পড়াশোনা
1 min read

রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-৩৯)

প্রশ্ন-১। ড্রাই আইস কি?

উত্তরঃ কঠিন কার্বন ডাই-অক্সাইড হলো ড্রাই আইস। একে শুষ্ক বরফও বলা হয়। এটি দেখতে সাদা বরফের মতো বলে একে শুষ্ক বরফ বলা হয়। এটি বায়ুরোধক হিসাবে আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন-২। অণুর আকৃতি বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ অণুর আকৃতি বলতে অণুতে পরমাণুগুলো পারস্পরিক কিভাবে বিন্যস্ত থাকে তা বুঝায়। অণুতে কেন্দ্রীয় পরমাণুর চারিদিকে পরমাণুগুলো বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক বিন্যাসে বিন্যস্ত থাকার জন্য অণুর আকৃতির সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-৩। গাইগার মুলার কাউন্টার বা GM কাউন্টার কি?

উত্তরঃ গাইগার মুলার কাউন্টার বা জিএম (GM) কাউন্টার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় বিকিরণ ডিটেক্টর। এ কাউন্টার হাই গেইন অ্যামপ্লিফায়ার ছাড়াই আলফা, বিটা, গামা ও এক্সরে বিকিরণ শনাক্ত করতে পারে।

প্রশ্ন-৪। স্টেরিও রসায়ন কাকে বলে?

উত্তরঃ রসায়নের একটি বিশেষ শাখা যেখানে বস্তুর ধর্ম এদের ত্রিমাত্রিক গঠনের উপর আলোচিত হয় রসায়নের সে শাখাকে স্টেরিও রসায়ন বলে। স্টেরিও রসায়নের বিশেষ পঠিত বিষয় হলো স্টেরিও সমাণুতা।

প্রশ্ন-৫। বাতাসে শতকরা কত ভাগ নাইট্রোজেন বিদ্যমান?

উত্তরঃ বাতাসে শতকরা 78 ভাগ নাইট্রোজেন বিদ্যমান।

প্রশ্ন-৬। মৌলিক অণু কাকে বলে?

উত্তরঃ একই মৌলের দুই বা ততোধিক পরমাণু একসাথে যুক্ত হয়ে যে অণু গঠন করে তাকে মৌল বা মৌলিক অণু বলে। যেমন, নাইট্রোজেন (N) পরমাণু ও ক্লোরিন (Cl) পরমাণু একসাথে যুক্ত হয়ে নাইট্রোজেন (N2) ও ক্লোরিন (Cl2) মৌলিক অণু গঠন করে।

প্রশ্ন-৭। বেনজিনের ওজোনীকরণ করলে কী ঘটে? সমীকরণসহ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ জিংক গুঁড়ার উপস্থিতিতে সাধারণ তাপমাত্রায় বেনজিনের মধ্যে ওজোন গ্যাস চালনা করলে বেনজিন ট্রাইওজোনাইড গঠিত হয়। বেনজিন ট্রাইওজোনাইডকে আর্দ্রবিশ্লেষণ করলে গ্লাই অক্সাল ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড উৎপন্ন হয়। জারণধর্মী H2O2 জিংক গুঁড়ার সাথে বিক্রিয়া করে বিনষ্ট হয়।

এ বিক্রিয়ায় জিংক ব্যবহার না করলে জারণধর্মী H2O2 গ্লাইঅক্সালকে জৈব এসিডে জারিত করে।

 

প্রশ্ন-৮। ফল পাকানোতে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব বর্ণনা করো।

উত্তরঃ কৃত্রিমভাবে ফল পাকাতে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন— ইথিলিন গ্যাস, ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ইথোফেন প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। ফল পাকাতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থের নানা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এটি চোখ, ত্বক, ফুসফুস ও মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। এর প্রভাবে অক্সিজেন সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফল পাকাতে ব্যবহৃত শিল্পগ্রেডের CaC2 এ বিষাক্ত আর্সেনিক এবং ফসফরাস থাকে যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

 

প্রশ্ন-৯। অ্যাক্টিভেটর কি?
উত্তরঃ অ্যাক্টিভেটর হল জৈব ও রাসায়নিক দ্রব্যের সংমিশ্রণে তৈরি এক ধরনের পচনশীল দ্রব্য, যা আবর্জনার স্তূপে ব্যবহার করলে স্তূপের পচনক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। পচনকারী ছত্রাক, শুকনো গোবর, ইউরিয়া, টিএসপিসহ অন্যান্য সার, পাতাপঁচা মাটি ইত্যাদি মিশিয়ে অ্যাক্টিভেটর তৈরি করা হয়। অ্যাক্টিভেটর ব্যবহার করে কম্পোস্ট তৈরি করলে তাকে অ্যাক্টিভেটর কম্পোস্ট বলে।

প্রশ্ন-১০। কিলেটস যৌগ বা চিলেট যৌগ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সমস্ত লিগ্যান্ড তার অণুস্হিত বিভিন্ন পরমাণুর একাধিক ইলেকট্রন যুগল সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় পরমাণুর সাথে একাধিক সন্নিবেশ বন্ধন গঠন করে তাদেরকে কিলেটস যৌগ বা চিলেট যৌগ বলে। যেমনঃ ইথিলিন ডাই অ্যামিন (NH₂-CH₂-CH₂-NH₂); EDTA ইত্যাদি।

প্রশ্ন-১১। লঘু এসিডের লিটমাস পরীক্ষা বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ লঘু এসিডে ভেজা নীল লিটমাস কাগজ ডুবালে তা লাল হয়ে যায়। এটিই লঘু এসিডের লিটমাস পরীক্ষা। লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডে (HCl) ভ্রাম্যমাণ H+ আয়ন অধিক থাকায়, লঘু HCl এ নীল লিটমাস কাগজ ডুবালে এটি লাল হয়ে যায়।

প্রশ্ন-১২। গ্যাসের ক্ষেত্রে দু’টি আপেক্ষিক তাপ থাকে কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ গ্যাসের ক্ষেত্রে তাপ প্রয়ােগ করা হলে উষ্ণতার পরিবর্তনের সাথে সাথে গ্যাসের চাপ অথবা আয়তন অথবা উভয়ই পরিবর্তিত হয়। তাই কোনাে নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের তাপমাত্রা একই পরিমাণ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়ােজনীয় তাপের পরিমাণও বিভিন্ন হয়। সেজন্য গ্যাসের ক্ষেত্রে দুই ধরনের আপেক্ষিক তাপ বিবেচনা করা হয়। যথাঃ

i. স্থির চাপে গ্যাসের মােলার আপেক্ষিক তাপ

ii. স্থির আয়তনে গ্যাসের মােলার আপেক্ষিক তাপ।

স্থির আয়তনের বেলায়, কাজ সম্পন্ন হয় না ফলে গ্যাসের তাপমাত্রা একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে অপেক্ষাকৃত কম তাপ লাগে। কিন্তু স্থির চাপের বেলায়, আয়তনের পরিবর্তন ঘটায় কাজ সম্পন্ন হয়, ফলে ঐ একই গ্যাসের তাপমাত্রা একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে অপেক্ষাকৃত বেশি তাপ লাগে।

প্রশ্ন-১৩। ওজোন গ্যাসের উৎস কী কী?

উত্তরঃ মোটরগাড়ির ইঞ্জিন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিভিন্ন ধরনের ধোঁয়াশা, প্রকৃতিতে বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে জীবাশ্ম জ্বালানির দহনের ফলে নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ উৎপন্ন হয়। মূলত এরা বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত হাইড্রোকার্বনসমূহ ও অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে ওজোন (O3) গ্যাসের সৃষ্টি করে থাকে।

প্রশ্ন-১৪। সোডা অ্যাস কি?

উত্তরঃ সোডিয়াম কার্বনকে (Na2CO3) সোডা অ্যাস বলে।

প্রশ্ন-১৫। ফ্যারাডের তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রথম সূত্র কী?

উত্তরঃ তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় যে কোনো তড়িৎদ্বারে সঞ্চিত বা দ্রবীভূত পদার্থের পরিমাণ প্রবাহিত বিদ্যুতের পরিমাণের সমানুপাতিক।

প্রশ্ন-১৬। কস্টিক সোডা কোথায় ব্যবহৃত হয়?

উত্তরঃ কস্টিক সোডার ব্যবহার নিচে তুলে ধরা হলো–

১. টয়লেট ক্লিনার প্রস্তুতিতে কস্টিক সোডা ব্যবহৃত হয়।

২. সাবান, কাগজ, রং, কৃত্রিম রেশম তৈরিতে কস্টিক সোডা ব্যবহৃত হয়।

৩. ডিটারজেন্ট প্রস্তুতিতে কস্টিক সোডা ব্যবহৃত হয়।

৪. সোডিয়াম ধাতু উৎপাদনে কস্টিক সোডা ব্যবহৃত হয়।

৫. পেট্রোলিয়াম শোধনে কস্টিক সোডা ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-১৭। ম্যাগনেসিয়াম, কপার ও জিঙ্ককে গরম পানিতে ডুবালে শুধু ম্যাগনেসিয়াম বিক্রিয়া দেয় কেন?

উত্তরঃ ম্যাগনেসিয়াম সক্রিয়তা সারণির উপরের দিকের মৌল। এর বিজারণ বিভবের মান অধিক ঋণাত্মক অর্থাৎ এটি সহজেই জারিত হয়ে যায়। কিন্তু কপারের অবস্থান H2 – এর নিচে এবং বিজারণ বিভব ধনাত্মক। অন্যদিকে জিঙ্কের জারণ বিভবের মান তুলনামূলকভাবে কম। তাই কপার এবং জিঙ্ক পানির H+ আয়নকে বিজারিত করে H2 গ্যাসে পরিণত করতে পারে না। কিন্তু ম্যাগনেসিয়াম H+ আয়নকে বিজারিত করে। তাই শুধুমাত্র ম্যাগনেসিয়ামই গরম পানির সাথে বিক্রিয়া করে।

প্রশ্ন-১৮। কৃষি জমিতে ছাই ও নাইট্রেট-ফসফেট সার ব্যবহার করা হয় কেন?

উত্তরঃ কৃষি জমিতে ছাই ও নাইট্রেট-ফসফেট সার ব্যবহার করা হয়। কারণ, নাইট্রেট সার সহজেই পানিতে দ্রবীভূত হয়ে মাটিতে মিশে থাকে এবং উদ্ভিদ মূল দ্বারা এসব নাইট্রেট লবণ শোষণ করে থাকে। নাইট্রোজেন সার উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য এবং ফসফরাস সার ফসলের মূল বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ছাই কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। এ কারণে কৃষি জমিতে ছাই ও নাইট্রেট-ফসফেট সার ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন-১৯। ম্যাগমা কী?

উত্তরঃ ভূ-অভ্যন্তরের উত্তপ্ত ও গলিত শিলাই হলো ম্যাগমা।

প্রশ্ন-২০। ক্লোরিন একটি জারক পদার্থ কেন?

উত্তরঃ যেসব পদার্থ অন্য পদার্থকে জারিত করে এবং সেই সাথে নিজে বিজারিত হয় তাকে জারক পদার্থ বলে।
ক্লোরিন একটি জারক পদার্থ কারণ ইহা মারকিউরাস ক্লোরাইডকে জারিত করে মারকিউরিক ক্লোরাইডে পরিণত করে।

Hg₂Cl₂ + Cl₂ → 2HgCl₂
Rate this post