এই স্লোগানকে সত্য প্রমাণ করতেই বিসিএস এর সার্কুলার হয়েছে। যেখানে শুন্য পদ রয়েছে-

ইতোমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং অনেকেই সফলভাবে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তবে যারা এই প্রক্রিয়ায় একেবারেই নতুনভাবে নিজের নাম খোদাই করতে চাচ্ছেন, শুধু তাদের জন্যেই এই চর্বিত চর্বন। যারা অভিজ্ঞ, তাদের কাছে এই লেখার এক কানাকড়িও মূল্য নেই। অতএব বুঝতেই পারছেন দাদা, আপনাদের জন্য ইশারাই কাফি!!!
http://bpsc.teletalk.com.bd ঠিকানায় গিয়ে Online Application for BCS Examination লিংকে ক্লিক করুন। যে পেজ আসে তার ডানপার্শে উল্লিখিত ৩টি অপশনের মধ্যে থেকে আপনার জন্য প্রযোজ্য একটি অপশনের রেডিও বাটন সিলেক্ট করে Apply বাটনে কষে ক্লিক করুন।
#১. নিজের এসএসসি এর সার্টিফিকেট অনুযায়ী নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্মতারিখ লিখতে হবে। বাবা/মা যদি বর্তমানে মৃত হয়, তবুও মৃত বা লেট লিখবেন না। তবে এসএসসি সার্টিফিকেট এ মৃত লেখা থাকলে লিখতে হবে।
#২. Employment Status এর ক্ষেত্রে সরকারী, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তসাশিত হলে উল্লেখ করবেন। ফুল প্রাইভেট জব উল্লেখ না করাই ভালো। ঝামেলা বাড়িয়ে কার কবে লাভ হয়েছে, বলেন! আপনার জেন্ডার আপনিই ভাল জানেন। শুধু শুধু অন্যকে বিব্রত করার কী দরকার!
#৩. এথনিক মাইনরিটি (সংখ্যালঘু), হ্যান্ডিক্যাপড (প্রতিবন্ধী), ফ্রিডম-ফাইটার, ম্যারিটাল স্ট্যাটাস, হাইট, ওয়েট সঠিকভাবে লিখুন/সিলেক্ট করবেন।
#৪. বর্তমান আর স্থায়ী ঠিকানা এক দেয়াই যুক্তিসংগত। অবিবাহিতা এবং বিবাহিতা উভয়ক্ষেত্রে মেয়েরা বাবার অ্যাড্রেস ব্যবহার করলে ভালো। কেননা, বিবাহিতাদের ক্ষেত্রে, by this time, কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে বিপদে পড়বেন।
#৫. এক্সাম সেন্টার যেটা দিবেন সেটাতেই আপনাকে প্রিলি ও রিটেন দিতে হবে। তাই একটু ভেবে নির্বাচন করুন।
#৬. এসএসসি , এইচএসসি, অনার্স, মাস্টার্স এর তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
#৭.অ্যাপিয়ার্ড পরিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে, যদি আপনার ঐ পরীক্ষার ফলাফল ৩৮তম বিসিএস-এর আবেদনপত্র দাখিলের শেষ তারিখ পর্যন্ত প্ৰকাশিত না হয় তাহলেও আপনি অনলাইন-এ আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন। তবে তা সাময়িকভাবে গ্রহণ করা হবে। আপনাকে তখনই অবতীর্ণ প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হবে যখন আপনার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল লিখিত পরীক্ষা ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষার আবেদনপত্র গ্রহণের শেষ তারিখের মধ্যে অর্থাৎ ১০/০৮/২০১৭ তারিখের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে শেষ হবে। এ মর্মে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় চেয়ারম্যান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত পরীক্ষা শুরু ও শেষ হওয়ার তারিখ সংবলিত প্রত্যয়নপত্রের সত্যায়িত কপি আপনাকে লিখিত (বিসিএস) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কমিশন কর্তৃক নির্দেশিত সময়ে BPSC: Form-1 (applicant’s copy) এর হার্ড কপির সঙ্গে কমিশনে দাখিল করতে হবে। বিসিএস-এর মৌখিক পরীক্ষার সময় উক্ত পরীক্ষা পাসের প্রমাণস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল/সাময়িক সার্টিফিকেট এবং অবতীর্ণ হওয়ার প্রত্যয়নপত্রের মূল কপি কমিশনে অবশ্যই দাখিল করতে হবে। এবার ভেবে দেখুন।
#৮. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ক্যাডার চয়েস। নিজের পছন্দ, যোগ্যতা, শুণ্যপদের সংখ্যা বিবেচনা করে চয়েস করবেন। Whimsically কোন চয়েস দিলে আপনার কাটা খাল দিয়ে একেবারে হাঙর এসে পড়বে। যদিও কাজির গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নাই- এর মত সব ক্যাডার ই সমান মর্যাদার অধিকারী। তবুও ফরেন, অ্যাডমিন, পুলিশ দিলে প্রথমদিকেই, না হলে নাই। তবে এই তিনটার মধ্যে ফরেন দিলে এক নম্বরেই দিবেন। তা না হলে সকল ধাপ পেরিয়ে আপনি যখন দুরুদুরু বুকে ভাইভা বোর্ডের সামনে হাজির হবে তখন গুরুরা আপনাকে ‘কুরুক্ষেত্রের বাণ’ মারিবে। একেবারে শুয়ে পড়বেন। নিজের প্রফেশনাল ক্যাডার সবার শেষে রাখবেন। কারন, প্রফেশনালের আগে জেনারেল ক্যাডার শেষ হয়ে যায় রে ভাই, শেষ হয়ে যায়। এখানেও অমোঘ ডিমান্ড।
#৯. যারা ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী তাদেরকে অনলাইন ফরম-এ question type option-এর বক্স-এ টিক চিহ্ন (v)দিতে হবে। যে সব প্রাথী প্রিলিমিনারি টেস্ট-এ ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্র ব্যবহারের জন্য question type option-এর বক্স-এ টিক চিহ্ন (v) দেবেন, কেবল সে সব প্রার্থীই প্রিলিমিনারি টেস্ট-এ ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে পারবেন। অনলাইন-এ প্ৰিলিমিনারি টেস্ট-এ ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্র ব্যবহারের প্রদত্ত অপশন পরিবর্তন করা যাবে না।
#১০. BPSC Form-1 এর Part-1, Part-2 ও Part-3 সাফল্যজনকভাবে পূরণের পর application preview দেখা যাবে। preview এর নির্ধারিত স্থানে আপনার পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি স্ক্যান করে আপলোড করুন।ছবির (দৈর্ঘ্য x প্ৰস্থ) 300×300 pixel এর কম বা বেশি এবং file size: 100 KB এর বেশি হতে পারবে না। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, Applicant’s copy-তে ছবি মুদ্রিত না হলে আবেদনপত্র বাতিল হবে।
#১১. Application preview-তে স্বাক্ষরের জন্য নির্ধারিত স্থানে কবরে যাওয়ার আগ-পর্যন্ত ব্যবহার করবেন এমন একটি সিগনেচার স্ক্যান করে (দৈর্ঘ্য x প্ৰস্থ) 300 x 80 pixel এর কম বা বেশি নয় এবং file size 60 KB এর বেশি, আপলোড করবেন। applicant’s copy-তে স্বাক্ষর মুদ্রিত না হলে আপনার এত সাধের আবেদনপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
এইবার কিছু কমন প্রশ্ন যা মাথায় ঘুরে বেড়ায় তার উত্তরঃ
#১. অনার্স পাশ করে কি বিসিএস এ আবেদন করা যায় ? নাকি মাস্টার্স লাগে ?
উত্তরঃ অনার্স ফাইনালের লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেলে appeared দেখিয়েও বিসিএস পরীক্ষার জন্য আবেদন করা যায় । মাস্টার্স হলে তো ভাল। তবে রেজাল্টের ক্ষেত্রে পুরো শিক্ষাজীবনে একটিমাত্র তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য।
#২. কত নাম্বারের পরীক্ষা ? কি কি বিষয় থাকে ?
উত্তরঃ প্রথমে ২০০ নাম্বারের প্রিলিমিনারি ( MCQ ) পরীক্ষা হয়। এর মধ্য থেকে কিছুসংখ্যক পরীক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করা হয় । ঠিক কতজন নির্বাচন করা হবে তার কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বিষয়গুলো বাংলা, ইংরেজি, গনিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, মানসিক দক্ষতা, ভূগোল ও পরিবেশ, নৈতিকতা ইত্যাদি । এরপর , প্রিলিমিনারি পরীক্ষা থেকে বাছাইকৃত পরীক্ষার্থীদের ৯০০ নাম্বারের লিখিত পরীক্ষা নামক গিলোটিনের আওতায় আনা । যেখানে বাংলা ২০০ নাম্বার, ইংরেজি – ২০০ নাম্বার, সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী – ২০০ নাম্বার, সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী -১০০ নাম্বার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি -১০০ নাম্বার ( বিজ্ঞান ৫০+ প্রযুক্তি ৫০ ), গনিত ও মানসিক দক্ষতা ১০০ ( গনিত ৫০ + মানসিক দক্ষতার ৫০ টি MCQ )।
#৩. লিখিত পরীক্ষায় কত পেলে ভাইভাতে কল করে?
উত্তরঃ লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ এর মধ্যে সম্মিলিতভাবে ৫০% অর্থাৎ ৪৫০ হচ্ছে পাশ নাম্বার। প্রতিটি বিষয়ে আলাদাভাবে পাশ করতে হয়। তবে কোন বিষয়ে ৩০ এর কম নাম্বার পেলে সেটি আর মোট নাম্বারের সাথে যোগ হয়না । লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের থেকে ভাইভার জন্য নির্বাচন করা হয় । ভাইভা ২০০ নাম্বারের পরীক্ষা , পাশ মার্ক ৫০% । বিসিএস পরীক্ষার রেজাল্ট লিখিত ও ভাইভায় প্রাপ্ত নাম্বার মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে দেয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় যে যত ভালো নাম্বার পাবে তার সফল হবার সম্ভাবনাও তত বেড়ে যায়। তারপরও কপাল নামক শব্দটাকে মেধা, পরিশ্রম ইত্যাদি bombastic শব্দ দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না।
#৪. অনার্স পাশ করা যে কেউ কি যে কোন জেনারেল ক্যাডারের জন্য আবেদন করতে পারবে ?
উত্তরঃ পারবে। ফরম পূরণ করার সময় আপনি চাইলে চয়েস সবগুলোই দিতে পারবেন । যার যে টাইপ জব ভালো লাগে বা যে ক্যাডার পছন্দ সেভাবে সিরিয়ালি দিতে পারেন। কোন বাধা নেই । আপনি শুধু জেনারেল, শুধু টেকনিক্যাল অথবা both cadre চয়েস দিতে পারবেন যেটা আপনার ইচ্ছা ।
#৫. জেনারেল, টেকনিক্যাল নাকি both cadre কিভাবে ফরম পূরণ করলে সুবিধা ?
উত্তরঃ আপনি যেভাবেই ফরম পূরণ করুন না কেন, কেবল ভাল পরীক্ষা দিতে পারলেই আপনার সফল হবার সম্ভাবনা। ফরম পূরণ করা নিয়ে বিশেষ কোন সুবিধা আপনি পাবেন না। তবে both cadre এ ফরম পূরণ করলে অপশন বেশি থাকে- এটাই।
#৬. জেনারেল ক্যাডার কোনগুলো এবং টেকনিক্যাল ক্যাডার কোনগুলো ?
উত্তরঃ আপনি যেকোনো বিসিএস এর সার্কুলার একটু মনোযোগ দিয়ে পুরোটা পড়লে আপনার অনেক প্রশ্নেরই উত্তর পাবেন । জেনারেল ক্যাডারের মাঝে রয়েছে বিসিএস প্রশাসন, পুলিশ, ফরেন এফেয়ারস, কাস্টমস, ট্যাক্স, অডিট, ইকনোমিক, ফুড, সমবায়, আনসার, ডাক, রেলওয়ে ইত্যাদি । আর টেকনিক্যাল ক্যাডারে পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি আপনার graduation এর বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট জব পাবেন যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারী কলেজের
বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাষক, কৃষি অফিসার, মৎস্য অফিসার ইত্যাদি ।
#৭. বিসিএস পরীক্ষার জন্য দৈনিক কয় ঘণ্টা করে স্টাডি করা উচিত ?
উত্তরঃ পরে দেব।
#৮. প্রিলির জন্য কি কি বই পড়তে হয় ?
উত্তরঃ পরে দেব।
#৯. Both cadre এ পরীক্ষা দিলে কি বেশি পরীক্ষা দেয়া লাগে ?
উত্তরঃ হ্যাঁ। আপনার graduation এর সাবজেক্টের ১ম পত্র আর ২য় পত্র এই ২ টি ২০০ নাম্বারের পরীক্ষা আপনাকে অতিরিক্ত দিতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা সিলেবাস থাকে ।
#১০. Both cadre এ কি সবাই পরীক্ষা দিতে পারবে ?
উত্তরঃ Graduation এর বিষয়ের সাথে related টেকনিক্যাল ক্যাডার থাকলে পরীক্ষা দিতে পারবে । এই হিসেব অনুযায়ী সবাই পারে না ।
#১১. জাতীয় ভার্সিটি থেকে কি বিসিএস দিতে পারে? সেখান থেকে কি ক্যাডার হয় ?
উত্তরঃ অবশ্যই পারবে এবং অবশ্যই ক্যাডার হয়। যার পরীক্ষা ভাল হবে তারই সফল হবার সম্ভাবনা বেশি। কে কোথায় কোন বিষয়ে পড়েছে এটা ফ্যাক্টর না । ফ্যাক্টর হচ্ছে ওই মানসিকতা থেকে আপনি বের হতে পেরেছেন কি-না।
সবশেষে, আপনার সার্বিক মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি।
[বিঃদ্রঃ লেখার কিছু অংশ রবিউল আলম লুইপা এর কাছ থেকে ধার করা। কোন ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন।]
—————-
মো: মহসিন