সমভূমি কাকে বলে? সমভূমি কত প্রকার ও কি কি?
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচু মৃদু ঢাল বিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভূমিকে সমভূমি বলে। সমভূমির উপরিভাগ প্রায় সমান, ধীরে ধীরে ক্রমনিম্ন কিংবা সামান্য উঁচুনিচু ও তরঙ্গায়িত হয়ে থাকে।
উদাহরণ : নদী অববাহিকা ও সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে সমভূমি গড়ে ওঠে। ভারতের সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রক্ষ্মপুত্র সমভূমি, রাশিয়ার সাইবেরিয়া সমভূমি, মিশরের নীল নদ উপত্যকা, উত্তর আমেরিকার মিসিসিপি-মিসৌরি উপত্যকা প্রভৃতি পৃথিবী বিখ্যাত সমভূমি। সাইবেরিয়া সমভূমি পৃথিবীর বৃহত্তম সমভূমি।
সমভূমির বৈশিষ্ট্য
1) সমভূমির উচ্চতা বেশ কম, সমভূমির ঢালও বেশ কম।
2) সমভূমি সাধারণত পলি দ্বারা গঠিত হয়।
3) বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে সমভূমিগুলি অবস্থান করে।
4) ভূপৃষ্ঠের স্থলভাগের 50% -এর বেশি অংশ সমভূমির অন্তর্গত।
5) এশিয়া, ইউরােপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশে সমভূমির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, আফ্রিকা মহাদেশে সবচেয়ে কম।
সমভূমির শ্রেণিবিভাগ
অবস্থান ও গঠন প্রণালীর উপর ভিত্তি করে সমভূমিকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা–
(১) সঞ্চয়জাত সমভূমি,
(২) ক্ষয়জাত সমভূমি ও
(৩) ভূআলোড়নজনিত সমভূমি।
(১) সঞ্চয়জাত সমভূমি
ক্ষয়প্রাপ্ত বিভিন্ন পদার্থ নদী, বায়ু, হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা বাহিত ও সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠন করে, তাকে সঞ্চয়জাত সমভূমি বলে। সঞ্চয়জাত সমভূমিকে সাত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা–
i. প্লাবন সমভূমি : নদীতে বন্যার সৃষ্টি হলে উভয় কুল প্লাবিত হয়ে সংলগ্ন এলাকায় পলি সঞ্চিত হয়। এভাবে পলি সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠন করে, তাকে প্লাবন সমভূমি বলে। যেমন– গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মিসিসিপি প্রভৃতি নদীর সমভূমি প্লাবন সমভূমি।
ii. হিমবাহ সমভূমি : হিমবাহ দ্বারা বাহিত পাথর, কাঁকর, বালি, কাঁদা প্রভৃতি যে সমভূমি গঠন করে, তাকে হিমবাহ সমভূমি বলে। যেমন– কানাডার প্রেইরী সমভূমি।
iii. হৃদ সমভূমি : দীর্ঘকাল যাবৎ কোন হৃদের তলদেশে তলানি সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি করে, তাকে হৃদ সমভূমি বলে। যেমন– উত্তর আমেরিকার হৃদ অঞ্চলের সমভূমি।
শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “সমভূমি কাকে বলে? সমভূমি কত প্রকার ও কি কি?” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।