নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য যারা অনলাইনে জব কিংবা ফ্রি-ল্যান্সিং করে আয় করতে চান তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি অন্যতম মাধ্যম। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা মোটামুটি সহজই বলা চলে। তাহলে আমরা প্রথমেই জেনে নেই,
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
একজন অ্যাফিলিয়েটর হিসেবে আপনার কাজ হচ্ছে কোন একটা নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট বা ওয়েবসাইট লিংক প্রমোট করা। অর্থাৎ আপনি যখন কোন সংস্থার বা কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রচার করেন তখন কেউ যদি আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে বা এর মাধ্যমে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করে, তখন প্রত্যেকটি ক্লিক বা ক্রয়ের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন। অর্থাৎ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি আয় করতে পারবেন। এটিই হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধাঃ
- অ্যাফিলিয়েটর হওয়ার জন্য কোন টাকা খরচ করতে হয় না। ফ্রিতেই একজন অ্যাফিলিয়েটর হিসেবে আপনি নিজেকে দাঁড় করাতে পারবেন।
- পর্যাপ্ত আয় করা যায়।
- আপনাকে নিজের পণ্য তৈরি করতে এবং তালিকা ম্যানেজ করতে হবে না।
- আপনি নিজেই নিজের মালিক। আপনি আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী যেকোনো সময় কাজ করতে পারেন। এর জন্য নির্ধারিত কোন সময় নেই। আপনি চাইলে যতদিন খুশি ছুটি কাটাতে পারেন।
- আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী প্রোডাক্ট প্রচার করতে পারবেন।
- কম খরচেই শুরু করা যায় ।এর জন্য অল্প বিনিয়োগ দরকার।
- কোনো ঝুঁকি নেই।
- যেকোনো জায়গায় বসে আপনি কাজ করতে পারবেন৷
- এটি ব্লগার, ফ্রিল্যান্সার, ব্যাচেলর, ও ব্যবসায়ীদের জন্য আদর্শ।পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই এটি সহজেই করতে পারে ইত্যাদি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে আপনাকে অত্যন্ত পরিশ্রমী ওকৌশলী হতে হবে। আপনার প্রতিটা পোস্টেই যদি বারবার লিংক দেন,তবে ভিজিটররা, আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যারা অবশ্যই বিরক্ত হবে। তাই, সবকিছুর মধ্যে একটা ব্যালেন্স রেখে কাজ করতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার কৌশল
ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে আয় করার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য অনেকেই এখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর উপর আগ্রহী।খুব সহজেই কীভাবেঅ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করা যায় তার উপায়/কৌশলগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
১। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ প্রবেশ করুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে এই মার্কেটে প্রবেশ করতে হবে। এর জন্য আপনাকে যা যা করতে হবে তা নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-
(ক) বিজনেস মডেল সিলেক্ট করুন
দুই ধরনের বিজনেস মডেল আছে।
- রিসোর্স সাইট এবং
- রিভিউ সাইট।
আপনি যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কাজ করতে চান, তার সাথে আপনি কতটা পরিচিত তার ওপর নির্ভর করে আপনাকে মডেল নির্বাচন করতে হবে।
- ব্যবসায়ীর ওয়েবসাইট, ব্যানার, অ্যাডভারটাইজমেন্ট ইত্যাদি রিসোর্স সাইটের অ্যাফিলিয়েট লিংকে দেওয়া থাকে। কাস্টমার বা ক্রেতাদের ওয়েবসাইটের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য এই বিজনেস মডেলটিকে সবসময় আপডেট রাখতে হয় এবং ভালো কনটেন্ট পোস্ট করতে হয়।
- রিভিউ সাইটে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের রিভিউ দেয়া থাকে। প্রতিটা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসে রিভিউর লিংক বা ব্যানার যুক্ত থাকে।যাতে সেখান থেকে ওয়েবসাইটে খুব সহজেই কাস্টমার আসতে পারে। এই মডেলের একটা বিশেষ গুণ হচ্ছে এটাকে সচরাচর আপডেট করার প্রয়োজন পড়ে না।
(খ) ওয়েবসাইট তৈরি করুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কাজ করার জন্য আপনার নিজস্ব একটা প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন (যেমন- নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ব্লগ) যেখানে আপনি আপনার ইচ্ছে মত প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের লিংক পোস্ট এবং অ্যাডভারটাইজ করতে পারবেন। আপনার যদি একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে থাকে তাহলে সেই প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে অ্যফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে আপনি অতিরিক্ত আয় শুরু করতে পারেন। যদি না থাকে তাহলে এটি তৈরি করে নিতে হবে।
- ব্লগ এর অন্যতম সুবিধা হচ্ছে এটা ফ্রি অপারেট করা যায়। যেখানে কিছু কিছু ওয়েবসাইট ফি নিয়ে থাকে। GoDaddy.com এবং Hostgator জাতীয় সাইটগুলো স্বল্প মূল্য রাখে।
- একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কোন কোম্পানিতে জয়েন করতে চাইলে যারা অনলাইন মার্কেটিংয়ে বিশেষজ্ঞ সেসব কোম্পানি সিলেক্ট করা উচিত । যেমন- MoreNiche. এ কোম্পানিগুলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের অ্যাডভারটাইজ করার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সহায়তা করে।
- আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট না থাকলেও এমন অনেক ওয়েবসাইট আপনি পাবেন যেগুলো আপনাকে পে-পার-ক্লিক (PPC) হিসেবে কমিশন দিবে। এক্ষেত্রে আপনি প্রোডাক্টের এড লিংক নিজের ফেসবুকে পোস্ট করতে পারবেন। কেউ যদি সেই লিঙ্কে ক্লিক করে বা ক্লিক করে প্রোডাক্ট ক্রয় করে তার ওপর ভিত্তি করে আপনাকে নির্দিষ্ট কমিশন দেয়া হবে।যেমন- Associate Programs, Affiliates Directory, E-commerce Guide এবং Link Share অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কগুলো এ ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে।
গ) লিংক অ্যাডের জন্য সঠিক স্থান সিলেক্ট করুন
প্রায় ক্ষেত্রেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররাই একটা নির্দিষ্ট স্থান বা বিশেষ সীমানা সিলেক্ট করে নেয়। যেখানে প্রাোডাক্ট বা সার্ভিসের এড দিয়ে আয় করা যায়।
- এমন জায়গা সিলেক্ট করবেন না যেখানে আপনি নিজেকে যথেষ্ট অভিজ্ঞ বলে মনে করেন না।তাই জায়গা সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে এমন জায়গা সিলেক্ট করবেন যেটাতে আপনার যথেষ্ট আগ্রহ আছে।
- শুরু থেকেই দায়িত্ববান হওয়াটা খুব জরুরি। তাই জায়গা সিলেক্টের ক্ষেত্রে এমনটা সিলেক্ট করা উচিত যেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে অনেক সময় কাজ করা যায়।
ঘ) প্রোডাক্ট বা সার্ভিস চয়েজ করে নিন
জায়গা সিলেক্ট করার পরেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার জন্য আপনাকে আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সিলেক্ট করে নিতে হবে।
- Commission Junction কোম্পানি নতুনদের জন্য একটা ভালো প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। কারণ এটি ঐতিহ্যবাহী প্রোডাক্ট বা সার্বিসের অ্যাডভারটাইজমেন্টে আগ্রহী।
- মার্কেটাররা যদি ডিজিটাল( যেমন- ই-বুক, সফটওয়্যার..) কনটেন্টের প্রতি আগ্রহী হয় তবে তাদের নিম্নলিখিত কোম্পানি গুলো সিলেক্ট করে উচিত –
- Amazon
- Clickbank
- E-junkie এবং
- PayDotCom
- পে-পার- ক্লিক মার্কেটিংয়ের জন্য উপযোগী হচ্ছে “Google Adsense”.অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার জন্য পে-পার-ক্লিকে কম কমিশন পাওয়া যায়। এর একটি সুবিধা হচ্ছে , এখানে খুব একটা অ্যাকটিভ অ্যাফিলিয়েট হবার দরকার নেই।
ঙ) অ্যাফিলিয়েটর খুঁজে নিন এবং তাদের সাথে কাজ করুন
আরো অভিজ্ঞ প্রাপ্ত হওয়ার জন্য অ্যাফিলিয়েটদের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যাফিলিয়েটদের সাথে নিম্নোক্ত উপায়ে যোগাযোগ করতে পারেন :-
- ই-মেইলের মাধ্যমে বা বিভিন্ন ব্লগার অথবা অনলাইন মার্কেটারদের সাথে যোগাযোগ করে একে অপরের প্রোডাক্টের অ্যাডভারটাইজ দিতে পারেন।
- সফল অ্যাফিলিয়েটদের সাথে যেগাযোগের জন্য বিভিন্ন ফোরাম বা যৌথ যোগাযোগ অথবা অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক ( যেমন : Clickbank, Commission Junction ইত্যাদি ) ব্যবহার করতে পারেন।
চ) অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে ট্রাফিক ড্রাইভ করান
যখন আপনি একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করাবেন এবং বিভিন্ন নিরাপদ অ্যাফিলিয়েটদের সাথে কাজ করবেন তখন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে ট্রাফিক ড্রাইভ করানোর দরকার পড়বে। অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। এর মাঝে সবচেয়ে সহজ ও সফল একটি হচ্ছে, ভালো কোন একটা ব্লগ পোস্ট বা ওয়েব আর্টিকেল লিখে সাবসক্রাইবারদেরকে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে ইনভাইট করা। এছাড়াও আছে :-
- বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ফ্রি কনটেস্টের ব্যবস্থা করা।
- ভাইরাল মার্কেটিং ব্যবহার করা।
- এর মাঝেই অনেক ট্রাফিক ড্রাইভ করা কোন ফ্রি লিংক ওয়েবসাইটে সিকিউর করা।
২। বিজনেস ডেভলপ করা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ভালো আয় করতে হলে অবশ্যই ধীরে ধীরে আপনার বিজনেস ডেভলপ করতে হবে। অ্যাফিলিয়েট বিজনেসকে ভালভাবে ডেভেলপ করার জন্য নিম্নের কাজগুলো করতে পারেন-
ক) নিজে স্টাডি করুন এবং অন্যান্য অ্যাফিলিয়েটদের থেকে শিখুন
একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে যে কোন অনলাইন কমিউনিটি বা ফোরামে জয়েন করে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াতে পারেন এই অনলাইন রিসোর্সগুলোতে সম্পূর্ণ ফ্রি জয়েন করা যায়।কয়েকটি ফ্রি রিসোর্স হলোঃ
- Digital Point
- aBestWeb এবং
- Warrior Forum
খ) সম্পর্ক স্থাপন করুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে বা সাফল্য লাভ করার জন্য ধৈর্যের সাথে প্রচুর কাজ করতে হয়। মার্কেটারকে অবশ্যই অন্যান্য অ্যাফিলিয়েটদের সাথে একটা সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়।
- একেক জনের কাজের ধরন একেক রকমের হয়। তাছাড়া প্রত্যেকের সাথে যোগাযোগ রাখার মাধ্যমও ভিন্ন ভিন্ন। আপনার অ্যাফিলিয়েট পার্টনার যে ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা পছন্দ করে সে সম্পর্কে আগে জেনে নিন। তারপর সকলের পছন্দের উপর প্রাধান্য দেওয়া আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
- আপনার অ্যাফিলিয়েটের কী প্রয়োজন এবং আপনার কাছ থেকে তাঁরা কী আশা করে সেগুলো আগে জানুন।
- আপনার পরিচিত অ্যাফিলিয়েটরা যেভাবে তাদের ওয়েবসাইট এবং সার্ভিসের উন্নতি করছে তা নিয়ে রিসার্চ করুন।
- আপনার প্ল্যাটফর্মটার উন্নতি করতে তাদের কাছে পরামর্শ চান।
গ) আপনার টার্গেটেড ট্রাফিক আকর্ষণ করুন
অর্থোপার্জনের মূল কাজ হ’ল লোকজনকে আপনার অ্যাফিলিয়েট সংস্থাগুলির লিঙ্কগুলিতে ক্লিক করার জন্য চাপ দেওয়া। অর্থাৎ, আপনাকে দর্শকদের আকর্ষণ করতে হবে।এজন্য কেবল নিজের ওয়েবসাইট ভিজিট করানোই যথেষ্ট নয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় তখনি হবে যখন কেউ আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করবে বা ক্লিক করে প্রোডাক্ট ক্রয় করবে। এর জন্য চারটা পদ্ধতি রয়েছে :-
- পেইড অ্যাডভারটাইজিং
- ফ্রি অ্যাডভারটাইজিং
- আর্টিকেল মার্কেটিং
- ই-মেইল মার্কেটিং
- পেইড অ্যাডভারটাইজিং: এখানে অ্যাড কপি, গ্রাফিক্স এবং উচ্চমানের ক্লিকযোগ্য লিংকের মিশ্রণ প্রয়োজন। Google’s AdSense এক্ষেত্রে কার্যকর।
- ফ্রি অ্যাডভারটাইজিং: Craigslist অথবা US Free Ads এর মত ফ্রি ওয়েবসাইটে লিংক এবং অ্যাডভারটাইজমেন্টে ফ্রি আয় করা যায়। এখানে যেকেউ আপনার লিংকে ক্লিক করলে দুজনই অর্থাৎ, আপনি এবং আপনার ওয়েবসাইট ( যেমন – Craigslist) উভয় ক্ষেত্রেই কমিশন যোগ হবে।
- আর্টিকেল মার্কেটিং: আর্টিকেল পাবলিশের জন্য অনেক মার্কেটাররা Ezine Articles এর মতো ওয়েবসাইট ব্যবহার করে। এখানে একটা আলাদা ‘resource box’ থাকে। অন্যান্য ব্লগার বা ওয়েবসাইট এই আর্টিকেল পুনরায় পাবলিশ করলে যে মার্কেটার সর্বপ্রথম এটি পাবলিশ করেছিল সার্চ ইঞ্জিনে তার র্যাঙ্কিং হবে ওপরে।
- ই-মেইল মার্কেটিং: ই-মেইল মার্কেটিং এর জন্য, অ্যাফিলিয়েট ব্যবসায়ীরা ওয়েবসাইট ভিজিটরের জন্য একটি ইমেল সাবস্ক্রিপশন অপশন রাখে। এ অপশন থেকে মার্কেটার ভিজিটরদের নাম এবং ই-মেইল অ্যাড্রেস পায়। মার্কেটার এবং ভিজিটরের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে এটি সাহায্য করে।
ঘ) একটা পে-পার-ক্লিক (PPC) অ্যাড লিখুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার জন্য পে-পার-ক্লিক সবচেয়ে সহজ উপায়। এটি একটি ব্যবসায়ীক চুক্তি। এর মাধ্যমে আপনি ব্যবসায়ীর ওয়েবসাইটে যে ক্রেতাদের পাঠাবেন তারা সেখান থেকে ক্রয় করুক বা না করুক আপনি সেখান থেকে কমিশন পাবেন। একটা ভালো পে-পার-ক্লিক অ্যাডে যা রাখবেন :-
- ভোক্তারা সচরাচর যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয় সেসব সমস্যা এড করুন এবং সেটার সমাধানের বিষয়ে নজর রাখুন অথবা আপনার প্রোডাক্টের লাভজনক দিক উল্লেখ করুন।
- এমন কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা ট্রাফিক ড্রাইভ করতে সাহায্য করে।
- এমন ভাবে পাবলিশ করুন ভোক্তা যেন নিজ থেকেই আপনার লিংকে ক্লিক করে।
ঙ) সংখ্যার চেয়ে গুণগত মানের দিকে বেশি লক্ষ্য করুন
বেশি সংখ্যক অ্যাফিলিয়েট থাকলেই যে আপনি বেশি আয় করবেন এরকম ভাবার কোন কারণ নেই । অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল হওয়ার চাবিকাঠি হচ্ছে সঠিক অ্যাফিলিয়েটদেরকে দিয়ে প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানো। ওয়েবসাইট ছোট বা বড় যায় হোক না কেন, অ্যাফিলিয়েটদের সাথে সুসম্পর্ক রাখাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৩। আপনি কী আশা করছেন সেটা জানুন
আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে আপনার টার্গেট সেট করে নিতে হবে। অর্থাৎ আপনি কী কী আশা করেন, কি করবেন , কিভাবে কাজ করবেন ইত্যাদি ঠিক করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি কী কী করতে পারেন নিম্নে তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল-
(a) বেশি পরিশ্রমী হতে আশা করুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে এসে অনেকেই এক লাফে খুব দ্রুত ধনী হবার আশা করে। কিন্তু ইনকাম করা খুব সহজ নয়। বিশেষ করে প্রথম দিকে এখানে অনেক পরিশ্রমের প্রয়োজন।অনেক মার্কেটাররা সপ্তাহের ৭ দিনই দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে পরিশ্রম ।
→ সবসময় খেয়াল রাখবেন, এই ক্ষেত্রটা অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক এবং অনেক মার্কেটিং কোম্পানি নিজেদের মার্কেটার দিয়েই নিজেদের কোম্পানি ম্যানেজ করে।এজন্য আপনাকে অধিক পরিশ্রমী হতে হবে।
(b) এটা কীভাবে কাজ করে জানুন
একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের নিজস্ব আলাদা অ্যাফিলিয়েট লিংক থাকে। এটা কাস্টমারদের ওপর কোন প্রভাব ফেলে না। এতে করে নির্ধারিত প্রোডাক্ট রেটও চেঞ্জ হয় না। কেউ যদি ওই লিংকে ক্লিক করে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করে তখন অ্যাফিলিয়েট সেই ক্রয়ের উপর নির্ধারিত কিছু অংশ কমিশন পাবে। অ্যাফিলিয়েটর হিসেবে আপনি কী পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন তা ওই প্রোডাক্টের দাম এবং কমিশন পার্সেন্টেজের ওপর নির্ভর করবে।
(c) আপনার ডেমোগ্রাফি বুঝুন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে অবশ্যই আপনার একটা টার্গেট ডেমোগ্রাফি থাকবে। আপনার প্রোডাক্ট বিজ্ঞাপন এমন ভাবে দিতে হবে যেন টার্গেট ডেমোগ্রাফি সংখ্যক ভিজিটর এড দেখেই আপনার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে বাধ্য হয় ।
মূল কথা হচ্ছে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে হলে আপনাকে হতে হবে অদিক পরিশ্রমী এবং ধৈর্যশীল। এখানে একটা ভালো প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। টার্গেট অনুযায়ী অধিক পরিশ্রম এবং কৌশল অনুযায়ী কাজ করলে আপনি খুব সহজেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে পারবেন।