পড়াশোনা

রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২২)

1 min read

প্রশ্ন-১। গ্লিসারিন কি কাজে লাগে?
উত্তরঃ গ্লিসারিন যেসব কাজে সেগুলো নিচে দেওয়া হলো–
১. ফল সংরক্ষণে, ছাপার কালি ও জুতার রং তৈরিতে;
২. ঔষধ ও তামাক শিল্পে, মিষ্টিকারকরূপে;
৩. প্রসাধণী তৈরিতে;
৪. নাইট্রোগ্লিসারিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-২। জৈব এসিডের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য কী কী?
উত্তরঃ জৈব এসিডের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হলো–
১. এর জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে।
২. ক্ষারের সাথে বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
৩. জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সিল আয়ন (H+) দান করে।
৪. এরা কার্বনেট যৌগের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন-৩। আমিষকে জৈব যৌগ বলা হয় কেন?
উত্তরঃ আমিষ সাধারণত কার্বন ও হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত। কার্বন ও হাইড্রোজেন যুক্ত যৌগকে প্রধানত জৈব যৌগ বলা হয়। যেহেতু আমিষ কার্বন ও হাইড্রোজেন দিয়ে গঠিত তাই আমিষকে জৈব যৌগ বলা হয়।

প্রশ্ন-৪। অ্যালকেন এর ভৌত ধর্ম কি কি?
উত্তরঃ অ্যালকেনের ভৌত ধর্ম হলো :
১. অ্যালকেনসমূহ বর্ণহীন ও প্রায় গন্ধহীন উদ্বায়ী যৌগ।
২. এরা পানিতে অদ্রবণীয়, তবে বিভিন্ন জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয়।
৩. তরল ও কঠিন অবস্থায় এরা পানি অপেক্ষা হালকা।

প্রশ্ন-৫। ব্লিচ কি?
উত্তরঃ ব্লিচ হলো মূলত ব্লিচিং পাউডার। এর সংকেত Ca(OCl)Cl। 40°C তাপমাত্রায় Ca(OH)₂ এর মধ্যে Cl2 গ্যাস চালনা করলে ব্লিচিং পাউডার উৎপন্ন হয়।

প্রশ্ন-৬। অ্যালকোহল কাকে বলে?
উত্তরঃ হাইড্রোকার্বনের অণু হতে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু হাইড্রক্সিল (–OH) মূলক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলে যে যৌগসমূহ উৎপন্ন হয়, তাদের অ্যালকোহল বলে।

প্রশ্ন-৭। আয়ােডিনকে তাপ দিলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় কেন?
উত্তরঃ যে সকল পদার্থ তাপ প্রয়ােগে সরাসরি কঠিন থেকে বায়বীয় পদার্থে পরিণত হয় তাদেরকে উদ্ধায়ী পদার্থ বলা হয়। আয়ােডিন হলাে একটি উদ্ধায়ী পদার্থ, তাই আয়ােডিনকে তাপ দিলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।

প্রশ্ন-৮। শীতলীকরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনাে পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থা থেকে কঠিন অবস্থায় রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে শীতলীকরণ বলে।

প্রশ্ন-৯। পাতন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনাে তরলকে তাপ প্রয়ােগে বাষ্পে পরিণত করে তাকে পুনরায় শীতলীকরণের মাধ্যমে তরলে পরিণত করার পদ্ধতিকে পাতন বলে। অর্থাৎ, পাতন = বাষ্পীভবন + ঘনীভবন।

প্রশ্ন-১০। গলনাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তরঃ স্বাভাবিক চাপে যে তাপমাত্রায় কোনাে কঠিন পদার্থ তরল অবস্থায় রূপান্তরিত হয় সেই তাপমাত্রাকে ঐ পদার্থের গলনাঙ্ক বলে। যেমনঃ NaCl এর গলনাঙ্ক 801°C।

প্রশ্ন-১১। কাঁচা আম টক কিন্তু পাকা আম মিষ্টি কেন?
উত্তরঃ কাঁচা আমে বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড থাকে। এসিড টক স্বাদ যুক্ত হওয়ায় কাঁচা আম টক হয়। আবার, আম পাকলে এই এসিডগুলাে গ্লুকোজ ও ফুক্টোজে পরিনত হয়। তাই আম পাকলে মিষ্টি হয়।

প্রশ্ন-১২। রসায়ন কাকে বলে?
উত্তরঃ বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থের গঠন, পদার্থের ধর্ম এবং পদার্থের পরিবর্তন নিয়ে আলােচনা করা হয় তাকে রসায়ন বলে।

প্রশ্ন-১৩। বিজ্ঞানী লুইসের মতে ‘এসিড ও ক্ষার’ কি?
উত্তরঃ এসিড ও ক্ষারের ইলেকট্রনীয় মতবাদের প্রবক্তা বিজ্ঞানী লুইস। তার মতবাদ অনুসারে যে যৌগ ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে এসিড বলে। আর যে যৌগ ইলেকট্রন বর্জন করে তাকে ক্ষার বলে।

প্রশ্ন-১৪। পিএইচ (pH) কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন দ্রবণের হাইড্রোজেন আয়নের (H+) মোলার ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদমকে ঐ দ্রবণের pH বলে। pH শব্দটি আজকাল অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। যেমন: মাটির pH, রক্তের pH, সাবান বা অন্য কোন প্রসাধনীর pH। এর সাহায্যে কোন কিছুর অম্লত্ব বা ক্ষারত্বের তীব্রতা মাপা যায়।

প্রশ্ন-১৫। গুণগত বিশ্লেষণ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পরীক্ষার সাহায্যে কোন যৌগ কী কী মৌল দ্বারা গঠিত বা কোন মিশ্রণে কী কী উপাদান থাকে অথবা কোন জৈব যৌগে কী কী মৌল বা কার্যকরী মূলক উপস্থিত তা জানা যায় অর্থাৎ কোন পদার্থের সংযুক্তি জানা যায় তাকে গুণগত বিশ্লেষণ বলে।

প্রশ্ন-১৬। টেস্টিং সল্ট কি?
উত্তরঃ টেস্টিং সল্টের রাসায়নিক নাম মনো সোডিয়াম গ্লুটামেট। এটি সোডিয়ামের একটি লবণ। রান্নায় বৈচিত্র্যময় স্বাদ আনতে এ লবণ ব্যবহার করা হয়। ফাস্ট ফুডের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার বেশি দেখা যায়। এটি সু-স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত নয়।

প্রশ্ন-১৭। চার্জের নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ এই মহাবিশ্বের মোট চার্জের (ধনাত্মক চার্জ ও ঋণাত্মক চার্জ) পরিমাণ সর্বদা ধ্রুব। অর্থাৎ চার্জের সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই। চার্জ কেবল এক বস্তু হতে অন্য বস্তুতে সঞ্চালিত হতে পারে। দুটি বস্তুর মধ্যে যখন চার্জের বিনিময় হয় তখন এক বস্তু যে পরিমাণ চার্জ হারায়, অপর বস্তু ঠিক সে পরিমাণ চার্জ লাভ করে৷ অর্থাৎ নতুন কোনো চার্জের সৃষ্টি হয় না বা চার্জের বিলুপ্তি ঘটে না। একেই চার্জের নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা বলে।

প্রশ্ন-১৮। বিকিরণ বা উজ্জ্বল বর্ণালি কাকে বলে?
উত্তরঃ উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তরে ফিরে আসার সময় আলোর বিকিরণ ঘটে। এ বিকিরিত রশ্মিকে স্পেক্ট্রামিটারে বিশ্লেষণ করলে উজ্জ্বল রেখার সমাহার পাওয়া যায়। একেই বিকিরণ বা উজ্জ্বল বর্ণালি (emission/light spectra) বলে।

প্রশ্ন-১৯। ইলেকট্রোপ্লেটিং কাকে বলে?
উত্তরঃ তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি অধিক সক্রিয় ধাতুর তৈরি জিনিসপত্রের উপর অন্য একটি কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ সৃষ্টি করাকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বলে।

প্রশ্ন-২০। অ্যাসেপসিস কি?
উত্তরঃ অ্যাসেপসিস হচ্ছে জীবাণু থেকে দূরে রেখে খাদ্যদ্রব্যকে সংরক্ষিত রাখার পদ্ধতি। অ্যাসেপসিস প্রক্রিয়ার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো প্যাকেটজাতকরণ। মোড়ক, কার্টুন বক্স, ব্যাগ, বোতল, ক্যান, কন্টেইনার ইত্যাদির মধ্যে খাদ্যদ্রব্যকে এমনভাবে প্যাকেট করা হয় যেন তা শুধু খাদ্যদ্রব্যকে কলুষিত বা দূষিত হওয়া থেকেই রক্ষা করবে না; বরং বায়ু নিরোধক হিসাবে খাদ্যদ্রব্যকে জীবাণুমুক্ত রাখবে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment