পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় ঘরোয়া উপায়ে অশ্ব বা পাইলস ভালো করার উপায়| Ways to make horses or piles better in a homely way প্রিয় বন্ধুগণ Advancedtips24 এর পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহুর অশেষ রহমতে আপনারা ভালো আছেন। আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে নিয়ে আসলাম পাইলস রোগের লক্ষণ, পাইলস রোগ হলে করণীয়, পাইলস অপারেশনে কত টাকা লাগে, এবং পাইলস রোগের চিকিৎসা আশা করি আপনাদের অনেক উপকার হবে আমাদের দেওয়া সঠিক তথ্যটি থেকে পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় ।
পাইলস রোগের লক্ষণ
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়- (পাইলস) বা হেমোরয়েড (বাংলায় অর্শ্ব বা গেজ)- এর নামকরন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা রয়েছে। তবে নাম যাই হোক না কেন, পাইলস হচ্ছে মলদ্বারের ভেতরের আবরনী, তার রক্ত নালী ও অন্যান্য মাংশ পেশীর সমন্বয়ে গঠিত একটি কুশন বা গদির ন্যায় তুলতুলে নরম অংশ। এটি মলদ্বারের ভেতরেই থাকে। কিন্তু যখন রোগ হিসাবে প্রকাশ পায় তখন ঝুলে বাইরে বের হয়ে আসতে পারে।
পাইলস/গেজ রোগ কেন হয়
বহুবিধ কারনে পাইলস এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। দীর্ঘ সময় টয়লেট এ বসে থাকা এবং চাপ প্রয়োগ করে টয়লেট করা, বিশেষ করেনদীর্ঘমেয়াদী কোষ্টকাঠিন্য।
- প্যান এ টয়লেট করা।
- বংশানুক্রমিক ভাবেও এ রোগ ছড়ায়।
- ঘন ঘন পতলা পায়খানা হওয়া।
- রক্ত নালীর মধ্যে কপাটিকা (ভাল্ব) না থাকা।
- গর্ভকালীন অবস্থা।
পাইলস রোগের লক্ষণ সমূহ
- টয়লেটে তাজা রক্ত যাওয়া।
- মলত্যাগের সময় নরম আবরনী ঝুলে বাইরে চলে আসা।
- ব্যাথা- সাধারণত বাইরে এসে আটকে গেলে অথবা ভেতরে রক্তক্ষরণ হলে।
- চুলকানি হওয়া।
- আম (মিউকাস) জাতীয় নিঃসরন।
পাইলস রোগের করণীয় করনীয়
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় – পাইলস এর হাতুরে চিকিৎসার ফলে মলদ্বারের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে, এমনকি মলদ্বার বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তাই পাইলস এর লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে এর চিকিৎসা নেওয়া উচিৎ। পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় শুরুতেই চিকিৎসা নিলে জটিলতা কম হয় এবং ভাল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য প্রথমেই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক রোগ নির্নয় করানো উচিৎ। সঠিক রোগ নির্নয় সঠিক চিকিৎসার পূর্বশর্ত।
পাইলস রোগের চিকিৎসা চিকিৎসা
- পাইলস এর পর্যায় এর উপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে।
- ১ম পর্যায়ঃ সাধারণত ঔষধ অথবা থাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই ভালো খাকা যায়।
- ২য় পর্যায়ঃ রিং লাইগেশন, ইনজেকশন, সার্জারী।
- ৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ঃ সার্জারী।
পাইলস সার্জারী
খুবই ভাল সার্জারী সম্ভব। কোন ধরনের দৃশ্যমান কাটাছেড়া ছাড়াই মেশিনের মাধ্যমে পাইলস সার্জারী সম্ভব। একে “লংগো” ( LONGO) অপারেশন বলাহয়। এর রেজাল্ট ও ভালো। আগে পাইলস সার্জারীর পর দেড় থেকে দুই মাস লাগতো ঘা শুকাতে, এখন এসবের কোন ঝামেলাই নাই। অপারেশনের পর রোগী দ্রুত সেরে উঠে এবং কাজে যোগ দিতে পারেন। সার্জারির পর ক্ষতস্থান পরিষ্কার রাখতে হবে। যেসব খাবার পায়খানা শক্ত করে তা বর্জন করতে হবে। পাইলস অপারেশনে কত খরচ হয়।বাংলাদেশে পাইলস অপারেশন করতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় অর্শ সারানোর ওষুধ নেই, বরং বদলে ফেলুন খাদ্যাভ্যাস।লাইফস্টাইল এবং খদ্যাভ্যাস বদলে ফেললে এই রোগের মুখোমুখি হতে হবে না, তবে অনিয়ম একেবারেই করা চলবে না, জানাচ্ছেন ডাঃ পূর্ণব্রত গুঁই।বাপ ঠাকুরদার আছে তাই আপনারও অর্শ বা পাইলস হবে, এই ধারণা ভুল। মলত্যাগের প্রক্রিয়া মসৃণ হলেই অর্শর সমস্যায় ভুগতে হবে না। যন্ত্রণাদায়ক অর্শ আপনার গোটা দিন বরবাদ করে দিতে পারে। মূলত কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদেরই পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, এঁদের মলত্যাগের সময়ে অকারণ বেগ প্রদানের বদভ্যাস রয়েছে, এবং এই রোগের নিরাময় নেই বললেই চলে। পাইলস হলে রক্তক্ষরণ হবে, কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যথা হবে না। এই সময়তেই ডাক্তারের পরামর্শ বা আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
যদি দেখেন যে একটি মাংসপিন্ড মলদ্বার থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে, তাহলে বুঝবেন আপনি সেকেন্ড ডিগ্রি পাইলসে ভুগছেন। এই সমস্যা বাড়তে থাকলে ব্যথার মাত্রাও বাড়তে থাকে।আগাম সাবধান হতে কী করবেন? মেডিসিনের ডাঃ পূর্ণব্রত গুঁই জানিয়েছেন, এই রোগ শুধুমাত্র মানুষেরই হয়ে থাকে। পাইলসের ভয় থেকে মুক্ত থাকার জন্য খেয়াল রাখা উচিত, মল যেন কিছুতেই শক্ত না হয়। এর জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। প্রচুর জল খাওয়া উচিত।
এই রোগ একেবারেই জেনেটিক নয়। যেহেতু যে কোনও বাড়িতে খাদ্যাভ্যাস একইরকম থাকে, মূলত সেই কারণেই বংশের পরবর্তী প্রজন্মেরও পাইলস হয়ে থাকে।ডাঃ গুঁই বলেন, “মলদ্বারের শিরা ফুলে থাকাই পাইলস। শিরা ফুলে থাকলে মলত্যাগের সময় সেখানে ঘষা খায়। কেটে যেতে পারে, একই সঙ্গে ব্যথা হয়। কাজেই, মল যদি নরম হয় তাহলে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের রুগী হন, তাহলে সেই রোগ দ্রুত সারিয়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। ডাঃ গুঁইয়ের মতে, অনেক সময়ে অতিরিক্ত মেদবৃদ্ধি, ভারী জিনিস তোলা বা গর্ভাবস্থার কারণেও পাইলসের শিকার হতে পারেন। মনে রাখবেন,অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার লক্ষণও দেখা দিতে পারে। তাই রক্তের অতিরিক্ত ক্ষরণ হতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখান।
অসুখের মাত্রা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্য শল্যচিকিৎসা ছাড়া উপায় নেই। পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় তবে ডাঃ গুঁই জানিয়েছেন, লাইফস্টাইল বদলে ফেললে এই রোগের মুখোমুখি হতে হবে না। অনিয়ম একেবারেই করা চলবে না। মলকে নরম রাখতে জলই একমাত্র সমাধান। এছাড়াও ফাইবারযুক্ত ফল, সবুজ আনাজপাতি, তুষযুক্ত দানাশস্য, কলা বেশি খাবেন। রাতে রুটি খেতে পারেন। শুকনো লঙ্কা একেবারেই খাবেন না। এছাড়া কফি এবং তেল-ঝালের রান্না বাতিল করুন। ইসবগুলের ভুষি, ল্যাক্টলোজ খেতে পারেন।এছাড়া কিছু ওষুধ আছে যা সাময়িকভাবে আরাম দেবে, তবে রোগ নির্মূল করবে না। তাই বেশি করে জল খান ও ফাইবার জাতীয় খাবার খান। যা আপনার মলকে অনেকটা নরম করবে। একইসঙ্গে সহজে মলত্যাগের বেগ আসবে। উল্লেখ্য, অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
অর্শরোগ জেনে নিন পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়
রক্ত পড়লে টনক নড়ে৷ একটু অনিয়ম হলেই ভোগান্তি৷ বেগ এলেই দুর্ভোগ৷ মুখ বুজে এই কষ্টকে মেনে নেয় অনেকেই৷ অজান্তেই রোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করে৷ ওষুধে মোকাবিলা না হলে নিশ্চিন্তে সার্জারি করিয়ে নিন৷ ভরসা দিচ্ছেন প্রোব ডায়াগনস্টিকের বিশেষজ্ঞ ডা. পার্থ সরকার৷দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পাচ্ছেন? মলদ্বারে ফোলা ভাব? নিয়মিত রক্ত পড়ে? উপসর্গগুলি অর্শের৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পরও না কমলে বিপদ৷ অস্বস্তি থেকে বাঁচতে সার্জারি করিয়ে নেওয়া ভাল৷ মলদ্বারের অ্যানাল ক্যানেলের ভিতরে অথবা বাইরে অর্শ হয়৷ যার দরুন রোগীর মলদ্বার থেকে একেবারে টাটকা রক্ত বেরোয়৷ রক্ত পড়ার সময় সাধারণত ব্যথা হয় না৷
পাইলস কখন হয়
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, দীর্ঘ সময় মল চেপে রাখার অভ্যাস, কম জল পান, সবুজ শাকসবজি কম খাওয়া, রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ফাস্ট ফুডে আসক্তি, ফাইবারযুক্ত খাবার না খাওয়া, ক্রনিক ডায়েরিয়া, ওবেসিটি, প্রেগন্যান্সি ও পায়ুসঙ্গম করলে অর্শ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে৷
উপসর্গ
- মলত্যাগের সময় ব্যথাবিহীন রক্ত পড়া
- প্রস্রাবের সঙ্গেও অল্প রক্ত পড়া
- মলদ্বারে চুলকানি এবং অস্বস্তিবোধ, ব্যথা হওয়া
- মলদ্বারের চারপাশ ফুলে ওঠা
- মলদ্বারে লাম্প হতে পারে যা খুবই শক্ত হয়
ইণ্টারনাল অর্শ – এটি সাধারণত রেকটামের ভিতরের দিকে হয়ে থাকে৷ যা বাইরে থেকে দেখে বোঝা সম্ভব নয়৷ সাধারণত মলত্যাগের সময় রোগী অস্বস্তিবোধ করেন এবং মলদ্বার থেকে রক্ত পড়ে৷ এক্সটারনাল অর্শ – মলদ্বারের চারপাশে যে চামড়া থাকে তার নিচে হয়৷ বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায়৷ এক্ষেত্রে রোগীর মলদ্বার চুলকায় এবং রক্ত পড়ে৷ থ্রম্বোসড অর্শ – এক্ষেত্রে মলদ্বারের চারপাশে শক্ত লাম্প দেখা যায় এবং মলত্যাগের সময় জমাট রক্ত বের হয়৷ অসহ্য যন্ত্রণা হয়৷
রোগ চিনতে
ডিজিটাল রেকটাল এক্সামিনেশন – চিকিৎসক গ্লাভস পরে পায়ুদ্বারে আঙুল ঢুকিয়ে বুঝে নেন কোনও গ্রোথ আছে কি না৷ যদি কোনও অস্বাভাবিক স্ফীতি চোখে পড়ে তাহলে পরবর্তী পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হয়৷ কোলোনোস্কোপি – অর্শ কি না তা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক কোলোনোস্কোপি করতে বলেন৷
অপারেশন
চিকিৎসক অসুখের প্রাথমিক পর্যায়ে ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করেন৷ এতে যদি ভাল ফল না হয় এবং অর্শ ক্রমশ বাড়তে থাকে তখন সার্জারির প্রয়োজন পড়ে৷ কেমিক্যাল কর্টারি কিংবা থার্মো-কর্টারি করে পাইলস অপসারণ করা হয়৷ এই সার্জারিতে অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয় না৷ কেবল রোগাক্রান্ত স্থানটিকে অবশ করে দেওয়া হয়৷ ফলে রোগী সার্জারির পরের দিনই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন এবং দৈনন্দিন কাজে যোগ দিতে পারেন৷
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় Hemorrhoidectomy – এক্ষেত্রে জেনারেল অ্যানাস্থেসিয়া করে রোগীকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করা হয়৷ তারপর পায়ুদ্বার ওপেন করে পাইলসটি নির্গত করা হয়৷ এই সার্জারির পর অসুখ ফিরে আসার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ থাকে৷ Haemorrhoidal amtery ligation–পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় এই পদ্ধতিটিও মূলত জেনারেল অ্যানাস্থেসিয়া করে করা হয়৷ এক্ষেত্রে হাইফ্রিকোয়েন্সি আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে পাইলস সংলগ্ন ব্লাড ভেসেলের রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ যার দরুন পাইলসটি রক্তের অভাবে নিজে থেকে শুকিয়ে যায়৷stapling – এটি মূলত Haemorrhoidectomy-র বিকল্প হিসাবে করা হয়৷ এক্ষেত্রে বৃহদান্ত্রের একদম শেষ ভাগটি স্ট্যাপেল করা হয় যার ফলে পাইলসের বৃদ্ধির প্রতিরোধ ঘটে৷ তবে এটি খুব কম ক্ষেত্রে ব্যবহূত হয়৷
কষ্ট কমাতে
নিয়মিত হাই ফাইবারযুক্ত খাবার, ফল, শাক-সবজি, দানা শস্য খেতে হয়৷ এর ফলে মল নরম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা অনেকটা কমে যায়৷ রেকটামের চারপাশে লাগানোর জন্য কিছু ট্রপিকাল ক্রিম ব্যবহার৷ রোজ দিনে দু’বার অন্তত ১০-১৫ মিনিট ছোট বাটিতে অল্প গরম জল নিয়ে তার উপর বসে গরম ভাপ নেওয়া যায়৷
- নিয়মিত স্নান ও মলদ্বার পরিষ্কার৷
- ফোলা কমানোর জন্য আইস ব্যাগ ব্যবহার৷
- কিছুক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যথার ওষুধ খেতে হয়৷
সতর্কতা
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
- মল চেপে না রাখা
- অতিরিক্ত তেল, ঝাল না খাওয়া
- নিয়মিত ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া
- মলত্যাগ করার পর টিস্যু ব্যবহার না করা
- নিয়মিত মলদ্বার পরিষ্কার করা
- মলের সঙ্গে সামান্য রক্ত পড়লেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
এটি অন্যান্য সব রোগের মতো সাধারণ একটি অসুখ তাই অযথা লজ্জিত না হয়ে চিকিৎসা করিয়ে নেওয়া উচিত৷