Modal Ad Example
Islamic

জানাজার নামাজের নিয়ম । জানাজার নামাজের দোয়া

1 min read

জানাজার নামাজের নিয়ম অনেক দোয়া সমূহ: মহান তালা ধ্বংসশীল এই পৃথিবীতে মৃত্যুকে করেছেন প্রাণের চূড়ান্ত পরিণতি।  সকল মুসলিমদের পৃথিবীর সকল কিছু ছেড়ে চলে যেতে হবে একদিন। আমাদের এই পৃথিবী থেকে একদিন সকলকেই বিদায় নিয়ে চলে যেতে হবে এবং মৃত্যুকে স্মরণ করে আমাদের আল্লাহতালার সকল নিয়ম ইবাদত বন্দেগী করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।  আল্লাহতালা বলেছেন প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ  আস্বাদন করতে হবে।

 

মহান আল্লাহ তা’আলা মৃত্যুর মাধ্যমে রুহুকে তিনি বিদায়  দেন । পৃথিবীর সকল ব্যস্ততা মহব্বত থেকে চিরবিদায় নিয়ে সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে।  আমাদের চোখের সামনে দিয়ে আমাদের অনেক প্রিয় জন কবরস্থান চলে গিয়েছে।  তাই আমাদেরকেও মৃত্যু কথা স্মরণ করতে হবে।  কারণ আমাদের প্রিয়জনদের আমাদেরকে একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। অনেকেরই প্রিয় জন আপনজন দাদা-দাদী, নানা-নানী, মা-বাবা ভাই-বোন ইত্যাদি।  জানিনা কখন জানি এক এক করে সবাই মৃত্যু দেখতে হবে সকলকেই। এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে সকলকে একদিন চলে যেতে হবে কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে মৃত্যুর পর কেউ আর এই পৃথিবীতে ফিরে আর আসবে না।

আরো পড়ুন

 

 

সকলের মনেই এমন এক সময় অনেক আফসোস করতে হয় সেটা হচ্ছে মৃত্যুর পর বিদায় বেলা। সবারই সকল আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি ও বন্ধু-বান্ধব যখন তাদের জানাজা পড়াতে হয় কিন্তু অনেকেই আছেন যারা জানাজারের পড়ানোর নিয়ম দোয়া জানা নেই। তাদের আরো বেশি আফসোস শেষ সময়টুকু তাদের জন্য দোয়া করা হলো না  এবং জানাযার পড়ানোর নিয়ম পদ্ধতি কোনটাই না জানার কারণে অনেক আফসোস করতে হয়।  আজকে তাদেরই জন্য জানাজার নামাজের নিয়ম সকল বিষয়ে জানতে আগ্রহী আজকের এই আলোচনা তে আপনাদের জন্য রয়েছে জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ। তো চলুন জেনে নেই।

জানাজার নামাজের ফজিলত । জানাজার নামাজের নিয়ম

রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম  বলেছেন , যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের জানাজার নামাজ পড়েন এবং   মৃত ব্যক্তির খবর দেন সে যেন ২ কেরাত নেকী পায়।  প্রত্যেক কেরাত পাহাড় সমান নেকী পাবেন একজন মৃত ব্যক্তির জানাজায় শরিক হতে পারলে। তাই পাহাড় সমান নেকী পাওয়ার জন্য আপনি চাইলে জানাজার নামাজে এবং কবর দেওয়ার সময় শরিক হতে পারেন। আমাদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যারা শুধু জানাজার নামাজ পরে তাদের জন্য এক কেরাত নেকী পাবে ।এবং যারা  জানাজার নামাজ ও কবর দেওয়ার সময় শরিক হন তিনি পাবেন ২ কেরাত নেকি এবং পাহাড় সমান নেকী। সহি বুখারী মুসলিম ।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আরও বলেন,  কোন মুসলমানের জানাযার ৪০ জন লোক যারা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেনি, যদি শরিক হয়ে ওই  লাসের জন্য দোয়া করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তাদের সুপারিশ নিশ্চিত কবুল করবেন। সহিঃ মুসলিম ও মিশকাত

উম্মুলওমেন হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন,  যখন কোন মুসলমানের ইন্তেকাল হয় এবং ১০০ জনের কাছাকাছি সংখ্যা মুসলমান তার জানাযার নামায পড়ে ও তার জন্য সুপারিশ করে তো এই সুপারিশ কবুল করা হয়।  জামে তিরমিজি

 জানাজার নামাজের নিয়ম জেনে নিন

প্রথম তাকবীরের পর  সানা পড়া

দ্বিতীয়  তাকবীরের পর দরুদ পড়া

তৃতীয় তাকবীরের পর দোয়া পড়া

চতুর্থ তাকদীর পর সালাম ফেরানো

জানাজার নামাজের নিয়ম হাত উঠানোঃ জানাজার নামাজের  শুধু প্রথম তাকবীরে হাত উঠাবে, এছাড়া অন্য তাকবীরে উঠানোর নিয়ম নেই।

 জানাজার নামাজের নিয়ম ।  জানাজার নামাজের ইমামতির নিয়ম

জামায়াতের সামনে  কাফন  ঢেকে  লাশ রাখতে হবে। পেছনেই লাশের সিনা বরাবর ইমাম দাঁড়াবেন। তার পেছনে মুক্তাদীরা কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবেন । সবাই মনে মনে জানাজার নামাজের নিয়ত বা  ইচ্ছা করবেনঃ  এই মৃত ব্যক্তির দোয়ার জন্য জানাজার নামাজ পড়ছি।  মূলত এটাই হল নিয়ত।

জানাজার নামাজের নিয়ত

শুদ্ধ আরবি জানা না থাকলে জানাজার নামাজের নিয়ত সহ যেকোন নামাজের নিয়ত ই নিজের মাতৃভাষায় পড়াই উত্তম। অর্থাৎ না জেনে অশুদ্ধ আরবীতে নিয়ত করা বিশেষ কোন তাৎপর্য নেই।  কারণ নিয়ত হল অন্তরের ইচ্ছা ও সংকল্পের নাম।  আগ্রহীদের জন্য নিম্ন আরবি নিয়ত দেয়া হলো-

نَوَيْتُ اَنْ اُوَدِّيْ لِلّٰهِ تَعَالٰى اَرْبَعَ تَكْبِرَاتٍ صَلْوَةِ الْجَنَازَةِ فِرْضِ الْكِفَايْةِا لثَّنَاءُ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَالصَّلَوةُ عَلٰى النَّبِي وَالدُّعَاءُ لِهَذَا الْمَيْتِ اِقْتَدَيْتُ

بِهَذَاالاِمَامِ مُتَوَجِّهًا ا لٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفِةِ اَللهُ اَكْبَر.

বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উওয়াদ্দিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ তাকবীরাতিন সালাতিল জানাযাতি ফারদিল কেফাইয়তি আছ্ছানাউ লিল্লাহি ওয়াস সালাতু আলান্নাবীয়্যি ওয়াদ্দু’আউ লিহাযাল মাইয়্যিতি ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি-আল্লাহু

জানাজার নামাজের নিয়ত অর্থ : (সংক্ষেপে) আল্লাহর জন্য আমি কেবলামুখী হয়ে চার তাকবীরের সাথে এই ইমামের পেছনে জানাজার ফরজে কেফায়া নামাজ আদায় করছি, ‘আল্লাহু আকবার।

জানাজার নামাজের নিয়ত করে ইমাম উচ্চস্বরে আল্লাহু আকবার বলে অন্য নামাজের মত হাত বাঁধবে। এরপর ছানা পাঠ করবে। মুক্তাদীগণ ইমামের অনুসরণ করে একইভাবে তাকবীর দিয়ে ছানা পড়বে। এরপর ইমাম হাত উত্তোলন না করেই উচ্চস্বরে দ্বিতীয় তাকবির দিবে। এরপর নিম্নস্বরে অন্য নামাজের দরূদের ন্যায় দরূদ পড়বে। মুক্তাদীরাও ঐরূপ করবে। দরূদ শেষ করে ইমাম তৃতীয় তাকবীর দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থাতেই মৃত ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক হলে নিম্ন স্বরে এই দোয়া পড়বে-

اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِ نَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَنَا اَللّٰهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلٰى الْاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلٰى الْاِيْمَانِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগ ফিরলি হায়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া সাগীরিনা ওয়া কাবীরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াহতাহু মিন্না, ফাআহয়িহী আলাল ইসলামি ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহ আলাল ইমান। অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড় এবং পুরুষ ও নারী সকলকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাদেরকে জীবিত রেখেছেন ইসলামের উপর জীবিত রাখেন আর যাদেরকে মৃত্যু দন করেছেন তাদেরকে ঈমানের সঙ্গেই মৃত্যু দান করেন।

আর জানাজা অপ্রাপ্ত বয়স্ক কারো হলে উক্ত দোয়ার পরিবর্তে এই দোয়া পড়বে

: اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً ا وَّاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّمُشَفِّعًا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাজ আলহু লানা ফারাতাও ওয়াজ আলহু লানা আজরাও ওয়াজ আলহু লানা শাফিআও ওয়া মুশাফফাআ। অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি তাকে আমাদের জন্য অগ্রবর্তী হিসেবে কবুল করুন, তাকে করুন আমাদের জন্য প্রতিদান স্বরূপ এবং তাকে বানান আমাদের জন্য সুপারিশকারী -যার সুপারিশ কবুল করা হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক লাশ মেয়ের হলে ‘হু’ (هُ) স্থানে ‘হা’ (هَا) বলতে হবে। এই দুআ পাঠের পর ইমাম চতুর্থ তাকবীর বলে প্রথমে ডানে ও পরে বামে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি’ বলে সালাম ফিরাবে। মুক্তাদীরাও তার অনুকরণ করবে।

জানাযার জরুরী মাসআলা । জানাজার নামাজের নিয়ম

 

  1. মাসআলাঃ ছানা, দরূদ ও দুআর পরে যে আরো তিনবার তাকবীর বলতে হয় তখন ইমাম ও মোক্তাদীর হাত বাঁধা থাকবে।
  2. মাসআলা : ইমাম তাকবীর ব্যতীত সবকিছুই চুপে চুপে বলবে, শুধু তাকবীর উচ্চস্বরে বলবে। মোক্তাদীরা তাকবীরসহ সবকিছুই আস্তে আস্তে বলবে।
  3. মাসআলা : ডান দিকে সালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে ডান হাত এবং বাম দিকে সালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে বাম হাত নামিয়ে ফেলবে।
  4. মাসআলা : জানাজার নামাজের পরে আর কোনো দোয়া বা মোনাজাত এক সঙ্গে করার বিধান নেই।
  5.  মাসআলা : জানাজার নামাজ ছুটে যাওয়ার আশংকা হলে (পানি নিকটে থাকা সত্ত্বেও) তায়াম্মুম করে জানাজায় শরীক হওয়া যায়।
  6. মাসআলা : জুতা পায়ে রেখেও জানাজার নামাজ পড়া যায়। তবে শর্ত এই যে জুতার তলা এবং জুতার নিচে জায়গা পাক থাকতে হবে। আর যদি জুতা খুলে জুতার উপরে পা রেখে দাঁড়ায় তাহলে পায়ের সঙ্গে লেগে থেকে জুতার উপরের অংশ পাক থাকলেই হবে।
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x