পদার্থবিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২০)
প্রশ্ন-১। সরল চলন বা সরল রৈখিক গতি কাকে বলে?
উত্তরঃ যে চলন গতি সরলরৈখিক পথে ঘটে তাকে সরল চলন বা সরল রৈখিক গতি বলে। যেমন, পতনশীল বৃষ্টির ফোঁটার গতি ও সোজা লাইনে ট্রেনের গতি প্রভৃতি সরল চলন গতির উদাহরণ।
প্রশ্ন-২। বক্র গতি কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তুর গতির পথ যদি একই পথ না হয়ে আঁকাবাঁকা পথ হয় তবে বস্তুটির গতিকে বক্র গতি বলে।
প্রশ্ন-৩। অনুভূমিক পাল্লা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তুকণা তির্যকভাবে নিক্ষেপ করা হলে বস্তুকণাটি অনুভূমিকভাবে যে দূরত্ব অতক্রম করে, তাকে অনুভূমিক পাল্লা বলে।
প্রশ্ন-৪। সরল ছন্দিত স্পন্দন কী?
উত্তরঃ যে স্পন্দন গতির ক্ষেত্রে সময়ের সাথে সাথে কণা সমূহের কম্পনের বিস্তার হ্রাস পেতে থাকে তাই সরল ছন্দিত স্পন্দন।
প্রশ্ন-৫।শক্তি স্তর রৈখিক চিত্র কাকে বলে?
উত্তরঃ ইলেকট্রনের কক্ষপথ যত বড় হয়, ইলেকট্রনের শক্তিও তত বেশি হয়। ফলে শক্তিও তত উচ্চ হয়। পরমাণুতে ইলেকট্রনের বিভিন্ন কক্ষ পথের সাথে সংশিষ্ট শক্তিকে একটি রৈখিক চিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এই চিত্রকে শক্তি স্তর রৈখিক চিত্র বলে।
প্রশ্ন-৬। বাষ্পচাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন তরল পদার্থকে একটি আবদ্ধ পাত্রে রেখে দিলে বাষ্পায়ন প্রক্রিয়ায় ক্রমশ বাষ্পীভূত হয়। বাষ্প অণুগুলি পরস্পরের সাথে এবং পাত্রের দেয়ালের সাথে ধাক্কা খায়। এতে দেয়ালে চাপ পড়ে। এ চাপকে বাষ্পচাপ বলে।
প্রশ্ন-৭। সমপ্রবাহ কাকে বলে?
উত্তরঃ তড়িৎ প্রবাহ যদি সর্বদা একই দিকে প্রবাহিত হয় বা সময়ের সাথে যদি তড়িৎ প্রবাহের দিকের কোনো পরিবর্তন না হয় তাহলে সেই প্রবাহকে সমপ্রবাহ বলে। তড়িৎ কোষ থেকে আমরা সমপ্রবাহ পাই।
প্রশ্ন-৮। এক ওয়াট (1W) কাকে বলে?
উত্তরঃ এক সেকেন্ডে এক জুল (j) কাজ করার ক্ষমতাকে এক ওয়াট (W) বলে। অন্য কথায়, এক সেকেন্ডে এক নিউটন (1N) বল প্রয়োগ করে বলের দিকে প্রয়োগবিন্দুর এক মিটার (1m) সরণ ঘটানো গেলে সে ক্ষমতাকে এক ওয়াট (1W) বলে।
প্রশ্ন-৯। নমনীয় বস্তু কি?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করে তাকে বিকৃত করলে যদি বল অপসারণের পর বস্তুটি ঐ বিকৃত অবস্থা পুরোপুরি বজায় রাখে তাহলে বস্তুটিকে নমনীয় বস্তু বা পূর্ণ প্লাস্টিক বস্তু বলা হয়।
প্রশ্ন-১০। বিশুদ্ধ মেটাল কাকে বলে?
উত্তরঃ বিশুদ্ধ মেটাল বলতে ঐ সমস্ত ধাতুকে বােঝানাে হয় যাদের মধ্যে অন্য কোন সংকর উপাদান নেই এবং যার মধ্যে কতকগুলাে সুনির্দিষ্ট বিশেষ গুণ বিদ্যমান থাকে।
প্রশ্ন-১১। পানিসম বা তুল্য জলাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনাে বস্তুর তাপমাত্রা একক পরিমাণ (1°) বাড়াতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়ােজন হয়, সে তাপ দিয়ে যতটুকু পানির তাপমাত্রা এক ডিগ্রি (1°) পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায় তাকে ওই বস্তুর পানিসম বলে।
প্রশ্ন-১২। হল বিভব কি?
উত্তরঃ কোন তড়িৎবাহী পরিবাহককে চৌম্বক ক্ষেত্রে স্থাপন করলে তড়িৎ প্রবাহ ও চৌম্বকক্ষেত্র উভয়ের সাথে লম্ব বরাবর যে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয় তথা ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় তাই হল বিভব।
প্রশ্ন-১৩। স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?
উত্তরঃ বল প্রয়োগে যদি কোনো বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়ের পরিবর্তন ঘটে, তাহলে বস্তুর যে ধর্মের জন্য প্রযুক্ত বল সরিয়ে নেওয়ার পর বস্তুটি তার আগের অবস্থা ফিরে পায়, তাকে স্থিতিস্থাপকতা বলে।
প্রশ্ন-১৪। প্রতিফলক দূরবীক্ষণের সুবিধা কি?
উত্তরঃ প্রতিফলক দূরবীক্ষণের সুবিধাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো–
- লক্ষ্যবস্তু থেকে বেশি পরিমাণ আলাে পাওয়ার জন্য দূরবীক্ষণ যন্ত্রে বড় উম্মেষের অভিলক্ষ্য ব্যবহার করতে হয়। প্রতিসারক দূরবীক্ষণের অভিলক্ষ্যে ব্যবহৃত বড় উম্মেষের লেন্স বেশি পরিমাণ আলােকরশ্মি শােষণ করে বলে প্রতিবিম্বের ঔজ্জ্বল্য হ্রাস পায়। অপরদিকে, প্রতিফলক দূরবীক্ষণের অভিলক্ষ্যের বড় উম্মেষের অবতল দর্পণ আলাে শােষণ করে না বলে প্রতিবিম্ব বেশি উজ্জ্বল হয়।
- এই যন্ত্রের প্রতিবিম্ব রঙিন ত্রুটি ও গােলীয় ত্রুটি মুক্ত হওয়ায় তা অনেক বেশি স্পষ্ট হয়।
প্রশ্ন-১৫। পরবশ কম্পন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর ওপর আরোপিত পর্যাবৃত্ত স্পন্দনের কম্পাঙ্ক বস্তুর স্বাভাবিক কম্পনের কম্পাঙ্কের চেয়ে ভিন্নতর হলে বস্তুটি প্রথমে অনিয়মিতভাবে কম্পিত হয় পরে আরোপিত কম্পনের কম্পাঙ্কে কম্পিত হতে থাকে। এই ধরনের কম্পনকে পরবশ কম্পন বলে।
প্রশ্ন-১৬। সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্বের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্বের ক্ষেত্রে সমতল দর্পণ থেকে বস্তুর দূরত্ব যত, দর্পণ থেকে প্রতিবিম্বের দূরত্বও তত। প্রতিবিম্বের আকার লক্ষবস্তুর আকারের সমান হয়। প্রতিবিম্ব অবাস্তব এবং সোজা হয়।
প্রশ্ন-১৭। নিয়ন্ত্রিত বিভাজন বা নিউক্লিয় রিঅ্যাকটর কাকে বলে?
উত্তরঃ নিউক্লিয় বিভাজন থেকে উৎপন্ন তাপশক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য এমন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, যাতে অতি অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়ে সমগ্র প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় এবং যাতে দীর্ঘ সময় ধরে সমহারে শক্তির সরবরাহ পাওয়া যায়। একে নিয়ন্ত্রিত বিভাজন বা নিউক্লিয় রিঅ্যাকটর বলা হয়।
প্রশ্ন-১৮। তাপগতীয় প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনাে সিস্টেম বা ব্যবস্থায় যে পরিবর্তনের কারণে তাপগতীয় স্থানাঙ্কের পরিবর্তন হয়, সে পরিবর্তনকে তাপগতীয় প্রক্রিয়া বলে।
প্রশ্ন-১৯। হিমায়ন পদ্ধতি বা রেফ্রিজারেশন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পদ্ধতির সাহায্যে কোনাে বস্তু বা স্থান শীতল করে এর শীতলতা বজায় রাখা যায়, তাকে হিমায়ন পদ্ধতি বা রেফ্রিজারেশন বলে। হিমায়ন প্রক্রিয়ায় নিম্ন তাপমাত্রা হতে তাপ শােষণ করে উচ্চ তাপমাত্রায় তাপ স্থানান্তর করে।
প্রশ্ন-২০। আলোক নল কি?
উত্তরঃ একগুচ্ছ অপটিক্যাল ফাইবারকে আলোক নল বলে। চিকিৎসকরা মানবদেহের ভেতরের কোনো অংশ দেখার জন্য এরূপ আলোক নল ব্যবহার করেন। এন্ডোসকপির সাহায্যে শরীরের ভেতরের অংশের ছবি তুলতে এ নল ব্যবহার করা হয়।