সুস্থ থাকতে দৈনন্দিন জীবনে যা যা করবেন ?

পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ সর্বদা সুস্থ থাকতে চায়। সুস্থতা যে কত বড় নেয়ামত তা কেউ অসুস্থ না হলে উপলব্ধি করতে পারে না। সুস্থ থাকতে চাইলে আপনার নিচের কাজ গুলো অবশ্যই করা উচিত।

১) ভোরে ঘুম থেকে উঠাঃ

আপনাকে পাখির জাগার পূর্বে ঘুম থেকে জেগে উঠতে হবে।
ভোরে ঘুম থেকে উঠলে ভোরের বাতাস আপনার শরীরে লাগে যা আপনার মস্তিষ্ক ও চোখ কে সতেজ ও নির্মল রাখে।
সকালের সূর্যের আলো অর্থাৎ মিষ্টি রোদ আপনার শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করে।
যুক্তরাজ্যের একদল চিকিৎসকের গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষকগণ ৩৮ থেকে ৭৩ বছর বয়সী ৪ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষের উপর গবেষণা করে বলেছেন,যারা নিয়মিত ভোরে ঘুম থেকে উঠেন তাদের গড় আয়ু সাড়ে ছয় বছর বেশি তাদের থেকে যারা রাত জাগে বা দেরি করে ঘুম থেকে উঠে।
যারা ঘুম থেকে দেরি করে উঠে তাদের মৃত্যুর হার বেশি।
ভোরে ঘুম থেকে না উঠে দেরি করে উঠলে বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক জটিলতার স্বীকার হতে হয় যা সুস্থ থাকার পথে বাঁধা হয়ে কাজ করে।তাই,সুস্থ থাকতে চাইলে ভোরে ঘুম থেকে উঠার কোন বিকল্প নেই।

২) খালি পেটে পানি পান করুন।

খালি পেটে এক/দেড় গ্লাস পানি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে অনেকটা বেঁচে থাকা যায় এবং শরীর সুস্থ রাখতে কাজ করে।
একটু দৌড়াদৌড়ি করতে পারেন এতে আপনার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

৩) সকালের খাবারের তালিকা

সকালের খাবারের তালিকায় সুষম পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার রাখুন।
যা আপনার দেহের সবরকম পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে যার কারণে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন। খালি পেটে চা,পান খাবেন না।
প্রতিদিনের খাবারে তালিকায় খেজুর, দুধ, কিসমিস, জলপাই,মধু,কালোজিরা,মাসরুম,লাউ, শসা,তরমুজ এই ধরণের খাবার গুলো অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন।এই খাবারগুলো দেহের জন্য অনেক উপকারী এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। সুস্থ থাকতে খাবার গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৪) খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পান

খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পান করবেন না।কারণ,এতে খাবার পরিপাক প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়।
খাবার খেয়ে শেষ করার ৩০ মিনিট পর পানি পান করুন।

৫) সুস্থ থাকতে হলে দুপুর ২ টার মধ্যে দুপুরের খাবার খেতে হবে। খাবার পর একটু শুয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন।
দুপুরের খাবার দেরি করে গেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে।
রাতের খাবার ৮ টার মধ্যে খেতে হবে।সুস্থ থাকতে হলে খাবার শেষ করে সাথে সাথে বিছানায় শুয়ে পড়া যাবে না।খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা পর ঘুমাতে যেতে হবে তাহলে,রাতের ঘুমের কোন সমস্যা হবে না এবং ঘুমের মধ্যেই পরিপাকের কাজ সংঘটিত হবে যা সুস্থ থাকতে প্রয়োজন।

৬) বাইরের কড়া রোদ থেকে দৌড়ে এসে পানি পান করা যাবে না। এরকম করলে শরীর নিজের অবস্থার সাথে তৎক্ষনাৎ খাপ খাওয়াতে পারে না।
যার কারণে শরীরের কার্যক্ষমতার উপর প্রভাব পড়ে। যা সুস্থ থাকার পথে অন্তরায়।
সুস্থ থাকতে হলে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে।

৭) ধূমপান, মদ্য পান থেকে বিরত থাকতে হবে।

সুস্থ থাকতে চাইলে অবশ্যই এটি পরিহার করতে হবে। ধূমপান স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।
ধূমপান,মদ্য পান করা হচ্ছে বদ অভ্যাস। এগুলো করার কারণে ক্যান্সার,হৃদরোগের সৃষ্টি হয়।

৮) তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে হবেঃ

গবেষণায় প্রমাণিত যারা রাতে অনিয়মিতভাবে দেরিতে ঘুমায় তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
যারা রাত জাগে তাদের ৯০% বিভিন্ন মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৩০%।
রাত জাগলে স্নায়বিক সমস্যা, অন্ত্রের রোগ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।তাই সুস্থ থাকতে হলে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
অপরদিকে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ঘুমাতে গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস পায়,এবং যারা দেরিতে ঘুমায় তাদের চেয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা যায়।
উপরোক্ত নিয়মগুলো খুব সহজেই অনুসরণ করা যায় এবং নিয়মগুলো দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *