দীর্ঘকাল হল এমন একটি সময় যখন নির্দিষ্ট প্রযুক্তি সাপেক্ষে সকল উপকরণই পরিবর্তনযোগ্য। এ সময়ে ফার্ম বা শিল্প উৎপাদনে নিয়োজিত যে কোন উপকরণের পরিমাণ বাড়াতে বা কমাতে পারে। দীর্ঘকালে একটি ফার্ম উৎপাদনের যেমন পরিবর্তন করতে পারে, তেমনি উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য সকল উপকরণের পরিবর্তনও করতে পারে। অর্থাৎ, এ সময়ে সমস্ত উপকরণ পরিবর্তনশীল হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে যা কিছুই পরিবর্তিত হোক, তা হতে হবে দেয় উৎপাদন অপেক্ষকের প্রেক্ষিতে। অর্থাৎ, প্রদত্ত প্রযুক্তির ভিত্তিতে। বাস্তবে গবেষকরা বারো মাসের বেশি যে কোন সময়কে দীর্ঘকাল হিসেবে বিবেচনা করেন। দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখা একটি এনভেলপ রেখা এনভেলপ বলতে কোনকিছুর ভিত্তি বুঝায়। অর্থাৎ, একাধিক উপাদানকে যদি অন্য একটি উপাদান ভিত্তি হিসেবে ধরে রাখে বা সমর্থন দেয় তবে শেষোক্ত উপাদানকে পূর্বের উপাদানের বা উপাদানগুলোর এনভেলপ বলা যায়। দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখাকে এনভেলপ রেখা বলা হয়। দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখার সব বিন্দু স্বল্পকালীন গড় ব্যয় রেখার সর্বনিম্ন বিন্দুতে স্পর্শক নয়। যখন দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখা নিচের দিকে নামে, তখন তা স্বল্পকালীন ব্যয় রেখায় হ্রাসমান অংশে স্পর্শ করে। যেমনঃ (b) চিত্রে SAC1 রেখার A বিন্দুতে LAC স্পর্শ করেছে। অপরদিকে LAC রেখা যখন ঊর্ধ্বগামী তখন তা SAC3 এর ঊর্ধ্বগামী অংশে Fতে স্পর্শ করে। (b) চিত্রে LAC রেখার উপরে একাধিক SAC রেখা অবস্থান করে। অর্থাৎ, LAC রেখা বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি গড় ব্যয় রেখাগুলোর স্পর্শক হিসেবে কাজ করছে। মোটকথা, অনেকগুলো স্বল্পমেয়াদি গড় ব্যয় রেখার উপর ভিত্তি করে দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখা অঙ্কন করা হয়। তাই দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখাকে স্বল্পকালীন গড় ব্যয় রেখাগুলোর এনভেলপ বলা হয়। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, দীর্ঘকালীন গড় ব্যয় রেখা হচ্ছে স্বল্পকালীন গড় ব্যয় রেখাসমূহের স্পর্শকের সঞ্চার পথ। যা দীর্ঘমেয়াদি কাম্য উৎপাদন স্তর নির্দেশ করে।