খাদ্য দূষণ বা ফুড পয়জনিং কি? What is Food Poisoning in Bengali/Bangla?
খাদ্য দূষণ বা Food Poisoning হলো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক খাবারে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে যা খেলে বমি, পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে।
খাদ্য দূষণ বা ফুড পয়জনিং কেন হয়?
অস্বাস্থ্যকর খাবার, জীবাণুযুক্ত খাবার, ময়লাযুক্ত থালা বাসনে খাবার খেলে খাদ্য দূষণ বা Food Poisoning হতে পারে।
- সানমোনেল্লা এক ধরনের Bacteria যেটি সাধারণত পাখী, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী জন্তুর অন্ত্রের মধ্যে থাকে। ভাল করে মাংস রান্না না করলে এই ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফলে এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করলে জ্বর, পেটে খিল ধরা, পেট খারাপ ইত্যাদি দেখা দেয়।
- ক্লাস্ট্রিডিয়াম বচুলিনাম ব্যাকটেরিয়া মাটিতে পাওয়া যায়। খাদ্যদ্রব্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বোতলে বা কৌটায় সংরক্ষণ না করলে এ ব্যাকটেরিয়া খাবারে মিশে শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং খাদ্য দূষণ ঘটাতে পারে।
- টক্সোপ্লাজমা গন্ডাই নামে এক ধরনের এককোষী জীবাণু আছে যা মাংসের সাথে মিশে শরীরে প্রবেশ করে থাকে এবং খাদ্য দূষণ ঘটায়। মাংস ঠিকভাবে রান্না না হলে এটি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে শরীর।
- খাবার সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে দীর্ঘক্ষণ রেখে দিলে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং এতে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া জীবাণুর সমাবেশ ঘটে। উক্ত খাবার খেলে Food Poisoning হয়।
খাদ্য দূষণ প্রতিরোধের উপায় কি?
- খাবার ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
- ভাল করে মাংস রান্না করে খেতে হবে।
- বোতলে বা কৌটায় সংরক্ষণ খাবার খেতে হবে।
- রাস্তার খোলা খাবার খাওয়া যাবে না।
- বেশি পিপাসা পেলে ডাব খেতে পারেন।
- পানি ফুটিয়ে খেতে হবে।
- বাসন-কোসন ভালোভাবে ধুতে হবে।
- খাওয়ার আগে হাত ভালো করে ধুতে হবে।
- দুধ, কলা, ফলমূল বেশি দিন পুরোনো হয়ে গেলে খাওয়া যাবে না।
- গরমের সময় হোটেলের খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কেননা, অনেক হোটেলেই স্বাস্থ্য-সচেতনতার বিষয়টি লক্ষ রাখা হয় না।
- যতটা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
- কয়েক দিন ধরে ফ্রিজে রাখা আছে এমন খাবার খাওয়াও ঠিক না।
- খাবার ঠিকমতো ঢেকে রাখুন, নয়তো বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ খাবারে বসে জীবাণু ছড়াতে পারে।
চিকিৎসা
আক্রান্ত হলে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগী যদি মুখে না খেতে পারে এবং অবস্থা যদি খুব জটিল হয়, তবে চিকিৎসকেরা শিরার মাধ্যমে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। কিছু রোগীর বেলায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফুড পয়জনিং রোধে নিজের সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।