আর্সেনিক কি? পানিতে আর্সেনিকের লক্ষণ কি কি ?

আর্সেনিক মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর এক ধরনের বিষ।
এর কোনো রং, গন্ধ ও স্বাদ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি লিটার পানিতে ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে তা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। পানিতে আর্সেনিক বিষ থাকলেও আমরা তা খালি চোখে দেখতে পাই না। এ কারণে আমরা না জেনেই অনেক সময় আর্সেনিক বিষ রয়েছে এমন নলকূপের পানি পান করি। আর এভাবে আর্সেনিক বিষ পান করার কারণে আমরা আর্সেনিকজনিত রোগে আক্রান্ত হই।
কোনো ব্যক্তির চুল, নখ ও চামড়া পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে, সে আর্সেনিকে আক্রান্ত কিনা। তবে একজনের শরীরে আর্সেনিকের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৬ মাস থেকে ২০ বছর অথবা এর চেয়েও বেশী বছর সময় লাগে এবং তিনটি পর্যায়ে লক্ষণগুলো দেখা দেয়। প্রথম পর্যায়ে অল্পমাত্রায় আর্সেনিকে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তা হলো : রোগীর গায়ে (যেমন বুকে, পিঠে, পেটে) কালো দাগ দেখা দেয়। চামড়ার রং কালো হয়ে যায় বা ছোট ছোট কালো দাগ হয়। হাত ও পায়ের তালু শক্ত খসখসে হয়ে যায় ও ছোট ছোট শক্ত গুটি দেখা দিতে পারে। পরে কালো কালো দাগ হয়। গায়ের চামড়া মোটা ও খসখসে হয়ে যায়।
বমি বমি ভাব এবং বমি হয়; পাতলা পায়খানা হয়। খাওয়া-দাওয়ায় অরুচি, রক্ত আমাশয়, মুখে ঘা ইত্যাদি দেখা দেয়। কখনো কখনো জিহবার উপর ও গায়ের ভিতর কালো হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ : চামড়ার বিভিন্ন জায়গায় সাদা, কালো বা লাল দাগ দেখা দেয়। হাত-পায়ের তালু ফেটে যায় ও শক্ত গুটি ওঠে। হাত-পা ফুলে ওঠে। তৃতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ: কিডনি, লিভার ও ফুসফুস বড় হয়ে যায় ও টিউমার হয়। হাত ও পায়ে ঘা হয়, পচন ধরে। চামড়া, মূত্রথলি, ফুসফুসে ক্যান্সার হয়। কিডনি ও লিভার অকেজো হয়ে যায়। জন্ডিস হয়। পেটে ও মাথায় ব্যথা হয়। রক্ত বমি হয়।
পানি ফুটালেও কি আর্সেনিক থেকে যায়? পানিতে আর্সেনিক থাকলে পানি ফুটালে কি অবস্থা পরিলক্ষিত হয়?
পানি ফুটালে আর্সেনিক যায় না। বরং পানি শুকিয়ে গেলে আর্সেনিকের ঘনত্ব আরো বাড়ে। তাই আর্সেনিকযুক্ত পানি ফুটিয়ে খাওয়া অনিরাপদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *