Virtual Reality

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইংরেজি হচ্ছে Virtual Reality. এটি Virtual এবং Reality দুটো শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। Virtual শব্দের অর্থ “সামনে” আর Reality শব্দের অর্থ “বাস্তবতা”। তবে এ বাস্তবতা শুধু মানুষ দ্বারা অনুভব করা যায়।

অর্থাৎ, Virtual Reality শব্দের অর্থ হচ্ছে “সামনের বাস্তবতা “। একে এক ধরনের নির্দিষ্ট বাস্তবিক অনুকরণ বলা যেতে পারে।

প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞাননির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা কিংবা কল্পবাস্তবতা বলে। এটি মূলত কম্পিউটার প্রযুক্তি ও সিমুলেশন তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ত্রিমাত্রিক ইমেজ তৈরির মাধ্যমে অতি অসম্ভব কাজও সম্ভব করা যায়। কল্পনার পাখায় ভর করে ইচ্ছে করলে যেকোনো অসম্ভব কাজও করা সম্ভব হয়। কল্পনার পাখায় ভর করে ইচ্ছে করলে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতম অঞ্চলে ঘুরে আসা যায়, মানুষের মস্তিষ্কের নিউরন সংযোগের উপর দিয়ে হাঁটা এবং জুরাসিক পার্কের সেই অতিকায় ডাইনোসরের তারাও খাওয়া যায়।

এটি 3D এবং 5D প্রযুক্তি ব্যবহার করে কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করা এমন একটি বিশ্ব যার মাধ্যমে আপনি ফিজিক্যাল এবং মেন্টালিটি দু মাধ্যমেই অনুভব করতে পারবেন।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান | Elements of VR

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো হলো –

  • রিয়েলিটি ইঞ্জিন বা সিমুলেটর (Reality Engine / Simulator)
  • ইনপুট ও আউটপুট সেন্সর ডিভাইস (Input & Output Sensor Device)
  • হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted Display)
  • ডেটা গ্লোভ (Data Gloves)
  • একটি পূর্ণাঙ্গ বডি স্যুইট (Body Suit)
  • অডিও ডিভাইস (Audio Device)
  • ব্যবহারকারী (User)

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধাপ | Phase of Virtual Reality

  • এর প্রথম ধাপ হলো কম্পিউটারে তৈরি ত্রিমাত্রিক ছবি দিয়ে ভার্চুয়াল পরিমাণ বানানো হয়।
  • দ্বিতীয়ত ব্যবহারকারীর গতিবিধি অনুসরণ করে ত্রিমাত্রিক ছবি অনুযায়ী পরিবর্তন করতে হবে।
  • এরপর ডান দিকে তাকালে ডান দিকের ছবি দেখাবে। গেইমে শত্রু যদি সমানে আসতে থাকে তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী হাত নেড়ে তার সঙ্গে লড়াই করতে হবে। এই নাড়াচড়াগুলো অনুসরণ করার জন্য সেন্সর ব্যবহার করা হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কীভাবে কাজ করে? How does Virtual Reality Work?

কতগুলো যন্ত্রের সাহায্যে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কাজ করে। এখানে বিশেষ ধরণের চশমা বা হেলমেট পরা হয়। যেখানে দুটি চোখে দুটি ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে ত্রিমাত্রিক অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়। অনেক সময় একটি স্কিনে ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়।

এ প্রক্রিয়াগুলো সম্পূর্ণ করার জন্য মূলত কম্পিউটারের সাহায্যে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক ত্রি-মাত্রিক চিত্রায়ণ করা হয়। তাই বলা হয় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হচ্ছে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরি করা এমন কৃত্রিম পরিবেশ যা উপস্থাপন করা হলে ব্যবহারকারীদের কাছে বাস্তব পরিবেশ বলে মনে হয়।

আর এ পরিবেশ তৈরির জন্য শক্তিশালী কম্পিউটারে সংবেদনশীল গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে হয়। সাধারণ গ্রাফিক্স আর ভার্চুয়াল গ্রাফিক্সের মধ্যে তফাত হলো – এখানে শব্দ ও স্পর্শকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যবহারকারীরা যা দেখে এবং স্পর্শ করে বাস্তবের কাছাকাছি বুঝানোর জন্য চশমা ও হেলমেট ছাড়াও অনেক সময় গ্লাভস, বুট, স্যুট ব্যবহার করা হয়।

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারে গ্রাফিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে দূর থেকে পরিচালনা করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।তাছাড়া এর মাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক শব্দও সৃষ্টি করা হয়, যাতে মনে হয় শব্দগুলো বিশেষ স্থান থেকে উৎসারিত হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিহাস | History of Virtual Reality

১৮৩৮ সালে সর্বপ্রথম Stereoscope আবিষ্কার করা হয়েছিল যেখানে একটি ইমেজকে প্রজেক্ট করার জন্য টুইন মিরর ব্যবহার করা হয়েছিল।১৯৮০ দর্শকের মাঝের দিকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল।

“Morton Heiling” ১৯৫৭ সালে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেন।

Virtual reality প্রযুক্তির উদ্ভাবন (invent) করা হয়েছিল, ১৯৫৭ সালে “Morton Heilig” এর দ্বারা। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে সংক্ষেপে VR বলা হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রকারভেদ | Classifications of Virtual Reality

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মূলত পাঁচ প্রকার। যথাঃ

  • Fully-immersive Virtual Reality
  • Semi-immersive Virtual Reality
  • Non-immersive Virtual Reality
  • Augmented Reality
  • Collaborative VR

Fully-immersive Virtual Reality

ভার্চুয়াল জগতে সম্পূর্ণ বাস্তব অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য Fully-immersive ভার্চুয়াল টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। এতে মনে হবে আপনি সম্পূর্ণ একটি অন্য জগতে আছেন। আপনার মনে হবে আপনি শারীরিকভাবে সে ভার্চুয়াল জগতে উপস্থিত আছেন এবং শারীরিকভাবে অনুভব করতে পারবেন।

মজার বিষয় হচ্ছে ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে যা যা ঘটবে তার সবটাই সত্য বলে মনে হবে। তবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এপ্রকার অনেক এক্সপেন্সিভ।

Fully-immersive Virtual Reality প্রযুক্তির মাধ্যমে কাল্পনিক পরিবেশ উপভোগ করার জন্য টেকনিকেল হ্যামলেট, গ্লাভস এবং কিছু বডি কানেক্টরস ব্যবহার করা হয়। বডি কানেক্টরসগুলো শক্তিশালী কম্পিউটারের সাথে যুক্ত হয়ে থাকে।

আপনার শারীরিকভাবে করা প্রত্যেকটি মুভমেন্ট এবং চোখের সাধারণ পিটপিট করাটাও শনাক্ত করে সে গুলোকে ভার্চুয়াল জগতে স্থাপন করা হয়। এজন্য আপনি সম্পূর্ণভাবে ভার্চুয়াল জগতে আছেন বলে মনে করবেন।

Semi-immersive Virtual Reality

এটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এমন প্রকার যাতে Non-immersive এবং Fully-immersive Virtual Reality র মিশ্রণ ঘটে। এটি এমন ধরনের ভার্চুয়াল জগত তৈরি করে যেখানে আপনি একটি কম্পিউটারের স্ক্রিন বা VR বক্স ও হ্যান্ডসেট ব্যবহার করছেন। এখানে আপনাকে কোন রকম শারীরিক গতিবিধি ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। এখানে শুধু ভার্চুয়াল এক্সপেরিয়েন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল জগতের মজা নিতে পারবেন।

Non-immersive Virtual Reality

এমন কিছু ভার্চুয়াল এক্সপেরিয়েন্স গুলোকে Non-immersive virtual reality বলা হয় যেগুলোতে আপনি সফটওয়্যার এর ভিতরে থাকা ক্যারেক্টারস এবং এক্টিভিটিস গুলোকে কন্ট্রোল করতে পারবেন। তবে এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ক্ষেত্রে আপনি সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল জগতের সাথে যুক্ত থাকছেন না।

যেমন – মনে করুন আপনি একটি হাই গ্রাফিক এবং Realistic কম্পিউটার গেইম খেলছেন। এক্ষেত্রে আপনি একটি গেইমের কথা ভাবতে পারেন। হতে পারে সেটা Call of Duty বা Tomb Rider.

এ গেইমের মধ্যে আপনি গেমিং ক্যারেক্টারগুলোকে নিজের মনে করে কন্ট্রোল করতে পারবেন। যেগুলোর নিজস্ব একটা আলাদা এনিমেশন এবং গঠন রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি যদিও একটি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডের সাথে যুক্ত আছেন, তবে সোজাসুজি ভাবে সেখানে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু আপনি নন।

প্রত্যেকটি কাজ, পরিবেশ এবং বৈশিষ্ট্যগুলো গেইমের ভিতরে থাকা ক্যারেক্টারগুলো সাথে ইন্টারাক্ট করছে। কিন্তু আপনার সাথে নয়।

প্রতিটি গেমিং ডিভাইস যেমন – প্লে স্টেশন, এক্সবক্স কম্পিউটার গুলো Non- immersive virtual reality র অনুভব প্রদান করছে।

Augmented Reality

মনে করেন, আপনি আপনার মোবাইলে নিজের ঘরের রুম গুলো দেখতে পারছেন দএবং একটি কার্টুন ক্যারেক্টার আপনার রুমে রেখে দিলেন। এবার আপনি আপনার ফোনের স্ক্রিনে থাকা ঘরের রুমের সে কার্টুন ক্যারেক্টারটি দেখতে পাবেন তবে সেটা বাস্তবে থাকবে না।

Augmented Reality হনোর যেখানে একটি অংশ ক্যারেক্টার জিনিস আছে বলে মনে হবে কিন্তু সেটা বাস্তবে থাকবে না। এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার কাজে ব্যবহার করেন।

যেমন – আপনি আপনার ঘরের জন্য ফার্নিচার কিনতে যাবেন, তখন এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি টেকনোলজি ব্যবহার করে ফার্নিচারগুলো আপনার ঘরের ভেতরে থাকার অনুভব করিয়ে দেখানো হবে। এতে একজন গ্রাহক হিসেবে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কোন ফার্নিচারগুলো আপনার ঘরে ভালো দেখাবে।

Collaborative VR

এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটিটি অনেক উন্নত মানের এবং আধুনিক। প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা এই ভার্চুয়াল জগতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকেরা যুক্ত হয়ে একই ভার্চুয়াল পরিবেশে আসতে পারে। এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে লোকদের মধ্যে সহযোগিতা করা।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার | Uses of Virtual Reality

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিভিন্ন কাজে এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। আর কিছু হল –

  • শিশু শিক্ষায়
  • ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ এবং প্র্যাকটিস
  • গেমিং
  • কার ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ
  • বিমান চালনার প্রশিক্ষণ
  • সেনাবাহিনীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ
  • ব্যবসায় বাণিজ্যে
  • মহাশূন্য অভিযানে
  • গেইমস তৈরি
  • নগর উন্নয়নে
  • মিলিটারি ট্রেনিং এবং প্রশিক্ষণ
  • স্পোর্টস
  • শিক্ষা ক্ষেত্রে
  • সেফটি ট্রেনিং
  • মনোরঞ্জনের ক্ষেত্রে
  • জব ট্রেনিং
  • সেলস ট্রেনিং
  • ভার্চুয়াল মিটিং
  • আর্কিটেকচার বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন

এছাড়া আরো অনেক উদ্দেশ্যে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির লাভ ও সুবিধা | Advantages of Virtual Reality

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কিছু লাভ ও সুবিধা হলঃ

  • শিক্ষা ও ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে অনেক লাভ হচ্ছে।
  • যেকোন কাল্পনিক জগতে গিয়ে সে পরিবেশের অনুভব নেওয়া সম্ভব।
  • গেমিং এর ক্ষেত্রে অনেক লাভজনক
  • ট্রেনিং ও প্রশিক্ষণের সময় সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকা যায়

 ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অসুবিধা | Disadvantages of Virtual Reality

  • চড়া দাম এবং জটিলতা বেশি এবং এ প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামও খুবই মূল্যবান ও ব্যয়বহুল।
  • চোখের ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে পারে।
  • স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
  • কল্পনার জগতে বিচরণ
  • মনুষ্যত্বহীনতা ইত্যাদি।
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x