HSC আইসিটি ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকের এই পর্বে উচ্চ মাধ্যমিক আইসিটি বিষয়ের ১ম অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো। আশা করি উপকারে আসবে।

প্রশ্ন-১। “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”– বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই হচ্ছে কানেক্টিভিটি। কানেক্টিভিটি বলতে ইন্টারনেট সংযোগকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ অনেকগুলো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমষ্টিতে গঠিত নেটওয়ার্ক যা বিশ্বের প্রতিটি গ্রাম বা শহরকে যুক্ত করে। তাই বলা যায় যে, বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই হলো কানেক্টিভিটি বা সংযুক্ততা।

প্রশ্ন-২। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে লেখো।

উত্তরঃ মানুষের চিন্তা ভাবনার অথবা বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতিটাকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র বা কম্পিউটারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাটাই হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এটির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে কম্পিউটার বা মেশিনকে মানুষের মতো জ্ঞান ও ক্ষমতা দান করা। রোবট হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সফল উদ্ভাবন।

প্রশ্ন-৩। প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়। যেমন: গাড়ি বা বিমান চালনা প্রশিক্ষণ, সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ, চিকিৎসকদের অপারেশন পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে জাদুঘরে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ হচ্ছে, ফলে আগত দর্শনার্থীরা তা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন এবং বাস্তব ধারনা পাচ্ছেন। নগর পরিকল্পনায় ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ ঘটিয়ে নগর উন্নয়ন রূপরেখা, নগর যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি সহজ ও আকর্ষনীয়ভাবে বর্ণনা করা যায়। ভার্চুয়াল পরিবেশ তৈরি করে বিভিন্ন বিনোদনের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রচলিত অধিকাংশ গেমসই এ মডেল অনুসরণ করে তৈরি।

প্রশ্ন-৪। বিশ্বগ্রামের উপাদানগুলোর নাম লিখ।

উত্তরঃ বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ :

i. হার্ডওয়্যার কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি

ii. প্রোগ্রামসমূহ বা সফটওয়্যার

iii. ব্যক্তিবর্গের সক্ষমতা

iv. ডেটা বা ইনফরমেশন

v. ইন্টারনেট সংযুক্ততা।

প্রশ্ন-৫। ড্রাইভিং শিখনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার নিরাপদ- ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞাননির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা কল্পবাস্তবতা বলা হয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ অনেকখানি সম্ভব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারী সম্পূর্ণ একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তথ্য আদান প্রদানকারী বিভিন্ন ডিভাইস সংবলিত চশমা, headsets, gloves ইত্যাদি পরিধান করে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে বাস্তবে উপলব্ধি করে। ফলে প্রশিক্ষনার্থীকে কোনো ধরণের শারীরিক অবস্থায় ঝুঁকি নিতে হয় না। যা প্রযুক্তির ব্যবহারের নিরাপদ প্রশিক্ষণ।

প্রশ্ন-৬। সাইবার ক্রাইম বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে যে সকল ক্রাইম সংঘটিত হয়, তাই সাইবার ক্রাইম। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাইবার ক্রাইম হলো— ১. ভাইরাস, ২. স্প্যামিং, ৩. হ্যাকিং, ৪. সাইবার আক্রমণ, ৫. সাইবার চুরি, ৬. সফটওয়্যার পাইরেসি ও ৭. প্লেজারিজম।

প্রশ্ন-৭। ই-কমার্স হচ্ছে বিশ্বগ্রাম ধারণা সংশ্লিষ্ট একটি সুবিধা- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ই-কমার্স (E-commerce) হচ্ছে বিশ্বগ্রামের একটি সুবিধা। বিশ্বগ্রামের ফলে মানুষ প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য করছে যা ভৌগলিক সীমানা অতিক্রম করে বিশ্বকে এক সুতোয় গেথে ফেলেছে। তৈরি করেছে একটি বিশ্বমার্কেটের প্লাটফর্ম। যেখানে অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে পণ্য যাচাই-বাছায়ের কাজ করা যায়, অর্ডার সাবমিটসহ ক্রয়-বিক্রয় এবং লেনদেন করা যায়। যা বিশ্বগ্রাম ধারণার একটি সুবিধা প্রদান করে।

প্রশ্ন-৮। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতার প্রধান ইস্যুগুলো কী কী?

উত্তরঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতা কাজের পদ্ধতি, মূল্য ও জীবনযাত্রার সাথে সম্পর্কিত যা কোনো বিষয়, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না করে এবং সঠিক মূল্যবোধ ও বিশ্বাস বজায় রেখে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তথ্য ব্যবস্থায় নৈতিকতার সাথে জড়িত প্রধান ইস্যুগুলো হলো— ১. প্রাইভেসি, ২. ব্যবহার, ৩. অ্যাকসেস, ৪. স্টোরেজ ও ৫ , সঠিকতা।

প্রশ্ন-৯। স্প্যামিং (Spamming) বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ অনাকাঙ্ক্ষিত বাল্ক মেসেজসমূহ ব্যাপকভাবে প্রেরণে ইলেকট্রনিক মেসেজিং সিস্টেমসমূহের ব্যবহার হলো স্প্যাম তথা স্প্যামিং। এর মাধ্যমে একাধিক মেইলিং লিস্ট, পৃথক পৃথক ব্যক্তি বা নিউজগ্রুপগুলোতে অনাকাঙ্ক্ষিত মেসেজসমূহ প্রেরণ করা হয়ে থাকে। এসব মেসেজগুলো প্রায় সময়ই বাণিজ্যিক ধাঁচের হয়। এগুলোকে জাঙ্ক মেইল নামেও অভিহিত করা হয়। বিজ্ঞাপনের মোড়কে স্প্যামগুলো অনেক সময়েই আইডেন্টি থেফট বা অন্য কোনো ধরনের ইন্টারনেট জালিয়াতি উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়ে থাকে।

প্রশ্ন-১০। যে প্রযুক্তি ঝুঁকিপূর্ণ কাজকে সহজ করেছে তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ যে প্রযুক্তি ঝুকিপূর্ণ কাজকে সহজ করেছে তা হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা ত্রিমাত্রিক বিশ্ব সৃষ্টি করে এবং যার দৃশ্যমানতা বাহক জীবন্ত। প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী যোগান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা বলে। যেকোনো মানুষ বাস্তবে নয় ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে অবাস্তব জিনিসের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে যেকোনো দৃশ্য দেখা ও শোনা যায়। হাতের সাথে সংযুক্ত গ্লোবস দ্বারা প্রয়োজনীয় কোন কমান্ড বা নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সঙ্গে প্রয়োজনীয় দৃশ্যের অবতারণা এবং কোন নির্দিষ্ট কাজের নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ব্যবহারকারীকে অনুভবের এক অন্য পৃথিবীতে নিয়ে যায়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *