চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি এবং এর সূত্র সহ ব্যাখ্যা

দুটি দ্রব্য একে অপরের পরিবর্তক বা পরিপূরক হতে পারে। দ্রব্যের পরিবর্তক ও পরিপূরক ধারণার উপর ভিত্তি করে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার সৃষ্টি হয়েছে।

আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা

অর্থনীতিতে প্রতিটি দ্রব্য পরিবর্তক বা পরিপূরক রূপে অবস্থান করে। অবশ্য দ্রব্য স্বাধীনও হতে পারে। তবে সাধারণত কোন দ্রব্যের চাহিদা নির্ভর করে ঐ দ্রব্যের নিজস্ব দাম এবং অপরাপর পরিবর্তক বা পরিপূরক দ্রব্যের দামের উপর। তাই পরিবর্তক ও পরিপূরক দ্রব্যের দামের পরিবর্তনের ফলে কোন দ্রব্যের চাহিদা প্রভাবিত হয়। পরিবর্তক ও পরিপূরক দ্রব্যের দামের শতকরা পরিবর্তনের ফলে বিবেচনাধীন দ্রব্যের চাহিদার পরিমাণে যে পরিবর্তন ঘটে তাকে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা (Cross elasticity of demand) বলে। চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতাকে নিম্নলিখিত সূত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। যদি x ও y দুটি পরিবর্তক বা পরিপূরক দ্রব্য হয় তাহলে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা হবে,

চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার সূত্র

আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার ধারণাটি নিচে উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হল

মনে করি, x এর দাম ১০ টাকা এবং y এর দাম ২০ টাকা। ভোক্তা ২০ একক x দ্রব্য এবং ৩০ একক y দ্রব্য ক্রয় করে। এরপর x এর দাম স্থির রেখে y এর দাম ৪০ টাকা হলে ভোক্তা ৫০ একক x দ্রব্য এবং ২৫ এককy দ্রব্য ক্রয় করে। তাহলে ভোক্তার x দ্রব্যের আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা হবে,

চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার উদাহরণ

আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে। সাধারণত দুটি দ্রব্য পরিবর্তক হলে তাদের চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা ধনাত্মক হবে। অর্থাৎ, Exy > 0 হবে। কারণ, এদের একটির মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে অন্যটির চাহিদা বৃদ্ধি বা হ্রাস পাবে। অন্যদিকে, দুটি দ্রব্য পরিপূরক হলে একটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে অন্য দ্রব্যটির চাহিদা হ্রাস বা বৃদ্ধি পাবে। ফলে পরিপূরক দ্রব্যের ক্ষেত্রে আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা ঋণাত্মক হবে। অর্থাৎ, Exy < 0 হবে।

উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, আয় স্থিতিস্থাপকতা ও আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। কিন্তু তা সত্ত্বেও উভয়ই চাহিদা বিশ্লেষণের আলাদা পদ্ধতি মাত্র।