গ্রিন হাউস গ্যাস কি? গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাব। What is Green house in Bangla?

গ্রিন হাউস (Green house) : শীতপ্রধান দেশে তাপমাত্রা কম থাকায় সরাসরি প্রাকৃতিক পরিবেশে শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন সম্ভব হয় না। তাই শীতপ্রধান দেশে বিশেষ ধরনের কাচ নির্মিত ঘরে উষ্ণতা বৃদ্ধি করে শাক সবজি ও ফল-মূল উৎপাদন করা হয়। বিশেষভাবে নির্মিত কাচের ঘরে সূর্যালোক সহজে প্রবেশ করে ঘরের ভেতরের পরিবেশ ও মাটির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে সূর্যালোকের অবলোহিত রশ্মি (IR) যে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (400 – 750nm) নিয়ে কাচ ঘরে প্রবেশ করে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে যাবার সময় তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় (7750nm), ফলে কাচের দেওয়াল অতিক্রম করার সময় অবলোহিত রশ্মি বাধার সম্মুখীন হয় এবং পুনরায় ফিরে এসে কাচ ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কাচ ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করার কৌশল গ্রিন হাউস প্রভাব নামে পরিচিত।

সংজ্ঞা : বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত যে সব গ্যাসীয় পদার্থের আবরণ পৃথিবীকে আচ্ছাদনরূপে ঢেকে রেখে পৃথিবী পৃষ্ঠ হতে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধা দেয় এবং ভূ-পৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত রাখে তাদেরকে গ্রিন হাউস গ্যাস বলে।

গ্রিন হাউস প্রভাব (Green house effect) : পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের CO2, CH4, N2O, CFC, H2O(g) এবং অন্যান্য গ্যাস পৃথিবীকে গ্রিন হাউসের কাচের দেওয়ালের মত আচ্ছাদন করে রেখেছে। ফলে সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোক রশ্মি বিভিন্ন গ্যাস স্তর অতিক্রম করে ভূ-পৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে। অতঃপর নির্গত তাপশক্তি গ্যাসস্তরে শোষিত হয় এবং শোষিত তাপের একটি অংশ ভূ-পৃষ্ঠের দিকে ফেরত পাঠায়, বাধার সম্মুখীন হয়। এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা 15°C হয় যা সকল সজীব বস্তু বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত। উল্লেখ্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে গ্যাস স্তর না থাকলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা হতো –45°C, যার ফলে জীবজগতের কোনো অস্তিত্বই সম্ভব হত না।

কিন্তু বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে CO2, CH4, CFC, N2O, O3, H2O(g) প্রভৃতির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে, যার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারণে বায়ুমণ্ডলে উল্লিখিত গ্যাসগুলোর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলো গ্রিন হাউস গ্যাস নামে পরিচিত।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *