কতদিকে কত কারিগর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (PDF)
কতদিকে কত কারিগর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন লোকশিল্প ও লোকসংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে মাটির গড়া শিল্প সমধিক পরিচিত ও প্রসিদ্ধ। ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনায় সৈয়দ শামসুল হক এই কারিগরদের অসাধারণ শিল্পকর্মের পরিচয় তুলে ধরেছেন, যারা কুমোর হিসেবে পরিচিত। একসময় মাটির তৈজসপত্র তৈরি করতেন কুমোররা।
এখন তাঁরা মাটি দিয়ে নির্মাণ করেন খ্যাতিমানদের অবয়ব মূর্তি। পালমশাই একজন জাতশিল্পী। তাঁর তত্ত্বাবধানে কারিগররা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, লালন ফকির, মওলানা ভাসানীসহ খ্যাতিমান ব্যক্তিদের প্রতিমূর্তি গড়েন। লেখক এসব শিল্পীর নিষ্ঠা, দক্ষতা, মূল্যবোধের পরিচয় তুলে ধরেছেন।
কতদিকে কত কারিগর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : গোলাম মাওলা একজন সৌখিন শিল্পপতি। তিনি তাঁর বাড়ির ড্রইংরুম মাটির তৈরি ফুলদানি, নৌকা, গরুর গাড়ি এবং বিভিন্ন মনীষীর প্রতিকৃতি দিয়ে সাজিয়েছেন। এগুলো তিনি সংগ্রহ করতে নিজেই চলে যান কুমোর পাড়ার প্রবীণ কারিগরের কাছে, যিনি নামেও প্রবীণ, কাজেও প্রবীণ। মাওলা সাহেবের অভিমত— প্রবীণসহ আরও কয়েকজন পুরোনো কারিগরের অবদানেই আমাদের মৃৎশিল্প টিকে আছে। তাঁদের মতো পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, যত্নশীল এবং নিপুণ কারিগরদের বড় অভাব আজকের দিনে। এই অভাব পূরণ করতে না পারলে আমাদের মৃৎশিল্প ধ্বংসের মুখে পতিত হবে।
ক. জয়নুল আবেদীন কে ছিলেন?
খ. ‘পালমশাই একজন জাতশিল্পী’– এখানে লেখক জাতশিল্পী বলতে কী বুঝিয়েছেন?
গ. মাওলা সাহেবের ড্রইংরুমে সজ্জিত মাটির জিনিসপত্রের দ্বারা ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার কোন দিকটিকে ইঙ্গিত করে— ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “তাঁদের মতো পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, যত্নশীল এবং নিপুণ কারিগরের বড় অভাব আজকের দিনে।’— মাওলা সাহেবের এই অভিমত উদ্দীপক এবং ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
উত্তর
ক. জয়নুল আবেদীন ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী।
খ. ‘জাতশিল্পী’ বলতে দক্ষ ও নিপুণ শিল্পীকে বোঝানো হয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ফলে যেকোনো মানুষই সুদক্ষ হয়ে ওঠে। আলোচ্য রচনায় পালমশাই মাটির শিল্পপণ্য তৈরিতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ। এজন্য লেখক তাঁকে ‘জাতশিল্পী’ বলেছেন। অর্থাৎ তাঁর স্বভাবই শিল্পকর্ম সৃষ্টি।
গ. ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার লেখক ও উদ্দীপকের মাওলা সাহেবের দৃষ্টিতে বাঙালি সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে মৃৎশিল্পের দিকটি উঠে এসেছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের লোকসংস্কৃতি ও লোকশিল্প হিসেবে মাটির জিনিসপত্রের কদর দীর্ঘদিন রয়েছে। কিন্তু সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তা আরও আধুনিক হয়েছে। ঐতিহ্য ও ইতিহাস এখন একে অপরের পরিপূরক হয়েছে। ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনায় সে দিকটিই লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকের গোলাম মাওলা সাহেব একজন শিল্পপতি হলেও তিনি ঐতিহ্য প্রেমিক মানুষ। আর এ কারণেই তিনি তার ড্রইংরুম সাজিয়েছেন নানা রকম মৃৎশিল্প দিয়ে। “কতদিকে কত কারিগর’ রচনায় খ্যাতিমানদের অবয়ব অতি নিখুঁতভাবে মাটি দিয়ে তৈরি হয়েছে, ফলে আমরা দেখতে পাই— এটি আমাদের সংস্কৃতিরই বাহক। তাই মাওলা সাহেবের ড্রইংরুমের সাথে আলোচ্য রচনার বিভিন্ন মূর্তি, অবয়ব বা নকশার মিল রয়েছে।
ঘ. ‘তাদের মতো পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, যত্নশীল এবং নিপুণ কারিগরের বড় অভাব আজকের দিনে।’ মাওলা সাহেবের এই অভিমত উদ্দীপক এবং ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার আলোকে যথার্থ।
সংস্কৃতি জাতির মননের পরিচয় বহন করে। মৃৎশিল্প আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম একটি ধারা। কিন্তু যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা ও মূল্যায়নের অভাবে এই ঐতিহ্যবাদী শিল্পটি আজ বিলুপ্তির পথে।
‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনায় পালমশাইয়ের ভাষ্যে মৃৎশিল্পের বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে এসেছে। সুনিপুণ কাজ বলে সামান্য অসাবধানতায় পণ্ড হয়ে যেতে পারে পুরো শিল্পকর্মটি। আবার ভাটি থেকে বের করার সময়ও বাদ পড়ে কিছু জিনিস। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন দক্ষ ও নিপুণ শিল্পী যাদের অভাববোধ করেন তিনি।
উদ্দীপকের মাওলা সাহেবের বক্তব্যেও উঠে এসেছে মৃৎশিল্পে পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, যত্নশীল এবং নিপুণ কারিগরের প্রয়োজনীয়তার কথা। কিন্তু আজকের দিনে এমন নিষ্ঠাবান শিল্পীর বড় অভাব বলে তিনি মনে করেন। অর্থাৎ নিষ্ঠাবান ও দক্ষ শিল্পীর অভাব মাওলা সাহেব ও পালমশাই উভয়ের বক্তব্যেই ফুটে উঠেছে। তাই উদ্দীপক ও ‘কতদিক কত কারিগর’ রচনার আলোকে বলা যায় মাওলা সাহেবের অভিমতটি যথার্থ।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : রিফা, রিনা ও রিতু কুমোর পাড়ায় যায় কুমোরদের কাজ নিজ চোখে দেখার জন্য। সেখানে গিয়ে তারা মাটি দিয়ে নানারকম জিনিস তৈরি করতে দেখে কুমোরদের। বিখ্যাত মনীষীদের প্রতিকৃতি তৈরি করতে দেখে অভিভূত হয় তারা। রিনা তখন মনে মনে চিন্তা করে আমাদের দেশে এখনও অনেক প্রতিভাধর ব্যক্তি আছেন যারা নিপুণ হাতে অনেক কিছু করতে পারেন।
ক. কুমোরদের গ্রামটি কেমন?
খ. কতদিক কত কারিগর বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার কোন দিকটি ইঙ্গিত করে বর্ণনা করো।
ঘ. ‘কতদিকে কত কারিগর রচনার প্রথমাংশের বিষয়বস্তু উঠে এসেছে”— বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : ভাস্কর্য। নরম মাটি দিয়ে কোনো কিছুর রূপ দেয়া বা শক্ত পাথর কেটে কোনো গড়ন বানানো। বিশেষ এক ধরনের ছাঁচ বানিয়ে গলিত মেটাল ঢেলে গড়ন বানানো, এই ধরনের কাজকে বলে ভাস্কর্য। আমাদের দেশে পোড়ামাটির ভাস্কর্য খুব প্রসিদ্ধ ছিল।
ক. কে শ্যেন চোখে কারিগরদের হাতের দিকে তাকিয়ে আছেন?
খ. ‘আমাগো চেনে কয়জন’— কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকটি ‘কতদিকে কত কারিগর’ প্রবন্ধের কোন দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘কতদিকে কত কারিগর’ প্রবন্ধের আংশিক প্রতিনিধিত্ব করে, সম্পূর্ণ নয়। বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : অনিক চৌধুরী একজন কম্পিউটার প্রশিক্ষক। তিনি বেশ কয়েকটি ব্যাচে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেন। এ কাজটি তিনি অত্যন্ত দরদ ও দক্ষতার সাথে করে থাকেন। একটা ছেলেকে বারবার শিখিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও সে যখন কিছুই পারছিল না তখন তিনি বলেন, আরে বোকা! এটা কী এমন কঠিন কাজ যে এখনো শিখলে না। মনে রেখো ভবিষ্যতে কম্পিউটারই বিশ্ব শাসন করবে।
ক. ‘শানকি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. বৃদ্ধ পালমশাই কারিগরদের তদারক করছিলেন কেন?
গ. উদ্দীপকের অনিক চৌধুরীর সঙ্গে ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার কার সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে শেষোক্ত মন্তব্যটি ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনায় লোকশিল্পের ক্ষেত্রে কতটুকু প্রযোজ্য? তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের মৃৎশিল্পের মধ্যে এখন বিরাজ করছে প্রতিমা তৈরির আমেজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রাথমিক পর্বটি সূচনা করে ফেলেছেন তারা। শুধু দুর্গা প্রতিমাই নয়, বিভিন্ন মূর্তি, হাঁড়ি পাতিলসহ নানা মাটির তৈরি জিনিসপত্র ক্রেতারা সহজে কিনে নৌকার সাহায্যে নদীপথে দূর-দূরান্তে নিয়ে যেতে পারেন। এই প্রয়াস চলে আসছে অনাদিকাল ধরে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের এ এক অনন্য উদাহরণ।
ক. লালন ফকির কে?
খ. বাংলাদেশের কুমোরেরা কীভাবে আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখেন?
গ. উদ্দীপকটিতে ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে— ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “মৃৎশিল্প আমাদের ঐতিহ্য।” ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : ‘মহান স্বাধীনতা দিবস’ উপলক্ষ্যে কমলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী রোমানা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সে ৭ই মার্চের ভাষণরত বঙ্গবন্ধুর ছবি এঁকে প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে। তার আঁকা ছবির নিপুণ দক্ষতা সবার দৃস্টি আকর্ষণ করে। সব ছবির উপরে স্থান পায় রোমান আঁকা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের ছবি।
ক. ‘শানকি’ কী?
খ. ‘হেরে ত মধ্যে বা নিচে রাহন যায় না’– কেন?
গ. উদ্দীপকের রোমানার আঁকা ছবি ও ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার পালমশাইয়ের তৈরি প্রতিকৃতির বৈসাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. রোমানা ও পালমশাইয়ের শিল্পকর্ম যেন বাঙালির সংগ্রামী চেতনার প্রতিফলন৷’ পাঠ্য রচনার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : সানজিদা গ্রামের একজন অসহায় দরিদ্র মহিলা। গ্রামের অন্য হতদরিদ্র মহিলাদের নিয়ে গাছের পাতা ও আঁশ দিয়ে পাখা, মাদুর ও ফুলদানি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। সানজিদার নির্দেশনায় সবাই এক একজন দক্ষ কারিগর হয়ে ওঠেন। তাদের তৈরি পাখা, ফুলদানি, মাদুর সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেলায় প্রচুর বিক্রি হয়। সানজিদা মনে করেন তাদের মানসম্পন্ন জিনিসগুলো দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় ভূমিকা রাখে ।
ক. শানকি কী?
খ. ‘হেরে ত মধ্যে বা নিচে রাহন যায় না’ কেন?
গ. সানজিদার শিল্পকর্ম ও ‘কতদিকে কত কারিগর’ প্রবন্ধের পালমশাইয়ের শিল্পকর্মে সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. সানজিদা ও পালমশাইয়ের কুটিরশিল্পগুলো দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করেছে। —বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : গোলাম মওলা একজন শিল্পপতি। তিনি মাটির তৈরি ফুলদানি, নৌকা, গরুর গাড়ি, ফলমূল ও বিভিন্ন মনীষীর প্রতিকৃতি দিয়ে তার বাড়ির ড্রইংরুম সাজিয়েছেন। তিনি মনে করেন, লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা প্রত্যেকেরই কর্তব্য।
ক. ‘শ্যেন’ চোখে মানে কী?
খ. পালমশাই একজন ‘জাত শিল্পী’। এখানে পালমশাইকে ‘জাত শিল্পী’ বলার কারণ কী?
গ. মাওলা সাহেবের ড্রইংরুমে সজ্জিত মাটির জিনিসপত্র দ্বারা ‘কত দিকে কত কারিগর’ রচনার কোন দিকটি ইঙ্গিত করে, ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মাওলা সাহেবের বক্তব্যের সঙ্গে তুমি কি একমত? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : এদেশে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল বানায় কুমোররা। চাকায় মাটির দলা লাগিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নানাসব মাটির জিনিস গড়ে। তারপর তুলি দিয়ে তার গায়ে এঁকে দেয় ফুল, পাতা, হাতি, ঘোড়া আরো কত রঙের ছবি। কুমোররা না থাকলে ওইসব মাটির জিনিস আজ আর পাওয়া যেত না। এজন্য কুমোরের কারিগরি দক্ষতা প্রশংসনীয়।
ক. কারিগররা সবার উপরে স্থান দেয় কাকে?
খ. পাল মশাইয়ের কাজের মধ্যে কীভাবে বাংলা লোকসাহিত্যের বিষয় স্থান পেয়েছে?
গ. উদ্দীপকে তোমার পঠিত কোন রচনার বিষয় উঠে এসেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. কুমোরদের কারিগরি দক্ষতা প্রশংসনীয়- উদ্দীপক ও ‘কতদিকে কত কারিগর’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।