গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি? গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি কাজে লাগে?
বর্তমান সময়ে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর জনপ্রিয়তা তুমুলভাবে বাড়ছে। তাই আজ আমরা গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি? গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি কাজে লাগে? সে ব্যপারে জানার চেষ্টা করব।
আগে আমরা অনেক সময় ইংলিশ মুভিতে দেখতাম সেখানে বিভিন্ন রোবটস, এলেক্ট্রনিক ইকুইপমেন্ট ও ডিভাইসগুলোকে ভয়েসের মাধ্যমে নির্দেশ দেয়া হতো। একে বলা হতো ভয়েস বেজড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
কেবল শব্দের মাধ্যমে একটা ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে নিয়ন্ত্রণ করা বা কাজ করানো যাবে বাস্তব জীবনে তা কখনো কল্পনা করি নি। প্রযুক্তির উন্নয়নে আজ সেটাও সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে আমরা আমাদের ঘরে ও দপ্তরে এ ধরনের আর্টিফিশিয়াল প্রযুক্তির ব্যবহার করছি। যেমন – Alexa, Siri, Google Assistant…. etc.
বর্তমান সময়ে এ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলো আমরা সহজে নিতে পারছি গুগল এর গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট দ্বারা। আপনার স্মার্টফোনে যদি Google Assistant থাকে তাহলে আপনি ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে ফোনকে না ছুঁয়ে আদেশ দিতে পারবেন। কিন্তু অনেকের জানেনা গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি? চলুন তাহলে আমরা এ বিষয়ে জেনে নেই। পড়ুন –
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট হল গুগলের নিজস্ব স্মার্ট ভয়েস কন্ট্রোল অ্যাসিস্ট্যান্ট যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর উপর কাজ করে। গুগলের এই ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট মোবাইল এবং স্মার্ট হোম ডিভাইস গুলোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
2016 সালে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করা হয়। এটি ভার্চুয়াল সহকারী নামেই বেশি পরিচিত। স্মার্ট ডিভাইসে সহকারী হিসেবে Google Assistant দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই গুগল সহকারীকে “ওকে গুগল” বললেই অন হয়ে যায়। এরপর নির্দেশ অনুযায়ী কোন কিছু করতে দিলেই Google Assistant তা করে দিবে।
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি কাজে লাগে?
Google Assistant নানাবিধি কাজে ব্যবহার করা যায়। এর নানারকম ফিচার আসছে। Google Assistant সেবায় একাধিক ভাষা সমর্থন সুবিধা যুক্ত হয়েছে। এটি বর্তমানে ইংরেজি, ফ্রান্স, জার্মানি, স্প্যানিশ, ইতালিয়ান, জাপানিজ, কুরিয়ান, পর্তুগীজ, থাই ইত্যাদি ভাষা সমর্থন করে। আরো ভাষা যুক্ত করার কাজ চলছে। গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারে। যেমন –
- মিউজিক কন্ট্রোল করা
- ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নেওয়া
- ইন্টারনেট সার্চের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা
- যে কোন অ্যাপস ওপেন করা
- টাইপ না করেই মেসেজ পাঠানো
- অ্যালার্ম ও টাইম সেট করা যায়
- ওয়েদার বিষয় জানতে পারবেন
- মোবাইলের নোটিফিকেশনগুলো আপনার জন্য পড়তে পারবে
- হ্যান্ড ফ্রি অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে ফোন কল করতে পারবেন
- ঘরের লাইট অন ও অফ করে দিতে পারে
- ওয়াইফাই চালু ও বন্ধ করার কাজ করতে পারে ইত্যাদি।
মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সেটিং চালু করবেন কিভাবে?
গুগল প্লে স্টোর বা আইফোনের অ্যাপস স্টোর থেকে Google Assistant সহজেই ডাউনলোড করতে পারবেন। পরে এন্ড্রয়েড ও আইফোন এ আলাদা আলাদা ভাবে ইন্সটল করতে হবে।
এন্ড্রয়েড মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করবেন কীভাবে?
এন্ড্রয়েড মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করার উপায় –
- প্রথমে আপনার স্মার্টফোনের গুগল অ্যাপ (Google App) ওপেন করুন।
- “More” অপশনে ট্যাপ করুন।
- এরপর Settings এ গিয়ে সেখান থেকে Google Assistant অপশনে যান।
- এবার Assistant ট্যাব এ আসুন
- এরপর Assistant ট্যাব এর নিচে থাকা “Phone” অপশনে চাপুন।
- সবার উপরে Google Assistant অপশন দেখতে পাবেন সেখান থেকে “Enable” করে দিন।
- সবশেষে Voice Match এর নিচে থাকা Hey Google অপশনে ট্যাপ করে “Enable” করে নিন।
ব্যাস আপনার মোবাইলের Google Assistant চালু হয়ে গেছে। সঠিকভাবে সেটিংস ঠিক হয়েছে কিনা তা একবার দেখে নিন। এর জন্য আপনার মোবাইলের সামনে Ok Google বলে কিছু কমান্ড দিন। যেমন – “Hey Google, open music on YouTube.”
আইফোনে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করবেন কীভাবে?
আইফোনে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করার উপায় হলো –
- প্রথমে Google Assistant App এ ট্যাপ করুন।
- এরপর App এর ভেতরের সব নির্দেশ অনুসারে কাজ করুন।
- “Ok Google” অপশন চালু করুন
- ওকে গুগল চালু করার পর অ্যাপ আপনাকে “Ok Google” বলতে হবে।
- এরপর আপনি ৪ বার “Ok Google” কমান্ড দিন
- এসব করার পর “Ok Google” কমান্ড ব্যবহার করে Google Assistant এক্টিভ করুন। ব্যাস হয়ে গেল।
নিজের কণ্ঠ কীভাবে সংরক্ষণ করবেন?
অন্য কারো কণ্ঠ শুনে গুগল যাতে বিভ্রান্ত না হয় এ কারণে নিজের কন্ঠস্বর সংরক্ষণ করে রাখুন। গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টে আপনার কণ্ঠস্বর সংরক্ষণ করতে নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করুন –
- প্রথমে অ্যাপ ওপেন করুন
- অ্যাপের নিচে ডান কোণের বার তিনটিতে ট্যাপ করে নতুন ট্যাব খুলুন।
- এরপর ফোনের Settings অপশন নতুন ট্যাবে ওপেন করুন।
- Google Assistant অ্যাপের Settings অপশনও খুলুন।
- ফোন অপশনে ক্লিক করে Ok Google অন করুন।
- পরে অ্যাপ আপনাকে Ok Google কমান্ড করতে বলবে।
- এরপর Hey Google কমান্ড চারবার ব্যবহার করুন।
- এরপর “Right” অপশনে ক্লিক করে ভয়েজ সেইভ করুন।
ভয়েস সেইভ করার সাথে সাথে এটি দিয়ে ফোন লক করতে পারবেন যা আপনার কন্ঠের মাধ্যমেই খুলতে পারবেন।