Health

হার্টের রোগীর খাবার তালিকা

1 min read

AIIMS-এর কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ সন্দীপ মিশ্র হৃদরোগের রোগীদের ডায়েটরি পরিবর্তন সম্পর্কে এক বিস্তারিত অন্তর্দৃষ্টি এখানে। ডায়েটরি অভ্যাস পরিবর্তন করা আপনার জীবনযাত্রার অন্যতম প্রধান পরিবর্তন যা আপনি সম্প্রতি হৃদরোগের শিকার হয়ে থাকলে তা অবশ্যই করা দরকার। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াি যে কেবল আপনার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করবে তা না তবে হৃদপিণ্ডের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য জটিলতাগুলি রোধ করতে অনেক রকমভাবে সহায়তা করবে।

রক্তে কোলেস্টেরল পরিমাণ বেড়ে গেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের আশঙ্কা বেড়ে যায়। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে পারলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।

ণিজ খাদ্যে যেমন— ডিমের কুসুম ও মাংসে কোলেস্টেরল বেশি থাকে।

উদ্ভিদজাতীয় খাবারে কোলেস্টেরল থাকে না। হার্ট অ্যাটাক হলে হার্টের কোনো একটি রক্তনালিতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রক্তনালির গায়ে চর্বি জমার কারণে হার্টের রক্তনালি সরু হয়ে যায়। সরু নালিতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে আপনার আহার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে নিচের ১০ খাবার- সম্পর্কে জেনে নিন।

হার্টের রোগীদের কিছু কিছু খাবার নিষেধ রয়েছে। যেমনঃ আইসক্রিম, কেক, পুডিং,, মিষ্টি গুড় এবং চিনিজাতীয় খাবার গুলো কে এড়িয়ে চলুন ইত্যাদি । হার্টের রোগীদের মিষ্টি এড়িয়ে চলাই ভালো। লিভারের সমস্যা হতে পারে কিডনির সমস্যা হতে পারে ডায়াবেটিসের সমস্যা হতে পারে ইত্যাদি এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

রেড মিটঃ

গবেষণায় দেখা গেছে, রেডমিট ভেঙে কারনিটাইন নামে একটি যৌগ দেহে তৈরি হয়, যা ট্রিমাথাইলেমাইন এন অক্সাইড নিঃসরণ করে। আর এথেরোসক্লেরোসিস বা আর্টারিতে ব্লক সৃষ্টিতে এই ট্রিমাথাইলেঅতিমাত্রায় রেডমিট হৃদরোগের কারণ-এটা নতুন তথ্য নয়। তবে সেটা যে কেবল রেডমিটের ফ্যাট বা কোলেস্টেরলের কারণে তা কিন্তু নয়, সাম্প্রতিকমাইনের একটা সক্রিয় ভূমিকা আছে।

অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবারঃ

অতিরিক্ত  তেলে ভাজা খাবার  ও ভাজাপোড়া খাবার  মুখরোচক খাবার ইত্যাদি এসব থেকে এড়িয়ে চলুন সবসময়ের জন্য। আপনি অসুস্থ বা  সুস্থ যেমনি থাকে না কেন এই খাবারগুলো কে এড়িয়ে চলার অভ্যাস করুন এই খাবারগুলো আসলে আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

 বাটার ডালডা ঘি মাখনঃ

বাটার ডালডা ঘি মাখন এই খাবারগুলো আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে তাই এই খাবারগুলো কে এড়িয়ে চলুন। এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে। এই খাবারগুলো খুবই মজাদার কিন্তু এই খাবারগুলো যত মজা তার চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক।  তাই এই খাবারগুলো থেকে এড়িয়ে চলুন।

ডিমের কুসুমঃ

আমরা এমন কিছু রোগের জন্য ডিম খেয়ে থাকে যে ডিম খেলে সুস্থ হয়ে যায় কিন্তু যাদের হার্টের সমস্যা তারা ডিমের কুসুম কে এড়িয়ে চলুন।  কারণ ডিমের কুসুমের রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যালোরি তাই হার্টের রোগীরা ডিমের কুসুম একদমই খাবেন না। আর একজন হৃদরোগীর দিনে ২০০ মিগ্রা-র বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ করা উচিত নয়।

ফাস্টফুডঃ

আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন জার্নালের একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে একবার নিয়মিতভাবে যারা ফাস্ট ফুড খায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের মারা যাওয়ার প্রবণতা অন্যদের চেয়ে ২০% বেশি। যারা একের বেশি অর্থাৎ দুই/তিন বার খায়, তাদের হার আরো বেশি- ৫০%। শুধু তা-ই নয়, সপ্তাহে যারা চার বা তার চেয়েও বেশি বার ফাস্ট ফুড খায়, তাদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৮০% এরও বেশি।

চিংড়িঃ

হার্টের রোগীরা চিংড়ি মাছ কে এড়িয়ে চলুন। চিংড়ি: হৃদরোগীদের জন্যে আরেকটি বর্জনীয় খাবার হলো চিংড়ি। দেখা গেছে, ক্যালরি এবং ফ্যাট কম থাকলেও চিংড়িতে আছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল। সাড়ে তিন আউন্স ওজনের একপিস রান্না করা স্যামন মাছে যেখানে মাত্র ৬২ মিগ্রা কোলেস্টেরল, সেখানে একই পরিমাণ চিংড়িমাছে পাওয়া গেছে ১৮৯ মিগ্রা কোলেস্টেরল।

মাছের মাথা ও ডিমঃ

রক্তের লিপিড প্রোফাইল বাড়িয়ে দেয় যে উপাদানগুলো, সেই এলডিএল বা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের উৎস হচ্ছে মাছের মাথা বা মাছের ডিম।

হাড়ের মজ্জা,কলিজা, মগজঃ

কলিজা, মগজ, হাড়ের মজ্জা- এই অংশগুলোতে বেশি পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে। তাই যারা হৃদরোগী তাদের কলিজা, মগজ বা নেহারি জাতীয় খাবার বর্জন করা দরকার।

লবণের পরিমাণ কমাতে হবেঃ

হার্টের রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাই লবণ কে এড়িয়ে চলুন। লবণের সোডিয়াম সরাসরি রক্তচাপ বাড়িয়ে তোলে এর জন্য হৃদয় রোগীদের পক্ষে লবণ অতিরিক্ত ভালো নয়। বাইরে কোথাও গেলে সোডিয়াম বা লবণ কমে যাওয়ার রান্নার প্রস্তুতি অনুরোধ স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলো বেঁচে নেই। যেমনঃ বার্গার সিটস ইত্যাদি। বরঞ্চ যে খাবার গুলোতে লবণ অতিরিক্ত রয়েছে সে খাবার গুলো এড়িয়ে চলুন।

আপনার ডায়েট থেকে ঘি বাদ দিনঃ

রোজকার রান্নায় ভারতে বনস্পতি ঘি এবং দেশি ঘি ব্যবহার খুব সাধারণ। তবে এগুলি উভয়ই হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকারক। বনস্পতি ঘিতে ট্রান্স ফ্যাট থাকে যা দেহে অপকারী কোলেস্টেরল (LDL) এর মাত্রা বাড়ায়, যার ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়াও এটি শরীরে উপকারী কোলেস্টেরল (HDL) এর মাত্রাও কমিয়ে দেয়। দেশি ঘিতে সম্পৃক্ত ফ্যাট থাকে যা আবার অপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়।

সবুজ শাক-সবজি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ ফল আরও বেশি করে খানঃ

আপনি স্যালাড, সবুজ শাকসবজি, শাকের মতো, এবং কমলার মতো ফাইবার সমৃদ্ধ ফলের সাথে বেশিক্ষণ ধরে রান্না করা খাবার বদল করতে পারেন। এগুলি ভিটামিন K এর একটি ভাল উৎস, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ধমনীগুলির কার্যকারিতা উন্নত করে, যার ফলে হৃদপিণ্ড সুস্থ ও সবল হয়। এছাড়াও এগুলিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x