আহ্নিক গতি কাকে বলে? আহ্নিক গতির ফলাফল।
পৃথিবীর নিজ অক্ষে বা মেরু রেখায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তনের গতিকে আহ্নিক গতি বলে।
পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ কত?
পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ সর্বত্র সমান নয়। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ সবচেয়ে বেশি। যেমন- ঘন্টায় ১৬১০ কিলোমিটারের বেশি। আবার নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে বা দক্ষণে এই গতিবেগ ক্রমশ কমতে থাকে৷ পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে এ গতিবেগ শূন্যের কাছাকাছি।
আহ্নিক গতির ফলাফল
আহ্নিক গতির ফলাফল নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :
১। দিবা-রাত্রি সংঘটন : আহ্নিক গতির ফলে দিন ও রাত হয়। পৃথিবীর নিজস্ব কোন আলো নেই। সূর্যের আলোতে পৃথিবী আলোকিত হয়। পৃথিবী গোলাকার বলে সূর্যের আলো একই সময়ে ভূপৃষ্ঠের সকল অংশে পড়ে না। আবর্তনের সময় যে অংশে আলো পড়ে সেখানে দিন এবং যে অংশ অন্ধকারে থাকে সেখানে রাত হয়।
- পরীক্ষা : একটি অন্ধকার টেবিলের ওপর জ্বলন্ত মোমবাতিকে সূর্য এবং ভূগোলককে পৃথিবী ধরে জ্বলন্ত মোমবাতির সামনে ভূগোলকটিকে ঘুরালে দেখা যাবে বাতির সম্মুখের অংশ আলোকিত এবং তার বিপরীত অংশ অন্ধকার থাকে। আলোকিত অংশ দিন ও অন্ধকার অংশে রাত হয়। পৃথিবীর আলোকিত ও অন্ধকার অংশের মধ্যবর্তী বৃত্তাকার অংশকে ছায়াবৃত্ত বলে।
২। বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রের স্রোতের ওপর প্রভাব : আহ্নিক গতি সমুদ্রস্রোত ও বায়ুপ্রবাহের ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। পৃথিবীর পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আবর্তনের জন্য সমুদ্রস্রোত ও বায়ু প্রবাহ সোজা উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে ফেরেলের সূত্র অনুসারে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায।
৩। সময় গণনার সুবিধা : আহ্নিক গতির ফলে সময় গণনা করা যায়। পূর্ণ আবর্তনকে ২৪ ঘণ্টা ধরে ঘণ্টা, মিনিট ও সেকেন্ডে বিভক্ত করে সময় গণনা করা হয়।
৪। আকর্ষণ প্রভাব : আহ্নিক গতির জন্য পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের দিকে থাকে, চাঁদের আকর্ষণে সেখানের জলভাগে জোয়ার হয়।
৫। চির অন্ধকার ও আলো থেকে মুক্ত : আহ্নিক গতি না থাকলে পৃথিবীর অর্ধাংশ চিরকাল দিন ও বিপরীত অর্ধাংশ চিরকাল রাত থাকত।