বার্গার কি
বার্গার বা হ্যামবার্গার হচ্ছে একপ্রকার স্যান্ডউইচ সদৃশ খাবার যা দুটি রুটির মাঝখানে রান্না করা মাংসের কিমা দিয়ে বানানো হয়।
কিমায় সাধারনত গরুর মাংস ব্যবহার করা হলেও অঞ্চলভেদে টার্কি, শূকর বা বিভিন্ন রকম মাংসের মিশ্রনে তৈরী করা হয়।
তবে আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বার্গারে কিমায় সাধারনত গরু ও মুরগির মাংস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এছাড়া কোনো কোনো স্থানে খাসি অর্থ্যাৎ ছাগলের মাংস ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং বানের প্রধান উপকরন হিসেবে থাকে গমের আটা।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgyO0CFJgAq-nJ0CXJnx26ERbk1vow2kLO3-rvZqZuJVL2K-Cf59-_EUPO5QDs6xALW5MLfANiUkeAu3AINfRJ3nXhQ3y7tFxY8aH8NCmSxCE-jJ9YpoEf4THctfZTuXlJiAjQlwhCaMmgGDVlvwXpzgrUGx5umlEZ6Yvl3EEhQItwFRBdB9EJNttrWogQ/s16000/dcheeseburger_1232-503-300x200.jpg)
এছাড়া রুটি বা বানের বদলে সাধারণ দু-আড় পাউরুটির ব্যবহারও চোখে পড়ার মত।
মাংস,ভিন্ন স্বাদ এবং অন্যান্য উপকরণের সহজলভ্যতা ও প্রাচুর্যতার উপর নির্ভর করে ভিন্নভাবে তৈরী করা হয় হ্যামবার্গার(Hamburger) বা বার্গার.
এছাড়াও হ্যামবার্গার তৈরীতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে শসা, টমেটো, লেটুস পাতা,মেয়োনিজ,সস আরো অনেক কিছুই।
ড্রাগন ফল ও এর উপকারিতা
ইতিহাসঃ
হ্যামবার্গার (Hamburger) শব্দটির প্রচলন শুরু হয় জার্মানির দ্বিতীয় শহর হ্যামবুর্গে।জার্মান ভাষায় বুর্গ শব্দের অর্থ দূর্গ বা কেল্লা এবং বুর্গার বলতে বুঝানো হয় বুর্গ শহর থেকে আগত।
তাই হ্যামবার্গ বলতে বুঝায় হ্যামবার্গ থেকে আগত কোনো বস্তু।
হ্যামবার্গার (Hamburger) রেসিপির উদ্ভাবন শুরু হয়েছিল তার্তারদের হাত ধরে।
এরা মধ্যযুগের মধ্য এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে আক্রমণকারী একদল যাযাবর মানুষ যারা কাটা গোমাংস কাঁচা খেয়ে ফেলতো।
সেসব দিনগুলো স্টেক তার্তারে নামেও পরিচিত। যখন তার্তাররা জার্মানিতে খাবারটি প্রচলন করল তখন তারা স্থানীয় মশলা অর্থাৎ নিজেদের তৈরী মশলা দিয়ে গরুর মাংস মাখাতো।তারপর সেগুলোকে ভেজে ফেলতো।
তুমুল জনপ্রিয়তা প্রাপ্তির পর খাবারটি হামবুর্গ স্টেক নামে অত্যাধিক পরিচিতি লাভ করে।গবেষকদের ধারণা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জার্মান অভিবাসীরার তাদের সাথে হামবুর্গ স্টেকের রেসিপিটি নিয়ে এসেছিল।
বার্গার/ হ্যামবার্গারের জনপ্রিয়তাঃ
ক্যানের উইচিতে অবস্থিত হোয়াইট ক্যাসেল হ্যামবার্গার বিক্রয়কারী প্রাচীন রেস্তোরাগুলোর মধ্যে একটি।যেটি 1921 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হ্যামবার্গারের জনপ্রিয়তা নিউক্লিয়ার বোমার মতো বিস্ফোরিত হয়েছিল। তখন বার্গার হয়ে উঠে মেন্যু কার্ডের প্রধান ডিশ।
সান বার্নার্ডিনো এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় হ্যামবার্গার(Hamburger) স্ট্যান্ড হিসাবে যাত্রা শুরু করা এমসিডোনাল্ডস বিশ্বজুড়ে হ্যামবার্গার(Hamburger) ছড়িয়ে দিয়েছে বেগতিক হারে।
বর্তমানে ১১৯ টি দেশের প্রায় ২৬,০০০ এরও বেশি রেস্তোরাঁসহ বিশ্বের বৃহত্তম সব রেস্তোঁরা বিলিয়ন বিলিয়ন হ্যামবার্গার(Hamburger) সরবরাহ করছে ক্রেতাদের মাঝে।
চিজ বার্গার(Cheese burger):
চিজবার্গার হচ্ছে এক প্রকার হ্যামবার্গার, যা বার্গারের অন্যান্য উপকরণের সাথে চিজের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়।
প্রচলিতভাবে চিজের টুকরোটি মাংসের প্যাটির উপরে দেওয়া হয়, তবে বার্গারটির কাঠামো, উপাদান এবং মিশ্রণে ভিন্নতা থাকতে পারে। চিজ সাধারণত পরিবেশন করার অল্প সময় আগে রান্না করা হ্যামবার্গার প্যাটির উপর দেওয়া হয়, যা খুব সহজে চিজ কে গলিয়ে দেয়।
অন্যান্য হ্যামবার্গারের(Hamburger) মতো চিজবার্গারে(cheese burger) টপিংস হিসাবে লেটুস, টমেটো, পেঁয়াজ, চাটনি, মেয়োনেজ, কেচাপ, সরিষা বা অন্যান্য উপকরণ থাকতে পারে।
ফাস্টফুড রেস্তোঁরাগুলিতে সাধারণত প্রক্রিয়াজাতকৃত চিজ ব্যবহার করা হয়, তবে অন্যকোনো গলনশীল চিজও ব্যবহার করা যেতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসাবে রয়েছে চেডার, সুইস, মোজারেলা, ব্লু চিজ এবং মন্টেরি জ্যাক/পিপার জ্যাক।
বার্গার খেলে শরীরে যেসব রোগ হতে পারেঃ
১. এক কামড় বার্গার খাওয়ার ১৫ মিনিট পরেই শরীরে শর্করার ধকল পড়বে । এই জন্য ‘ইনসুলিন নিঃসরণ হবে।
কয়েক ঘণ্টা পর ক্ষুধা লাগবে। ফলে ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
২.‘স্যাচুরেইটেড’ চর্বিতে ভরপুর খাবার হওয়ায় ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তাদের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়।
এতে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয় যা পরবর্তী সময়ে হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
৩. অতিরিক্ত সোডিয়ামও রক্ত সঞ্চালনকারী শিরা ও ধমনীর ক্ষতি করে।
তাই বার্গার বা যে কোনো ধরনের ‘জাঙ্কফুড’ খাওয়ার পূর্বে একবার ভেবে দেখা আবশ্যক।