পদার্থবিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-৭)

প্রশ্ন-১। সুপ্ততাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন বস্তুর তাপমাত্রা পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় (কঠিন থেকে তরল বা তরল থেকে বায়বীয়) রূপান্তরিত করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে সুপ্ততাপ বলে।

প্রশ্ন-২। সন্ধি আকার কাকে বলে?
উত্তরঃ তেজস্ক্রিয় নমুনাটিকে গোলকের আকারে নেওয়া হয়, যাতে আয়তনের সাপেক্ষে বাইরের তলের ক্ষেত্রফল কম হয়। নমুনার ভরকে আগে থেকে হিসাব করা একটি ন্যূনতম ভর অপেক্ষা বেশি রাখা হয়। শৃঙ্খল বিক্রিয়া বজায় রেখে নিউক্লিয় বিভাজন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তেজস্ক্রিয় নমুনাকে যে ন্যূনতম আকারে নিতে হয়, তাকে সন্ধি আকার বলে।

প্রশ্ন-৩। কার্নো চক্র কাকে বলে?
উত্তরঃ ফরাসি বিজ্ঞানী সাদি কার্নো সকল দোষ ত্রুটি মুক্ত একটি ইঞ্জিনের পরিকল্পনা করেন। এ ইঞ্জিনের চার ঘাতবিশিষ্ট যে চক্রের মাধ্যমে কার্য সম্পাদন হয় তাকে কার্নো চক্র বলে।

প্রশ্ন-৪। প্রান্ত-সংশোধন কাকে বলে?
উত্তরঃ অনুনাদী অবস্থায় নলের খোলা মুখে একটা সুস্পন্দবিন্দু থাকে কিন্তু বিজ্ঞাননী র‌্যারে গাণিতিকভাবে দেখান যে, সুস্পন্দ বিন্দু একেবারে নলের খোলামুখে না থেকে, x = 0.3d উপরে অবস্থান করে; এখানে d হলো অনুনাদী নলের ব্যাস। এ কারণে অনুনাদী দৈর্ঘ্য নির্ণয়ে সংশোধন করতে হয়। একে প্রান্ত-সংশোধন বলে।

প্রশ্ন-৫। পরম শূন্য তাপমাত্রা কাকে বলে?
উত্তরঃ সর্বনিম্ন যে তাপমাত্রায় (-273.15°C) সকল গ্যাসের আয়তন তত্ত্বীয়ভাবে শূন্য হয়ে যায় তাকে পরমশূন্য তাপমাত্রা বলে।

প্রশ্ন-৬। দীপন ক্ষমতা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বিন্দু উৎস থেকে প্রতি সেকেন্ডে কোনো নির্দিষ্ট দিকে একক ঘনকোণে যে পরিমাণ আলোকশক্তি নির্গত হয় তাকে ঐ উৎসের দীপন ক্ষমতা বলে।

প্রশ্ন-৭। এক রন্টজেন কাকে বলে?
উত্তরঃ এক রন্টজেন বলতে সে পরিমাণ বিকিরণ বোঝায় যা স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় এক মিলিমিটার বায়ুতে এক স্থির বৈদ্যুতিক আধানের সমান আধান উৎপন্ন করতে পারে।

প্রশ্ন-৮।  এডিসন ক্রিয়া কি?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী এডিসন তাঁর আবিষ্কৃত বাল্বের ফিলামেন্ট সাপেক্ষে প্লেটকে যখন ধনাত্মক বিভব দেন তখন ভ্যাকুয়াম টিউবের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চলে। কিন্তু প্লেটকে ঋনাত্মক বিভব দিলে তড়িৎপ্রবাহ চলে না। তিনি বিষয়টির ব্যাখ্যা এভাবে দেন, যেহেতু উত্তপ্ত ফিলামেন্ট থেকে নিঃসৃত আধান ধনাত্মক প্লেটের দিকে যায়, সুতরাং এ আধান ঋনাত্মক। প্লেট ঋণাত্মক হলে ঐ নিঃসৃত আধানকে বিকর্ষণ করে ফলে বর্তনীতে কোনো তড়িৎপ্রবাহ থাকে না। এটাই এডিসন ক্রিয়া নামে পরিচিত।

প্রশ্ন-৯। স্ট্রিপ কাকে বলে?
উত্তরঃ পেরিস্কোপ তৈরি করতে একটি লম্বা সরু টিউবের দুই প্রান্তে সমতল দর্পণের দুটি ফালি স্থাপন করা হয়, এই ফালিকে স্ট্রিপ বলে।

প্রশ্ন-১০। ফালক্রাম কাকে বলে?
উত্তরঃ লিভারে যে শক্ত দণ্ড কোনো অবলম্বনের কিছুর ওপর ভর করে মুক্তভাবে ওঠানামা করে বা ঘোরে সেই দণ্ডটিকে ফালক্রাম বলে।

প্রশ্ন-১১। এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতির সুবিধা কী?
উত্তরঃ এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতির সুবিধা হলো পৃথিবীর সব দেশে পরিমাপের ক্ষেত্রে একই একক ব্যবহার করা। যেমন– দৈর্ঘ্যের একক মিটার, ভরের একক কিলোগ্রাম, সময়ের একক সেকেন্ড।

প্রশ্ন-১২। ক্ষেত্রফলের একক একটি যৌগিক একক কেন?
উত্তরঃ আমরা জানি, ক্ষেত্রফলের একক হলো কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থর এককের গুণফল। যেহেতু ক্ষেত্রফলের একক নির্ণয়ের জন্য দুটি এককের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই ক্ষেত্রফলের একক একটি যৌগিক একক।

প্রশ্ন-১৩। শিশিরাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তরঃ যে তাপমাত্রায় একটি নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ু তার ভেতরের জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয় তাকে ঐ বায়ুর শিশিরাঙ্ক বলে।

প্রশ্ন-১৪। জড়তার ভ্রামক কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট সরলরেখা থেকে কোনো দৃঢ় বস্তুর প্রত্যেকটি কণার লম্ব দূরত্বের বর্গ এবং এদের প্রত্যেকের ভরের গুণফলের সমষ্টিকে ঐ সরলরেখার সাপেক্ষে বস্তুর জড়তার ভ্রামক বলে।

প্রশ্ন-১৫। বস্তুর ভর ও ওজন বলতে কী বোঝায়? এদের একক কী?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর মধ্যে যতটুকু পদার্থ আছে তাকে তার ভর বলে। ভর হচ্ছে ধ্রুবক রাশি। ভর কখনও পরিবর্তিত হয় না। এর একক কিলোগ্রাম (kg)।
বস্তুকে পৃথিবী যে বলে তার কেন্দ্রের দিকে টানে তাকে ঐ বস্তুর ওজন বলে। বস্তুর ওজন স্থান ভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। বস্তুর ভর m হলে, বস্তুর ওজন W = mg। ওজনের একক নিউটন (N)।

প্রশ্ন-১৬। স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?
উত্তরঃ বল প্রয়োগে যদি কোনো বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়ের পরিবর্তন ঘটে অর্থাৎ বস্তু বিকৃত হয় তাহলে প্রযুক্ত বল সরিয়ে নিলে যে ধর্মের ফলে বিকৃত বস্তু আগের আকার ও আয়তন ফিরে পায় তাকে স্থিতিস্থাপকতা বলে। যে বস্তুর বাধা দেওয়ার ক্ষমতা বেশি তার স্থিতিস্থাপকতাও বেশি হবে। লোহা ও রাবারের মধ্যে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা লোহার বেশি তাই লোহা রাবারের চেয়ে বেশি স্থিতিস্থাপক।

প্রশ্ন-১৭। চোখের উপযোজন ক্ষমতা কী?
উত্তরঃ যেকোনো দূরত্বের বস্তু দেখার জন্য চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাই চোখের উপযোজন ক্ষমতা। উপযোজন ক্ষমতার কারণে চোখের লেন্সের আকৃতি প্রয়োজন মত বদলে যায়, ফলে ফোকাস দূরত্বের পরিবর্তন ঘটে। আর এই পরিবর্তনের কারণে লক্ষ্যবস্তুর যেকোনো অবস্থানের জন্য লেন্স থেকে একই দূরত্বে অর্থাৎ রেটিনার ওপর সৃষ্ট বিম্ব গঠিত হয় এবং আমরা তা দেখতে পাই।

প্রশ্ন-১৮। পীচ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বৃত্তাকার স্কেল একবার ঘুরালে তা রৈখিক স্কেল বরাবর যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ঐ যন্ত্রের পীচ বলে।

প্রশ্ন-১৯। দর্শানুভূতির স্থায়িত্বকাল কাকে বলে?
উত্তরঃ চোখের সম্মুখ থেকে লক্ষ্যবস্তুকে সরিয়ে নেয়া হলে সরিয়ে নেয়ার 0.1 সেকেন্ড পর্যন্ত এর প্রতিবিম্ব আমাদের মস্তিষ্কে থেকে যায়। এই সময়কে দর্শানুভূতির স্থায়িত্বকাল বলে।

প্রশ্ন-২০। লেন্সের প্রধান ফোকাস কাকে বলে?
উত্তরঃ লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল এবং নিকটবর্তী আলোক রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের উপর যে বিন্দুতে মিলিত হয় বা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, সেই বিন্দুকে লেন্সের প্রধান ফোকাস বলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *