উপসর্গ ও অনুসর্গের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল–উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থ নেই এবং স্বাধীন পদ হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না। বিপরীতে, অনুসর্গের নিজস্ব অর্থ রয়েছে এবং বাক্যে স্বাধীন পদ রূপে আবার কখনো বিভক্তির ন্যায় বাক্যে বসে অন্য পদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে।
যে সব অব্যয়সূচক শব্দাংশ স্বাধীন পদ হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না, কিন্তু অন্য শব্দের আগে বসে শব্দটির অর্থের পরিবর্তন সাধন করে, তাকে উপসর্গ বলে। উপসর্গগুলোর নিজস্ব কোন অর্থবাচকতা নেই, তবে কোন শব্দের আগে যুক্ত হলে এটি নতুন শব্দ তৈরি করে। বিভিন্ন উপসর্গের মধ্যে রয়েছে যেমন, প্র,পরা, পরি, অনু, নি, অ, অনা, অব, বি, ফুল ইত্যাদি।
যে সব অব্যয়সূচক শব্দ কখনো স্বাধীন পদ রূপে আবার কখনো বিভক্তির ন্যায় বাক্যে বসে অন্য পদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে. সেই সব অব্যয়সূচক শব্দকে অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলে। বিভিন্ন অনুসর্গের মধ্যে রয়েছে যেমন, প্রতি, বিনা, সনে, দ্বারা, দিয়া, হইতে, থেকে ইত্যাদি। এগুলো কখনো প্রাতিপদিকের পরে বসে আবার কখনো ‘কে’ এবং ‘র’ বিভক্তিযুক্ত শব্দের পরে বরে।
১. যেসব অব্যয়সূচক শব্দের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই, কিন্তু অন্য শব্দের আগে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ সৃষ্টি করে, তাকে উপসর্গ বলে। বিপরীতে, যেসব অব্যয়সূচক শব্দ বিশেষ্য ও সর্বনামের পরে বসে বিভক্তির ন্যয় কাজ করে, সেগুলোকে অনুসর্গ বলে।
২. উপসর্গ নামবাচক বা কৃদন্ত শব্দের আগে বসে। পক্ষান্তরে, অনুসর্গ বিশেষ্য ও সর্বনাম শব্দের পরে বসে।
৩. উপসর্গ শব্দের সাথে যুক্ত হয়। অন্যদিকে, অনুসর্গ স্বাধীনভাবে বাক্যে বসে।
৪. উপসর্গ পৃথকভাবে বাক্যে ব্যবহূত হতে পারে না। পক্ষান্তরে, অনুসর্গ পৃথকভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হয়।
৫. উপসর্গের কোন অর্থ নেই। বিপরীতে, অনুসর্গের নিজস্ব অর্থ আছে।
৬. উপসর্গ মূল শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে। অন্যদিকে, অনুসর্গ মূল শব্দের অর্থ ঠিক রাখে।
৭. উপসর্গের কাজ নতুন শব্দ গঠন করা। পক্ষান্তরে, অনুসর্গের কাজ বাক্যে অন্যন্য পদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা।
৮. উপসর্গ বিভক্তির কাজ করে না। বিপরীতে, অনুসর্গ বিভক্তির কাজ করে।
৯. উপসর্গের উদাহরণ- আ + মরণ = আমরণ; এখানে ”আ” অব্যয়টি উপসর্গ হিসেবে বসেছে। অনুসর্গের উদাহরণ- শত্রুর সহিত সন্ধি চাই না; এখানে ”সহিত” অব্যয়টি অনুসর্গ হিসেবে বাক্যে বসেছে।