রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-১৫)

প্রশ্ন-১। অণু কাকে বলে?
উত্তরঃ মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের ধর্মাবলি অক্ষুন্ন রেখে স্বাধীনভাবে বিরাজ করতে পারে, তাকে ঐ পদার্থের অণু বলে।

প্রশ্ন-২। কোলয়েড বা কোলয়েড দ্রবণ কি?
উত্তরঃ কোলয়েড হচ্ছে দ্রবণ ও অসমসত্ত্ব মিশ্রণের মধ্যবর্তী অবস্থা। যেমন– কুয়াশা, পেন, দুধ ইত্যাদি।
কোন তরল পদার্থে এক বা একাধিক কঠন পদার্থের কোন মিশ্রণকে খালি চোখে সমসত্ত্ব মিশ্রণ রূপে কিন্তু আলট্রামাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে অসমসত্ত্ব মিশ্রণরূপে দেখা যায়। এরূপ মিশ্রণকে কোলয়েড বা কোলয়েড দ্রবণ বলে।

প্রশ্ন-৩। প্রতীকের তাৎপর্য কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রতীক হতে সংশ্লিষ্ট মৌল সম্পর্কে যা কিছু জানা যায় তাকেই প্রতীকের তাৎপর্য বলে।

প্রশ্ন-৪। কীটনাশক কি?
উত্তরঃ কীটনাশক এক প্রকার বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, যা ফসলের জমিতে পোকামাকড় মেরে ফেলতে সহায়তা করে। এর অতিরিক্ত ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতি হয়।

প্রশ্ন-৫। বন উজাড়ের ফলে পরিবেশের কী কী ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ বন উজাড়ের ফলে পরিবেশের নিম্নলিখিত ক্ষতিগুলো হয়–
১. ভূমির ক্ষয় বেড়ে যায়।
২. বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের সমতা ঠিক থাকে না এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।
৩. প্রস্বেদন কমে যাওয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কমে যায়। ফলে বৃষ্টিপাত কমে যায়।
৪. গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
৫. সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায় ফলে স্থলভাগে কমে যায়।
৬. জমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্ন-৬। রাসায়নিক সাম্যাবস্থা একটি গতিশীল অবস্থা- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ যখন কোনো উভমুখী বিক্রিয়ার সম্মুখ বিক্রিয়ার গতিবেগ এবং বিপরীত বিক্রিয়ার গতিবেগ সমান হয়, তখন সে অবস্থাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে। সাম্যাবস্থায় সম্মুখ বিক্রিয়ার গতিবেগ ও বিপরীত বিক্রিয়ার গতিবেগ সমান হওয়ায় আপাত দৃষ্টিতে স্থির মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে বিক্রিয়া গতিশীল। সুতরাং সাম্যাবস্থা কোনো স্থিরাবস্থা নয় বরং গতিশীল অবস্থা।

প্রশ্ন-৭। পদার্থের প্রাথমিক ধারণা বর্ণনা করো।
উত্তরঃ আমরা আমাদের চারপাশে নানা রকম বস্তু দেখতে পাই। আবার অনেক জিনিস আছে যেগুলো দেখতে না পেলেও অনুভব করতে পারি। এগুলোর সবই পদার্থ। সকল পদার্থ দেখতে বিভিন্ন রকম হলেও সবই মূলত নির্দিষ্ট কিছু মূল কণিকা দ্বারা গঠিত। এই সকল মূল কণিকাকে পরমাণু বলা হয়।

প্রশ্ন-৮। তাম্রমল কি? তাম্রমলের সংকেত
উত্তরঃ তাম্রমল হলো কপারের লবণ। এটি সাধারণত কপার (II) কার্বনেট ও কপার (II) হাইড্রক্সাইডের মিশ্রণ। এর রাসায়নিক সংকেত হলো [CuCO
3
.Cu(OH)2]।

প্রশ্ন-৯। সমাণু কাকে বলে?
উত্তরঃ একই আণবিক সংকেত কিন্তু ভিন্ন গাঠনিক সংকেত বিশিষ্ট দুটি যৌগকে পরস্পরের সমাণু (Isomer) বলে।

প্রশ্ন-১০। সালফিউরিক এসিডের ভৌত ধর্ম লিখ।
উত্তরঃ বিশুদ্ধ সালফিউরিক এসিড ঘন তৈলাক্ত তরল পদার্থ, যা পানিতে সকল অনুপাতে মিশ্রণীয়। পানির সাথে মিশানোর সময় প্রচুর তাপ নির্গত হয়। সালফিউরিক এসিডে পানি যোগ করলে উত্তাপে পানি বিস্ফোরণ আকারে ফুটে এসিড ছিটকে শরীরে পড়তে পারে। এ কারণে সালফিউরিক এসিডকে লঘু করতে হলে সর্বদা নাড়ানো অবস্থায় পানিতে ফোঁটায় ফোঁটায় যোগ করতে হবে। মিশ্রণ বেশি গরম হলে অপেক্ষা করতে হবে। তা ঠান্ডা হলে আবার এসিড যোগ করতে হবে।

প্রশ্ন-১১। ক্যালিচি বা ক্যালিক কাকে বলে?
উত্তরঃ অবিশুদ্ধ চিলি সল্টপিটার বা চিলির প্রাকৃতিক সোরাকে ক্যালিচি বা ক্যালিক বলে। এতে সোডিয়াম আয়োডেট ও সোডিয়াম নাইট্রেট থাকে।

প্রশ্ন-১২। জারণ সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো যৌগ বা আয়ন সৃষ্টির সময় বিভিন্ন পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন আদান-প্রদানের ফলে সংশ্লিষ্ট পরমাণুতে সৃষ্ট ধনাত্মক বা ঋণাত্মক তড়িৎ চার্জের সংখ্যাকে ঐ মৌল বা মূলকের জারণ সংখ্যা বলে।

প্রশ্ন-১৩। Absorbance কি?
উত্তরঃ কোনো দ্রবণে আগমনকারী রেডিয়েশনের তীব্রতা এবং দ্রবণের মধ্যে দিয়ে অতিক্রমকারী রেডিয়েশনের তীব্রতার অনুপাতের লগারিদমকে ঐ দ্রবণের Absorbance বলে।

প্রশ্ন-১৪। ডেটলের প্রধান উপাদান কি? ডেটল কি কাজে ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ ডেটলের প্রধান উপাদান হল ট্রাইক্লোফেনল। ডেটলের ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো–
১. পানির সাথে মিশিয়ে কাটা, ছেঁড়া, কীটদ্রষ্ট স্থানে লাগাতে হয়।
২. গৃহস্থালি ধোয়া মোছার কাজে।
৩. প্রসূতি ও রোগীর ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় বিছানাপত্র, বাসনকোসন, ঘরের মেঝে, গোসলখানা ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখতে ডেটল ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন-১৫। ব্ল্যাঞ্চিং কি?
উত্তরঃ ফুটন্ত পানিতে বা সদ্য তৈরি করা স্টিমে খাদ্যের টুকরাগুলো ৫–১০ মি. তাপ দিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াই হলো ব্ল্যাঞ্চিং। এটি একটি রান্না প্রক্রিয়া। প্রক্রিয়াটির তিনটি স্তর রয়েছে: প্রিহিটিং, ব্ল্যাঞ্চিং এবং শীতলীকরণ।

প্রশ্ন-১৬। হ্যাজার্ড প্রতীক কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো রাসায়নিক পদার্থ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা বুঝানোর জন্য বোতলের গায়ে যে প্রতীক ব্যবহৃত হয় তাকে হ্যাজার্ড প্রতীক বলে।

প্রশ্ন-১৭। পারমাণবিক চুল্লি কি?
উত্তরঃ যে চুল্লিতে নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ায় উদ্ভূত শক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাকে পারমাণবিক চুল্লি বলে। যেমন : লাইট ওয়াটার চুল্লি, হেভি ওয়াটার চুল্লি ও ব্রিডার চুল্লি অন্যতম।

প্রশ্ন-১৮। বিরঞ্জক কি? বিরঞ্জকের উদাহরণ
উত্তরঃ যে সকল পদার্থ বায়ু বা পানির উপস্থিতিতে রঙিন বস্তুকে বর্ণহীন করতে পারে তাকে বিরঞ্জক বলে। যেমন : ব্লিচিং পাউডার, সালফার ডাই অক্সাইড (SO₂) ইত্যাদি।

প্রশ্ন-১৯। কঠিন খনিজ কি? কঠিন খনিজের উদাহরণ
উত্তরঃ কঠিন অবস্থায় যে খনিজ পাওয়া যায় তাই কঠিন খনিজ (Solid minerals)। যেমন : ম্যাগনেটাইট, বক্সাইট, সালফার বা গন্ধক ইত্যাদি।

প্রশ্ন-২০। ফার্মেন্টেশন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় শ্বেতসার জাতীয় শস্য দানা যেমন : আলু, ভুট্টা, ইক্ষু প্রভৃতি থেকে অ্যালকোহল (ইথানল) তৈরি করা হয় তাকে গাঁজন বা ফার্মেন্টেশন (Fermentation) বলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *