জাল পাসপোর্ট/টাকা শনাক্তকরণ এবং অতিবেগুনি রশ্মির বর্ণালিমিতি
Detecting of fake taka or passport and UV spectroscopy
মূলতত্ত্বঃ 200–375 ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণকে অতিবেগুনি রশ্মি বলা হয়। দৃশ্যমান রশ্মির (400–800 nm) চেয়ে শক্তিশালী হওয়ায় এ রশ্মি (UV) খালি চোখে দেখা যায় না। আণবিক পদার্থের উপর যখন অতিবেগুনি রশ্মি আপতিত হয়, তখন পরমাণুর শেষ স্তরের ইলেকট্রন ঐ শক্তি শোষণ করে উচ্চ কোনো শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হয় ফলে ইলেকট্রনীয় বর্ণালি সৃষ্টি হয়। একটি নির্দিষ্ট অণু একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকিরণ শোষণ করে। তাই শোষিত বর্ণালির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ব্যবহার করে ঐ অণুর গঠন বা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
জাল টাকা বা জাল পাসপোর্ট সনাক্তকরণে UV রশ্মির ব্যবহার
Use of UV – ray for detecting of fake taka or passport
প্রতিপ্রভ বা ফ্লোরোসেন্স পদার্থ
Fluorescence
যে সকল পদার্থ UV অঞ্চলের 200–375 ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট বিকিরণ (রশ্মি) শোষণ করে কিন্তু 400–780 ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট দৃশ্যমান বর্ণালি বিকিরণ করে, সে সকল পদার্থকে প্রতিপ্রভ পদার্থ বা ফ্লোরোসেন্স পদার্থ বলে।
মূলতত্ত্বঃ প্রতিটি দেশের টাকায় সেই দেশের স্বকীয় কিছু প্রতীক বা চিহ্ন প্রতিপ্রভ বা ফ্লোরোসেন্স জাতীয় পদার্থের কালি দ্বারা অংকিত থাকে, যা খালি চোখে সাধারণ আলোতে দেখা যায় না কিন্তু অতিবেগুনি রশ্মির (UV) নিচে টাকার নোট ধরা হলে, টাকায় গায়ে যে প্রতিপ্রভ বা ফ্লোরোসেন্স পদার্থের প্রলেপ থাকে তার যোজ্যতা স্তরের ইলেকট্রন UV রশ্মি হতে শক্তি শোষণ করে উত্তেজিত হয়ে উচ্চ শক্তি স্তরে চলে যায়।
UV রশ্মি হতে টাকাটি সরিয়ে নিলে উত্তেজিত ইলেকট্রনের বেশ কিছু শক্তি তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
শোষিত শক্তির অবশিষ্ট অংশের বিকিরণ ঘটে এবং ইলেকট্রন নিম্ন শক্তিস্তরে ফিরে আসে।
অবশিষ্ট শক্তির যে বিকিরণ ঘটে তা অপেক্ষাকৃত দুর্বল হওয়ায় তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় এবং তা সাধারণত দৃশ্যমান অঞ্চলের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে পরিণত হয়। তাই UV রশ্মি প্রক্ষেপ করার পর টাকাটি অন্ধকারে নিলে উত্তেজিত ইলেকট্রন হতে যে স্বল্প শক্তির বিকিরণ ঘটে তা দৃশ্যমান বর্ণালির বিচ্ছুরণ রূপে দেখা যায় এবং সংশ্লিস্ট প্রতীক বা চিহ্ন চোখে ধরা পড়।
সাধারণত বিভিন্ন দেশের টাকা তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো বিভিন্ন ধরনের প্রতিপ্রভ বা ফ্লোরোসেন্স পদার্থ।
এটি ব্যবহারের প্রধান কারণ হলো টাকাকে জালিয়াতের হাত থেকে রক্ষা করা।
প্রতিপ্রভ পদার্থের ব্যবহার
এক এক দেশের টাকায় এক এক ধরনের প্রতিপ্রভ পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
যখন টাকার উপর অতিবেগুনি রশ্মি আপতিত করা হয় তখন নির্দিষ্ট বর্ণের রশ্মি বিকিরিত হয় ।
যা দেখে টাকাটি জাল না আসল তা বুঝা যায। একইভাবে বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টে সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্রতিপ্রভ পদার্থ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।
তাই বিমান বন্দরে একটি ইউভি (UV) রশ্মির detector ব্যবহার করা হয় যা পাসপোর্টের উপর একটি UV রশ্মি নিক্ষেপ করে।
রশ্মি নিক্ষেপের পর যদি পাসপোর্ট হতে একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বর্ণের দৃশ্যমান আলোকচ্ছটা ফুটে ওঠে তবে পাসপোর্টটি আসল বলে ধরা হয়।
যেমন: বাংলাদেশের পাচঁশত টাকার নোটে UV রশ্মি শোষণ করে এমন পদার্থ দ্বারা তৈরি সরু একটি ফিতার ন্যায় শাস টাকার কাগজের মধ্যে দেয়া থাকে।
যার উপর রশ্মি আপতিত হলে নির্দিষ্ট বর্ণ বিছুরণ করে। যার থেকে টাকাটি আসল না নকল তা বুঝা যায়।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjMhVoFSYZJXuipZ-SalTsakYYPwmlQlPk3OWu2h-3cdK8B7DMVMshbi2R6q63mAgbO7g4HdeIYK7ehogdjICcPdui4P5FfqyvD5IOvYiY0Pdt_EtYfNqbnZ53I9lMH-9mNaQGwhVf4F6NdaGiySV89t2V-I3anztCJWRUxFbRXFvQocIZMlLWxgWQq/s16000/UV-%E0%A6%B0%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%B6%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%A3-2-1024x576.jpg)