শীতের সকাল রচনা ভূমিকা:
বাংলাদেশ ঋতু বৈচিত্রের দেশ ।এদেশ দুই মাস অন্তর অন্তর ঋতুর বদলায় । শীতকালে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ঋতু । পৌষ ও মা ঘ দুমাস শীতকাল । সব ঋতুর মধ্যে ঋতুর উপস্থিতি আমরা সহজেই বুঝতে পারি শীতে ঠান্ডা বাতাসের আগমন থেকে । এটা আমাদের দেশ সবচেয়ে শীতলতম ঋতু ।
শীতকালের বর্ণনা:
শীতকালে খুব ঠান্ডা পরে । সূর্যের তাপে প্রখরতা কমে যায় । রাতে কুয়াশা পরে । সকালে শিশির ভেজা ঘাস খুব সুন্দর দেখায় । এ সময় ঠান্ডা বাতাস বইতে থাকে । গরম কাপড় সা রা শীতকালে বাইরে বেড়ানো যায়না । শীতের সকাল গ্রামে ছেলেমেয়েরা ঘর শুকনো কাঠ ইত্যাদি জ্বালিয়ে শীতের তীব্রতা থেকে নিজেদের রক্ষা করে । বয়স্করা বাড়ির আঙ্গিনায় রোদ পোহায় । শীতকালে প্রকৃতির মধ্যে রিক্ত ভাবে বিরাজ করে । গাছের পাতা ঝরে যায় । এ সময় আমাদের দেশে বৃষ্টিপাত হয় না উত্তর পূর্ব দিক থেকে শীতল বায়ু প্রবাহিত হয় । এ সময় দিনের তুলনায় রাত অনেক দীর্ঘ হয় ।
শীতকালের অবদান :
শীতকালে লোকজন সাধারণত কর্ম স্বাস্থ্যবান হয় । তারা বেশি বেশি খেতে পারে এবং বেশি বেশি কাজ করতে পারে । শীতকালে বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি পাওয়া যায় । এসময় আমন ধান কাটা হয় । লোকজন পিঠা পায়েস নানা দিন খাবার তৈরি করে । খেজুরের রস শীতকালের গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণীয় খাদ্য । রাস্তা মাঠ ঘাট শুকনা থাকে বলে লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে একই স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতাযাত করতে পারে । কমলালেবু শীতকালের ফল তাছাড়া শীতকালে অনেক শাকসবজি ভালো মানের পাওয়া যায় ।
শীতকালের অসুবিধা :
শীতকালে গরিব লোকেরা বেশি কষ্ট ভোগ করে । তারা গরম পোশাক কিনতে পারে না বলে শীতের জ্বালায় কাঁপতে থাকে । তারা শীতের জ্বালা অনুভব করে । তারা আগুন জ্বালিয়ে রোদ পোহায় নিজেদের গরম রাখতে চেষ্টা করে । তারা অনেক কষ্টে শীতকাল পার করে ।
শীতের সকালের প্রকৃতি ও প্রাণীর অবস্থা :
শীতের সকালে প্রকৃতি ও প্রাণীর মধ্যে আমেজ লক্ষ্য করা যায় । শীতের সময় দিন ছোট হয় এবং রাত বড় হয় । সকাল যেন হয় না । মানুষ জীবজন্তু পাক পা খালি শীতের বেলায় সূর্যের প্রত্যাশায় প্রহর গুনতে থাকে । কুয়াশার আচ্ছন্ন হয়ে থাকে চারদিক । শিশির ঝরতে থাকে অবিরাম । কেবল মানুষই নয় প্রাণীরাও বাইরে বেরোতে চায় না । আরষ্ট হয়ে থাকে শীতের প্রকোপ ।
গ্রামের প্রকৃতি শীতের সকাল :
শীতের সকালের প্রকৃতি আনন্দ গ্রামীণ জীবনে খুঁজে পাওয়া যায় । বাংলা গ্রামগুলোতে শীতের সকাল বেশ মনোরম হয় । গ্রামের মাঠে মাঠে শীতের প্রভাব বেশ চোখে পড়ে । গ্রামের মাঠে শীতের প্রভাব পড়ে । শীতের কুয়াশা ভেদ করে নিজ নিজ গৃহপালিত প্রাণীদের নিয়ে বের হয় গ্রামের কর্ম মানুষেরা । সূর্যের দেখা পাওয়া মাত্রই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রোদ পোহাতে শুরু করে । গ্রামের মানুষেরা খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীতকালের উষ্ণতা খুঁজে ফেরে । আগুনের পাশে বসে তারা তাপ পোহাতে থাকে । তবে গ্রামীণ জীবনে দারিদ্র্যের উপস্থিতি অস্বীকার করা যায় না । বস্ত্র হবে দরিদ্র পরিবার অনেক মানুষের শীতের নাকাল অবস্থা হয় । গ্রামের অনেক প্রবীণ ব্যক্তি প্রাণহানি ঘটে থাকে শীতের প্রকোপে । শীতের সকালে গ্রামের সবচেয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত হল পিঠাপুলি খাওয়ার মুহূর্ত । গাছে গাছে খেজুর রসে হারিয়ে যুলিয়ে রাখতে দেখা যায় । খেজুরের রস দিয়ে নানা রকম পিঠা তৈরি করা হয় ।
শহরের জীবন শীতের সকাল :
শহরের জীবনী শীতের সকালের রূপ ভিন্ন হয়ে থাকে । গ্রামীণ জীবনে আবেদন এখানে পাওয়া যায় না । ইট কাঠ পাথরের শহরের শীতের সকালের আমেজ একরকম আলাদা । শহরে দেখা যায় বারান্দায় বসে রোদ পোহানোর দৃশ্য কিংবা গরম চায়ের বেহালা হাতে নিয়ে খবরের কাগজ পড়া দৃশ্য । ল্যাব জড়ানো কর্মব্যস্ত মানুষ নিদৃষ্ট সময় পরে আরো একটু ঘুমে নিতে চায় । কিন্তু জীবিকার টানে তাকে বিছানা থেকে উঠতে হয় তারপর নিজ নিজ অফিসে যায় । শীতের সকালের শিশির বিন্দু শহরে তেমন একটা দেখা যায় না । খেজুরের রস কিংবা নানান স্বাদের পিঠা শুক্রান এখানে খুঁজে পাওয়া বিরল । এখানে কেবল কাকের কর্কশ আওয়াজ । যানবাহনের শব্দ এবং মানুষের কোলাহল মিশ্রিত যান্ত্রিক জীবনে দেখা যায় ।
শীতের সকালের নদনদী :
আমাদের দেশ শীতকালে নদীগুলোতে যেমন পানি থাকে না । তখন নদী থেকে প্রচুর মাছ ধরা যায় । এজন্য শীতের খুব সকালে জেলেরা মাছ ধরতি নদীতে চলে যায় । জেলে নৌকাগুলো অল্প দূর হলেও কুয়াশার ধুমধামে জানে দেখা যায় না । নৌকা লঞ্চ ফেরি ইত্যাদি ভালোমতো চলাচল করতে পারে না । তখন নদীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসে হাড় কাঁপানো শীত লাগে ।
শীতের সকালের সুখ দুখ:
শীতের সকাল নিয়ে লেপ-কম্বলের ভিতর আরাম শুয়ে থাকার মতো সুখ আর কিছুতেই পাওয়া যায় না । শীতের সকালে বিভিন্ন পিঠা দিয়ে নাস্তা করা হয় । নানারকম শীতের সবজি প্রভৃতি মানুষের মধ্যে সুখানুভূতির সৃষ্টি করে । অন্যদিকে কনকনে শীতে যাদের গায়ে দেওয়ার মতো শীতবস্ত্র নেই । যারা রাস্তার পাশে হিমশীতল বাতাসে শুয়ে থাকে তাদের জন্য শীতের সকাল অনেক কষ্টের হয় ।
শীতের সকালের অসুবিধা :
শীতের সকালে হাড় কাঁপুনি শীত পড়লে গ্রামের মানুষ বিষণ্নতায় ভোগে । মানুষের কাজের অদম্য থেমে যায় । আরাম আয়েশ করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করে । গরিব মানুষগুলো গরম কাপড়ের অভাব কষ্ট করে ।
যানবাহনের চলাচল এর অসুবিধা:
শীতের রাতে সকালে পরিবেশ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে । ফলে দূর থেকে স্পষ্ট কিছু দেখা যায় না । মনে হয় কুয়াশা সাদা পর্দা ছড়া সামনে কিছুই নেই । এসময় রাস্তাঘাট যানবাহন চলাচলের ফলে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে ।
উপসংহার শীতের সকাল রচনা:
শীতের সকালে শিশির ভেজা সোনালী রোদের স্পর্শ কার না ভালো লাগে । সুবিধা-অসুবিধা দুইয়ে মিলে শীতের সকাল । আমাদের জীবনে অতি বছর দুই মাস সময় অন্যরকম ভালোলাগার অনুভূতি আমাদের হৃদয়কে পরিপূর্ণ করে তোলে । শীতকাল আমাদের এই অন্যরকম ঋতু । শীতের সকালের মিষ্টি রোদের উষ্ণ পরশ সত্যিই উপভোগ্য ।তাই বন্ধুরা শীতের সকালের রচনা আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম আশা করি সবাই শীতের সকালের রোদ পড়ে অনেক ভালো লাগবে এবং আপনাদের উপকৃত হবে ।
যারা শীতের সকাল রচনা অনুসন্ধান করতে ছিলে তাদের জন্য আশা করি আজকের আলোচনাটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ ধরনের রচনা পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করতে হবে। শীতের সকাল রচনা টি ভাল লাগলে এই পোস্টটি তোমার ফেসবুক পেজে অথবা প্রোফাইলে শেয়ার করতে পারো। শীতের সকাল রচনা সম্পর্কে কোন মতামত থাকলে কমেন্টে জানাতে পারো।