অন্যান্য সময়ে থেকে গর্ভকালীন সময়ে অনেক খাবার খেতে হয় কারণ মা ও শিশুর দুজনের খাবারের প্রয়োজন। মাজা খাবে তার থেকে গর্ভের শিশুর পুষ্টি পায়। হাভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ গর্ভবতী নারীদের জন্য হার্ভার্ড হেলথি ইটিং প্লেট নামে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে লাল মাংস সীমিত পরিমাণে এবং প্রসেসড মিট এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
রিফাইন্ড শস্য দিয়ে তৈরি সাদা পাউরুটি ও সাদা চালের ভাত এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আরো কিছু খাবার রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলতে হবে।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য আরেকটি সবজি সজিনা ক্ষতিকর বলে বিবেচিত। কারন, সজিনা একটি পুষ্টিকর খাবার হলেও এতে থাকা উপাদান ‘আলফা সিটেস্টেরল’ গর্ভবতী মায়েদের গর্ভপাত ঘটাতে পারে। তাই সজিনা আপনার খুব প্রিয় সবজি হলেও গর্ভকালীন সজিনা খাওয়ার ঝুঁকি না নেয়াই উচিত। – একইভাবে মধু পুষ্টিকর এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করলেও মধু গর্ভবতী মায়েদের জন্য খাওয়া নিরাপদ নয়। কারণ, মধু ক্লস্ট্রডিয়াম স্পোর দ্বারা দূষিত থাকতে পারে যা ভ্রুণের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
কাঁচা ডিম স্যালমোনেলা টাইফি দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। সুতরাং, গর্ভকালীন ডিম খুব ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে না হলে টাইফয়েড হবার ঝুঁকি থাকে। সেসাথে, কাঁচা দুধের তৈরি অর্থাৎ অপাস্তুরিত দুধের তৈরি যে কোনো খাবার লিস্টেরিয়া, ই-কোলায়, স্যালমোনেলা বা ক্যামফাইলো ব্যাক্টেরিয়া বহন করে যা বিভিন্ন ধরনের ফুড পয়জনিং ঘটাতে পারে। সুতরাং, গর্ভবতী মায়েরা দুধ খাওয়ার সময় খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে খাবেন।
কাঁচা ডিমঃ
গর্ভকালীন অবস্থায় কাঁচা ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ কাঁচা ডিমে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। গর্ভকালীন অবস্থায় ডিম ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।
কলিজার তৈরি খাবারঃ
লিভারে রেটিনোল থাকে যা একটি প্রাণিজ ভিটামিন এ। এর অতিরিক্ততা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
কাঁচা ও আদা কাঁচা পেঁপেঃ
আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে কাঁচা ও আদা কাঁচা পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। গর্ভকালীন মায়েরা কাঁচা পেঁপে থেকে একদমই নিরাপদে থাকুন। কাঁচা পেঁপে খুবই মারাত্মক যা আপনার বাচ্চার ক্ষতি করতে পারে।
অপাস্তুরিত দুধঃ
অপাস্তুরিত দুধ বা কাঁচা দুধে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই ভালো করে না ফুটিয়ে দুধ পান করা যাবেনা। অপাস্তুরিত দুধ দিয়ে তৈরি খাবার যেমন- নরম পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ক্যাফেইনঃ
চা, কফি ইত্যাদিতে ক্যাফেইন থাকে। দৈনিক ২০০ গ্রামের বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করা ঠিক নয়। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে কম ওজনের শিশু জন্ম গ্রহণ করে। মিসক্যারেজের মত ঘটনাও ঘটতে পারে।
অর্ধসিদ্ধ মাংসঃ
অর্ধসিদ্ধ মাংসে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। প্যাকেটজাত মাংস যেমন- সসেজ খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে।
সামুদ্রিক মাছঃ
সামুদ্রিক মাছ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু অধিক পরিমাণে খেলে গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়। কারণ সামুদ্রিক মাছে পারদ জাতীয় পদার্থ থাকে।
না ধোয়া ফল এবং সবজি কোন সন্দেহ নেইঃ
যে গর্ভাবস্থায় আপনার এবং আপনার সন্তানের জন্য ফল এবং সবজি অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান। কিন্তু আপনি শুনে অবাক হবেন যে বিশ্বের প্রায় 78% মানুষ না ধোয়া ফল এবং সবজি খেয়ে ফেলে। না ধোয়া ফল এবং সবজিগুলির খোসাগুলিতে শুধু ক্ষতিকারক কীটনাশক ও হার্বিসাইডই থাকতে পারে তাই নয়, সেগুলি টক্সোপ্লাজমা গন্ডি এবং লিস্টেরিয়ার মতো মারাত্মক প্যাথোজেনদেরও বাসস্থান হতে পারে। স্প্রাউট, লেটুস এবং বাঁধাকপির মতো না ধোয়া কাঁচা শাকসবজি বিশেষ করে এই সময় এড়ানো উচিত।
গাজরঃ
আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে গাজর খাওয়া ছেড়ে দিন। গর্ভকালীন মায়েদের গাজর খুবই ক্ষতিকারক আপনার গর্বের শিশুকে মারাত্মক বিপদে ফেলবে। গাজর শিশুর জন্য অনেক ঝুঁকি তাই আপনি গর্ভকালীন অবস্থায় গাজর একদমই খাবেন না।
আনারসঃ
আনারস খুবই মারাত্মক গর্ভকালীন মায়েদের জন্য। গর্ভকালীন মায়েরা কখনো ভুলেও আনারস খাবেন না যা আপনার বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
সকালেঃ
সকালে অনেক গর্ভবতী নারীরই বমি বমি ভাব হয় এবং খেতে ইচ্ছে করেনা। সেক্ষেত্রে ভারী খাবার না খেয়ে হালকা চা (গ্রিনটি)ও বিস্কিট খেয়ে নিতে পারেন। এর বেশ খানিকটা পরেই ২ টি রুটি ও সবজি খেতে পারেন। সাথে একটি ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া ভালো। বেলা ১০ টা/ ১১ টায় ১ গ্লাস ননী ছাড়া দুধ বা ফল বা ফলের জুস ও বাদাম খেতে পারেন।
দুপুরে ঃ
দুপুরে ১ বাটি ভাতের সাথে মাছ বা মাংস, সবজির তরকারী, শাক, ডাল এবং তাজা ফল ও সবজির সালাদ। খাওয়ার শেষে খেতে পারেন দই। বিকালে ঃ
ভাঁজা-পোড়া খাবার না খেয়ে ঘরে তৈরি কোন স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স বা কেক বা বাদাম বা মটরশুঁটি সিদ্ধ খেতে পারেন। ফল বা ১ গ্লাস ফলের জুস খেতে পারেন।
রাতে ঃ
রাতের খাবার দুপুরের মতোই হবে। তবে শাক রাতে না খাওয়াই ভালো। বেশি করে সবজির তরকারী খেতে পারেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস ননী মুক্ত দুধ পান করতে ভুলবেন না।
আপনি যখন গর্ভবতী হবে ঠিক তখন চিকিৎসকরা আপনাকে পরামর্শ দিবে তিনটে খাবার নিষিদ্ধ করার জন্য যেমনটা আনারস পেঁপে গাজর ইত্যাদি যেসব খাবার থেকে বিরত থাকুন এই খাবারগুলো আপনার গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। ইত্যাদি যেসব খাবার থেকে বিরত থাকুন এই খাবারগুলো আপনার গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি গর্ভের বাচ্চা কে সুস্থ রাখার জন্য এই খাবার গুলো এড়িয়ে চলুন।