জুলের তাপীয় ক্রিয়া কাকে বলে?

পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে ব্যয়িত তড়িৎ শক্তির কিছু অংশ পরিবাহীর রোধ অতিক্রম করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই ব্যয়িত শক্তি পরিবাহীতে তাপশক্তিরূপে প্রকাশ পায় এবং পরিবাহী উত্তপ্ত হয়। এই প্রক্রিয়াকে তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ক্রিয়া বা জুলের তাপীয় ক্রিয়া (Joule heating) বলে।

জুলের তাপীয় ক্রিয়ার সূত্র (Joule’s laws for the generation of heat)

1841 খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত ইংরেজ বিজ্ঞানী জে. পি. জুল পরিবাহীর ভেতর বিদ্যুৎ প্রবাহ ও এর ফলে উৎপন্ন তাপের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল হতে তিনটি সূত্র বিবৃত করেন। জুলের নামানুসারে এদেরকে তাপ উৎপাদনের ক্ষেত্রে জুলের সূত্র বলা হয়। সূত্রগুলো নিম্নে বিবৃত হলো :

(১) বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রার সূত্র : বিদ্যুৎবাহী পরিবাহীর রোধ R ও বিদ্যুৎ প্রবাহ কাল t অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীতে বিদ্যুৎ প্রবাহের দরুন উদ্ভূত তাপ বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রার বর্গের সমানুপাতিক।

অর্থাৎ H ∝ i2, যদি R এবং t স্থির থাকে।

এ সূত্রের অর্থ— পরিবাহীতে প্রবাহমাত্রা দ্বিগুণ করলে উদ্ভূত তাপ প্রাথমিক তাপের চারগুণ হবে। প্রবাহমাত্রা অর্ধেক করলে উদ্ভূত তাপ প্রাথমিক তাপের এক-চতুর্থাংশ হবে।

(২) রোধের সূত্র : বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা এবং বিদ্যুৎ প্রবাহ কাল অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীতে বিদ্যুৎ প্রবাহের দরুন উদ্ভূত তাপ পরিবাহীর রোধের সমানুপাতিক।

অর্থাৎ H ∝ R, যদি i এবং t স্থির থাকে।

এ সূত্রের অর্থ— পরিবাহীর রোধ দ্বিগুণ বা অর্ধেক হলে উদ্ভূত ‘তাপ’ প্রাথমিক তাপের যথাক্রমে দ্বিগুণ বা অর্ধেক হবে।

(৩) সময়ের সূত্র : বিদ্যুৎবাহী পরিবাহীর রোধ এবং বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলে পরিবাহীতে বিদ্যুৎ প্রবাহের দরুন উদ্ভূত তাপ বিদ্যুৎ প্রবাহের কালের সমানুপাতিক।

অর্থাৎ H ∝ t, যদি i এবং R স্থির থাকে।

এ সূত্রের অর্থ — বিদ্যুৎ প্রবাহ কাল দ্বিগুণ বা চারগুণ বৃদ্ধি করলে উদ্ভূত তাপের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে তাপের দ্বিগুণ বা চারগুণ হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *