স্কুল ক্রিকেটে চালু হচ্ছে স্কলারশিপ
দেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট উৎসব জাতীয় স্কুল ক্রিকেট। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সে উৎসবের রং ছড়ায়নি। খেলা না হওয়ায় বিসিবির পাইপলাইনে যোগ করা যায়নি কিছু প্রতিভা। করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকায় খুলে গেছে স্কুল, খোলার অপেক্ষায় স্কুল ক্রিকেট। এ মাসের শেষ বা আগামী মাসের প্রথম দিকে দেশব্যাপী শুরু হবে জাতীয় স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। প্রতিভাবান ক্রিকেটার খুঁজে পেতে টুর্নামেন্টটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ওবেদ রশিদ নিজাম জেলায় জেলায় ভেন্যু পরিদর্শন করছেন। তিনি জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে খেলোয়াড় বাছাই করা হচ্ছে স্কুল দল গড়তে। স্কুলগুলোর কাছে টুর্নামেন্টটিকে আকর্ষণীয় করতে প্রাইজমানি এবং স্কলারশিপের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিসিবির জাতীয় স্কুল টুর্নামেন্টে প্রতি বছর সাড়ে পাঁচশ দল খেলে। জেলা ও বিভাগীয় পর্বের প্রতিটি ধাপে উত্তীর্ণ হয়ে সুযোগ করে নিতে হয় জাতীয় পর্যায়ের খেলায়। চূড়ান্ত খেলা শেষে বাছাইকৃত প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ দেয় বিসিবি। এবার আরও পরিকল্পিত এবং গুছিয়ে করা হবে টুর্নামেন্টটি।
ওবেদ নিজামা বলেন, ‘স্কুল ক্রিকেটের উৎসবকে আকর্ষণীয় করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক হতে হবে। যেখান থেকে ছেলেরা যোগ হবে জাতীয় পর্যায়ে। প্রতিভাবান ছেলেগুলো যাতে খেলার মধ্যে থাকতে পারে সে জন্য স্কলারশিপ চালু করতে চাচ্ছি। সেরা ১০ জন ছেলেকে এক বছরের জন্য ন্যূনতম সম্মানী দেওয়া গেলে ভালো হয়। চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ দলের জন্য ট্রফির সঙ্গে প্রাইজমানিও রাখতে পারব বলে আশা করি। পরশু (মঙ্গলবার) মিটিং আছে। সেখানে প্রস্তাবনাগুলো তোলা হবে। আমার বিশ্বাস বোর্ডের অনুমোদন পাওয়া যাবে।’
জাতীয় স্কুল ক্রিকেটে চমকপ্রদ আরও কিছু জিনিস প্রবর্তন করা হচ্ছে। খেলোয়াড়দের ডাটাবেজ সংরক্ষণ করা হবে ডিজিটালি। ন্যাশনাল গেম ডেভেলপমেন্টের ম্যানেজার আবু ইমাম মো. কাউসার বলেন, ‘পরীক্ষামূলক সার্ভারে ডাটা ইনপুট দেওয়া হচ্ছে। ফাইনাল হয়ে গেলেই নেটওয়ার্কে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের তথ্য পাওয়া যাবে।’
২০১৯ সালে ৫৫৬টি স্কুল অংশ নিলেও এবার সেটা চারশ থেকে সাড়ে চারশর মধ্যে রাখা হতে পারে। ওবেদ নিজাম জানান, সংখ্যার সঙ্গে কোয়ালিটিও দেখা হবে এবার। তিনি বলেন, ‘যেসব স্কুলে খেলাধুলা হয়, ক্রিকেট দল করে, তারাই কেবল সুযোগ পাবে। জেলা ও বিভাগীয় কোচ এবং ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে খেলোয়াড় বাছাই করে স্কুলগুলোকে দল গড়তে সাহায্য করা হবে। বিসিবি যেখানে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবে।’
ঈদের আগেই জেলা পর্যায়ের খেলা শেষ করতে চায় বিসিবির বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট কমিটি। বিভাগীয় খেলাগুলো হবে পরে। টার্ফের উইকেটে ৫০ ওভারের ম্যাচ হবে। যেসব ভেন্যুতে টার্ফের উইকেট নেই সেখানে ম্যাট দেবে বিসিবি। ওবেদ নিজামের জন্য ভালো খবর হলো স্পন্সর ফিরেছে স্কুল ক্রিকেটে। মাঝে বিরতি দিলেও প্রাইম ব্যাংক লম্বা সময়ের জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছে বিসিবির সঙ্গে। বোর্ডের কোষাগার থেকে খুব বেশি খরচ করতে হবে না। ওবেদ নিজামও চান বাজেটের ভেতর থেকে টুর্নামেন্টকে আকর্ষণীয় করতে। শেষ পর্যন্ত কতটা জাঁকজমকপূর্ণ টুর্নামেন্ট হলো সেটা বড় বিষয় না, স্কুল ক্রিকেট মাঠে ফেরানোই হবে করোনাকালের অর্জন।